প্রথম ম্যাচে পরাজয়ে এখন সিরিজ বাঁচানোর চ্যালেঞ্জ তামিম ব্রিগেডের। ঘরের মাঠে ২০১৬তে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ। এরপর নিজেদের মাঠে আর কোনো সিরিজে হারেনি টাইগাররা। ৭ বছর পর আবারো বাংলাদেশ সফরে এসেছে ইংল্যান্ড দল। এরই মধ্যে দলটি নিজেদের বদলে ফেলেছে দারুণভাবে। তাদের পাশে এখন ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ানের খেতাব। আর তারা বাংলাদেশ সফর শুরু করেছে চ্যাম্পিয়নদের মতোই। সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে টাইগারদের হারিয়েছে ৩ উইকেটে। আজ তাদের সামনে সিরিজ জয়ের হাতছানি। অন্যদিকে টাইগারদের সিরিজ বাঁচানোর লড়াই। আর তামিম ইকবালের দলের জন্য এই লড়াইয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দলের নড়বড়ে ব্যাটিং।
প্রথম ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে চরম ব্যাটিং ব্যর্থতায় স্কোর বোর্ডে মাত্র ২০৯ রান তোলে সবকটি উইকেট হারিয়ে। যা টপকাতে ৭ উইকেট হারালেও খুব বেশি বিপদে পড়তে হয়নি ইংলিশদের। ২০১৩ থেকে বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত খেলা ইংলিশ ক্রিকেটার ডেভিড মালান মিরপুরের কঠিন উইকেটে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দলকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে। বাংলাদেশের পক্ষে একমাত্র ফিফটি হাঁকান নাজমুল হোসেন শান্ত। তাই সেই ম্যাচ শেষে তার কন্ঠে ব্যাটিং নিয়ে ঝরে আক্ষেপ। তার মতে রানটা আরো বেশি হলেই জয় সম্ভব ছিল। এ নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘আমরা যে অবস্থায় ছিলাম, আরও অন্তত ৩০-৩৫ রান করতে পারতাম। উইকেট কঠিন ছিল, বিশেষ করে স্পিনের বিপক্ষে।
আমরা শুরুটা ভালো করিনি তবে মাঝের ওভারে ভালো জুটি হয়েছিল।’ বিশেষ করে নিজের ফিফটি ইনিংসের পর দায়িত্ব নেয়াটা খুব জরুরী ছিল বলেই মনে করেন শান্ত। কারণ তাদের ছুড়ে দেয়া ২১০ রানের লক্ষ্যে ডেভিড মালাণ পধ দেখিয়েছেন ঠান্ডা মাথায়। ফিফটির পর ধিরে ধিরে দলকে নিয়ে গেছেন জয়ের পথে। সেই সঙ্গে সমান তালে তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরিও। এ নিয়ে শান্ত নিজেই আক্ষেপ করে বলেন, ‘শেষ দিকে আবার আমরা টানা ৪ উইকেট হারাই। আমার মতে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমার মনে হয়েছে, এটি ২৫০ রানের উইকেট ছিল। আমরা সে পথেই ছিলাম। কিন্তু এরপর উইকেট হারিয়ে ফেলি। মাত্র একটা ম্যাচে রান করলাম। এখনই আমার বলা ঠিক হবে না যে, অনেক কিছু শিখে গেছি। কারণ আজকের ম্যাচেও অনেক ভুল ছিল আমার। আমি যদি ইনিংসটা বড় করতে পারতাম তাহলে হয়তো আমরা ২৪০-২৫০ রান করতে পারতাম।’ প্রশ্ন হচ্ছে দ্বিতীয় ম্যাচে টাইগার একাদশে পরিবর্তন আসবে কিনা তানিয়ে। ধারণা করা হচ্ছে প্রথম ম্যাচের একাশকেই সুযোগ দেয়া হবে। শুধু দায়িত্ব নিয়ে খেলবে হবে ব্যাটারদের। মিরপুরের উইকেটে ব্যাটিং কঠিন নিজেদের ঘরের মাঠ বলে কথা।
যেখানে ঢাকা লীগ ও বিপিএলের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে মালান সেঞ্চুর করতে পেরেছে সেখানে টাইগার ব্যাটাররা কেন পারবে না! যেখানে ২১০ রান তুলতে ইংল্যান্ডকে হারাতে হয়েছে ৭ উইকেট সেখানে লক্ষ্যটা বড় হলে সিরিজে এগিয়ে থাকতো টাইগাররা। তবে তবে এখনো সিরিজ বাঁচানোর পাশাপাশি জয়ের সুযোগ রয়েছে। তার জন্য তিন বিভাগেই ভালো খেলতে হবে, বিশেষ করে ব্যাটিং। অবশ্য এ জন্য নিজের অভিজ্ঞতাকেই মালানের মত কাজে লাগাতে হবে টাইগার ব্যাটারদের। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মালান নিজেই জানিয়েছেন কিভাবে তাকে বাংলাদেশে খেলার অভিজ্ঞা সেঞ্চুরি করদে সহযোগিতা করেছে। তিনি বলেন, ‘ভিন্ন ধরনের কন্ডিশনে খেলার সুযোগ যতটা মেলে, খেলা সমৃদ্ধ করার সুযোগ তত বেশি পাওয়া যায়।
আগে সাফল্য আসুক বা না আসুক, বিভিন্ন কন্ডিশনে খেলা শিখতে পারাটা দারুণ ব্যাপার। আমার কিছু অভিজ্ঞতা ছিল এখানে খেলার। ব্যাটিংয়ে শুরুর দিকে কাজটা এখানে সহজ নয়। কঠিন সময়ে নিজের প্রক্রিয়ার ওপর ভরসা রেখে পরের দিকে তা কাজে লাগাতে হয়।’ তাই প্রশ্ন থাকছে মালান পারলে নিজেদের মাঠে কেন পারবেনা তামিম-সাকিবরা! বাংলাদেশ একাদশে পরিবর্তনের তেমন কোন অভাস না থাকলেও একটি পরিবর্তনের কথা শোনাযাচ্ছিল। তবে হাথুরুসিংহে হয়তো প্রথম একাদশকে আরেকবার সুযোগ দেবেন নিজেদের সক্ষমতা প্রমাণ করার। আর যদি পরিবর্তন আসে সেখানে মোস্তাফিজের পরিবর্তে খেলতে পারেন হাসান মাহমুদ। আর ব্যাটিং বদল আসলে আফিফের পরিবের্ত একাদশে জায়গা হতে পারে তরুণ তৌহিদ হৃদয়ের। তাতে ইংলিশদের পরাজিত করে সিরিজে সমতা ফেরাতে পারলে ঘরের মাঠে আরো একটি সিরিজ জয়ের হাতছানি থাকবে তখন তামিমদের জন্য।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।