নাটকীয় ও শ্বাসরূদ্ধকর জয়ে কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা। শেষ মুহূর্তে গোল করে ম্যাচ টাইব্রেকারে নিয়ে যায় ইকুয়েডর। পেনাল্টি শ্যূটআউটে মেসি মিস করলেও ত্রাতা হয়ে দাঁড়ান এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। তার বীরত্বে শিরোপা ধরে রাখার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেছে আলবিসেলেস্তে। হিউস্টনের এনআরজি স্টেডিয়ামে এদিন কি হয়নি? মেসির অ্যাসিস্টের পর ইকুয়েডরের পেনাল্টি মিস, তারপর শেষ মুহূর্তের গোলে ম্যাচ টাইব্রেকারে নিয়ে যাওয়া। সেখানে লিও মিস, আর সবশেষ মার্টিনেজের আরও এক মহাকাব্য।
শঙ্কা কাটিয়ে ইকুয়েডরের বিপক্ষে শেষ আটের ম্যাচে এলএমটেনকে নিয়েই নেমেছিল চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু নিজেদের খুঁজে পেতে সময় নিল ৩৫ মিনিট। পুরো ছন্দে না থাকা লিওর কর্ণার থেকে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন ডিফেন্ডার লিসান্দ্র মার্টিনেজ। শেষ মুহূর্তে জয় যখন আর্জেন্টিনার হাতছোঁয়া দূরত্বে। তখনই শুরু নাটকীয়তার। যোগ করা সময়ে রদ্রিগেজের হেডে সমতায় ফিরে ইকুয়েডর। নির্ধারিত সময়েই ম্যাচটা জিততে পারত ইকুয়েডর। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে পারত আর্জেন্টিনা। কিন্তু ফ্রি হেডেও তা কাজে লাগাত পারেননি জর্দি কাইসেদো।
অতিরিক্ত সময় না থাকায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। প্রথম শটে মিস করে বসেন মেসি। কিন্তু তাকে এদিনও আর কাঁদতে দেননি মার্টিনেজ। পরপর আটকে দেন ইকুয়েডরের প্রথম দুই শট। অধিনায়ক ভুল করলেও ভুল করেননি হুলিয়ান আলভারেজ, ম্যাক অ্যালিস্টার, গঞ্জালো মন্টিয়েল ও নিকোলাস ওতামেন্দি। সেমিফাইনালে ভেনেজুয়েলা কিংবা কানাডার বিপক্ষে খেলবে আর্জেন্টিনা।
এদিকে পেনাল্টিতে মেসির গোল মিসের ঘটনা এবারই প্রথম নয়। সবশেষ ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে তার স্পটকিক আটকে দেন পোল্যান্ডের গোলরক্ষক। দেড় বছর পর আজ আবার দেখা গেল। তবে বদলেছে ভেন্যু, বদলেছে টুর্নামেন্ট। হিউস্টনে ইকুয়েডরের বিপক্ষে এবার পেনাল্টি শুটআউটে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন এলএমটেন।
তাই ম্যাচ কোচ স্কালোনি যে মেসির পেনাল্টি মিস নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হবেন তা অনুমেয় ছিল, হয়েছেনও তাই। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে কোচ স্কালোনি বলেন, সে (মেসি) দলের বাকিদের মতোই খেলেছে। আমার একটা দল। দল যেহেতু ভালো খেলেছে, সেও ভালো খেলেছে। দল থেকে ব্যক্তির পারফরম্যান্সকে কখনোই আলাদা করে দেখি না।
অসুস্থতার কারণে গ্রুপপর্বে পেরুর বিপক্ষে বিশ্রাম দেয়া হয় মেসিকে। ৮ দিনের লম্বা বিরতির পর হিউস্টনে কোয়ার্টার ফাইনালে মাঠে নামেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। লম্বা বিরতি মেসির খেলায় কোনো প্রভাব মেসির ফেলেছে কিনা এ ব্যাপারে স্কালোনি বলেন, লিও দিনশেষে দারুণ খেলেছে। যখন আমাদের পায়ে বল ছিল, তখন তারা দারুণ পরিকল্পনা করেছে। দুই ডিফেন্ডার আক্রমণে এসেছিল। ম্যাচটা ছিল দাবার মতো। তার কাছে সাত দিন ছিল। কোনো রকম নিষ্ক্রিয় অবস্থা দেখা যায়নি তার মধ্যে।
প্রসঙ্গত, টাইব্রেকারে নিজের পেনাল্টি মিস করা নিয়ে মেসি ম্যাচ শেষে সাংবাদিকদের বলেন, আমার খুব রাগ হয়েছিল। মনে হয়েছিল যে আমি গোলটা করতে পারব। দিবু (মার্টিনেজ) ও (জেরোনিমা) রুলির সঙ্গে কথা বলেছিলাম। কয়েকটা পেনাল্টিও নিয়েছিলাম। অনুশীলন করিনি তবে কথা বলেছি তাদের সঙ্গে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।