জাতীয় দলের নির্বাচক পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার পর তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় হাবিবুল বাশার সুমন বলেছেন, ‘নো কমেন্টস।’ আর অব্যাহতি দেয়া প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুও খুব কম কথায় সেরেছেন নিজের প্রতিক্রিয়া। তার কথা, বোর্ড যা ভাল মনে করেছে, সেটাই করেছে। এ নিয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই।
দুই বাদ পড়া নির্বাচকের কেউ আনুষ্ঠানিকভাবে এরচেয়ে বেশি কিছু বলা থেকে বিরত থাকায় তাদের হতাশা, ক্ষোভ অপ্রকাশিতই থেকে গেছে। তাই বলে ভাববেন না যে, নান্নু ও সমুনের কোন হতাশা, ক্ষোভ নেই।
জানা গেছে, আপনজন ও খুব কাছের মানুষের কাছে প্রকাশ না করার শর্তে আরও কিছু কথা বলেছেন এই দু’জন। শোনা যাচ্ছে, মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর অভিযোগ, ‘তাকে সরানোর বিষয়টি সর্বসম্মত নয়। অর্থ্যাৎ পুরো বোর্ড মিলে তাকে বাদ দিয়ে গাজী আশরাফ হোসেন লিপুকে প্রধান নির্বাচক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা নয়। ’
নান্নু নাকি দাবি করেছেন যে, ‘কোন সুষ্ঠু প্রক্রিয়ায় প্রধান নির্বাচক পদে পরিবর্তন আনা হয়নি। একটি চক্র এবং এক-দু’জনার পরামর্শে সেটা করা হয়েছে। বিসিবির বেশির ভাগ পরিচালক সেটা গতকাল সোমবারের বোর্ড সভায় শুনেছেন। তার আগে তারা কিছুই জানতেন না। বিসিবির পরিচালকদের মধ্যে জাতীয দলের যে ৩ সাবেক অধিনায়ক পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের কেউ নাকি সোমবারের বোর্ড সভার আগ পর্যন্ত কিছুই জানতেন না। ’
নান্নুর অভিযোগের তীর বোর্ড পরিচালক ও বিসিবি ওয়ার্কিং কমিটি প্রধান এনায়েত হোসেন সিরাজের দিকেই তাক করা ছিল। তার দাবি, সিরাজ ভাইয়ের পরামর্শেই তাকে বাদ দেয়া হয়েছে। সেটা যে শুধুই অভিযোগ এবং ব্যাপারটা যে ভিত্তিহীন ও অমূলক; তা বলা যায় না। বাস্তবতা বলছে, তারও ভিত্তি আছে। খালেদ মাহমুদ সুজনের ঝাঁঝালো বক্তব্যেই মিলেছে তার সত্যতা।
একই কথা প্রতিধ্বনিত হয়েছে বিসিবির আরও ২ পরিচালকের মুখেও। এর মধ্যে বোর্ডের অন্যতম পরিচালক ও জাতীয় দল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস আলাপে কিছু কথার ভিড়ে বলে ফেলেছেন, ‘প্রধান নির্বাচক পদে নতুন কাউকে দায়িত্ব দেয়ার জন্য একজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। ’
জালাল জানান, এটা বোর্ড মিটিংয়ের ডিসিশন। আই কান্ট কমেন্ট। বাট প্রক্রিয়া যেটা হয়েছে, সেটা হলো একজনকে অ্যাসাইন্ট করা হয়েছিল টু নেগোশিয়েট ইট। ’
সেই একজন কে? তা অবশ্য জানাননি জালাল। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নান্নুর বিকল্প খোঁজার দায়িত্ব দিয়েছিলেন, বোর্ডের সবচেয়ে সিনিয়র ডিরেক্টর এনায়েত হোসেন সিরাজকে। সিরাজই গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর নাম প্রস্তাব করেন এবং তিনিই লিপুর সাথে কথা বলে তাকে প্রধান নির্বাচক হতে রাজি করান।
একই অভিযোগ নাইমুর রহমান দুর্জয়েরও। তিনিও জানিয়েছেন, ‘আমিও পুরো ব্যাপারে (প্রধান নির্বাচক পরিবর্তন ও নতুন নির্বাচক নিয়োগ) কিছুই জানি না। নান্নুর ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, ‘জাতীয় দলের আরেক সাবেক অধিনায়ক এবং বোর্ড পরিচালক আকরাম খানও না নান্নুকে জানিয়েছেন, তিনিও কিছুই জানতেন না। বোর্ড মিটিংয়ে বসে শুনেছেন। ’
এরপর নান্নুর অভিযোগকে অমূলক বলা কঠিন। জালাল ইউনুসের কথায় পরিষ্কার, প্রধান নির্বাচক পদে পরিবর্তন আনার চিন্তাটা বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপনের এবং তিনিই এনায়েত হোসেন সিরাজকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন, পুরো ব্যাপারটি আলাপ-আলোচনা পূর্বক চূড়ান্ত করার জন্য। ’
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।