আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতিহাসেই প্রথমবার টাইমড আউটের ঘটনা ঘটলো। যদিও আউটটি আইনসিদ্ধ। কিন্তু এর আগে কাউকে এভাবে আউট হতে হয়নি। আর এই অভাবনীয় ঘটনা ঘটিয়ে ইতিহাসে নাম লিখিয়েছে বাংলাদেশ দল।
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ব্যাটিংয়ের জন্য প্রস্তুত না হওয়ায় আউট হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে লঙ্কান ব্যাটার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসকে। এই ঘটনায় ক্রিকেটবিশ্বে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। এভাবে আউট করা ক্রিকেটের চেতনা পরিপন্থী, এমন কথাও বলছেন অনেকে।
ইনিংস শেষের বিরতিতে শ্রীলঙ্কার ব্যাটার চারিথ আসালাঙ্কাবলেন, ‘আমার মতে এটা (ম্যাথিউসের টাইমড আউট) ক্রিকেটের চেতনার জন্য ভালো নয়। ‘ আসালাঙ্কা ছাড়াও ‘টাইমড আউট’ নিয়ে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ওপেনার মার্ক ওয়াহ, দুই সাবেক পাকিস্তানি অধিনায়ক ওয়াকার ইউনিস ও রমিজ রাজা, সাবেক প্রোটিয়া ফাস্ট বোলার ডেইল স্টেইনরাও।
ধারাভাষ্যকক্ষে থাকা সাবেক পাকিস্তানি অধিনায়ক ওয়াকার ইউনিস প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেন, ‘এটা ক্রিকেটের জন্য ভালো কিছু হলো না। এটা ক্রিকেটের চেতনার পরিপন্থী। ‘ আরেক ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজা বলেন, ‘এই আউটের পর নিশ্চয়ই শ্রীলঙ্কা আরও বেশি আবেগ ও রাগ নিয়ে লড়বে। ‘ আর সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ‘এক্স’-এ স্টেইন লিখেছেন, ‘এটা ভালো হলো না। ‘ আর একই মাধ্যমে মার্ক ওয়াহ লিখেছেন, ‘ক্রিকেটের আইন ও চেতনা বাদ দিন। আউট পরের ব্যাপার, একজন ন্যায্য মনের ক্রিকেটার কীভাবে এই আউটের জন্য আবেদন করতে পারে। ‘
ঘটনাটি ঘটে ম্যাচের ২৫তম ওভারে। প্রথম বলেই সাদিরা সামারাবিক্রমাকে বিদায় করেন সাকিব। নতুন ব্যাটার হিসেবে মাঠে নামেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। কিন্তু উইকেটে যাওয়ার পর তিনি দেখেন তার হেলমেটের স্ট্র্যাপ ছেঁড়া। সঙ্গে সঙ্গে ড্রেসিংরুমের দিকে নতুন হেলমেট পাঠানোর জন্য ইশারা করেন ম্যাথিউস। অতিরিক্ত খেলোয়াড়ের মাধ্যমে নতুন হেলমেট আনাও হয়। কিন্তু ততক্ষণে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে।
সবমিলিয়ে ক্রিজে এসে ব্যাটিংয়ের জন্য প্রস্তুত হতে পারায় ৫ মিনিট লেগে যায় ম্যাথুসের। বিষয়টি আম্পায়ারদের কাছে তুলে ধরে আউটের জন্য আপিল করেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব। ক্রিকেটের আইন অনুযায়ী, উইকেট পতনের পর কিংবা ব্যাটার রিটায়ার্ড হওয়ার পর নতুন ব্যাটারকে ৩ মিনিটের মধ্যে ব্যাটিংয়ের জন্য প্রস্তুত হতে হবে। নাহলে আউট হবেন। তবে বোলারের নামে যোগ হবে না উইকেট। অর্থাৎ উইকেটটি সাকিবের ঝুলিতে যুক্ত হয়নি।
তবে এ বিশ্বকাপের প্লেয়িং কন্ডিশন অনুযায়ী ব্যাটিংয়ের জন্য প্রস্তুত হতে ২ মিনিট সময় পান একজন ব্যাটার। ম্যাথিউস এই সময়ের মধ্যে প্রস্তুত হতে পারেননি। ফলে আইন অনুযায়ী ম্যাথিউসকে ‘টাইমড আউট’ দেন আম্পায়াররা। সিদ্ধান্তটি নিয়ে আম্পায়ারদের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলেন ম্যাথিউস। এমনকি তিনি সাকিবের সঙ্গেও কথা বলেন। কিন্তু সাকিব আপিল ফিরিয়ে না নেওয়ার সিদ্ধান্ত অটল থাকেন। ফলে হতাশা নিয়েই মাঠ ছেড়ে যান ম্যাথিউস।
তবে উল্টো চিত্রও আছে। অনেকেই ক্রিকেটের আইনের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছেন। একজন যেমন বলছেন, ‘এটা তো বৈধ আউট। এখানে চেতনার প্রসঙ্গ কেন আসবে?’ কেউ কেউ আবার সাকিবের তাৎক্ষণিক বুদ্ধিমত্তার প্রশংসাও করছেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।