ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ডাগআউটে আসার পর সাদাপোশাকে ইংল্যান্ডের খেলার ধরণ খোলনলচে বদলে গেছে। ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণ টেস্টেও আগ্রাসী ক্রিকেটে প্রতিপক্ষকে বধের মন্ত্রে এই খেলা বিশ্বজুড়ে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে ‘বাজ বল’ হিসেবে। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে বাংলাদেশও আক্রমণাত্বক ক্রিকেট খেলার মানসিকতা নিয়ে নামবে।
চন্ডিকা হাথুরুসিংহে দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়ার পর দুই সিরিজে সাদা বলের দুই সংস্করণে আক্রমণাত্বক ক্রিকেট খেলতে দেখা গেছে সাকিব আল হাসানদের। শেষ টি-টোয়েন্টিতে হারার পরও সাকিব জানিয়েছিলেন ফল যাই আসুক তারা আক্রমণাত্বক মানসিকতা চালিয়ে যাবেন।
তবে টেস্ট আর টি-টোয়েন্টির মধ্যে পার্থক্য আকাশ-পাতাল। একটাতে ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিয়ে করতে হয় টিকে থাকার লড়াই। আরেকটিতে ধুম-ধাড়াক্কা মারের কোনো বিকল্প নেই, বল হজম করা যেখানে অপচয়। সম্প্রতি আগ্রাসী ক্রিকেট খেলা বাংলাদেশ কি টেস্টেও সেই মানসিকতা ধরে রাখবে?
টেস্টের আগের দিন সোমবার সংবাদ সম্মেলনে মেহেদি হাসান মিরাজ এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে ইঙ্গিত দিলেন সেটিরই। ‘বাজ বল’ সরাসরি উচ্চারণ না করলেও মিরাজ জানিয়েছেন আধুনিক ক্রিকেটে আক্রমণাত্ব খেলার কথা।
‘আধুনিক ক্রিকেটে সব সংস্করণেই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলা হচ্ছে। টেস্ট ক্রিকেটও কিন্তু এখন বিশ্বে যেমন চলছে, আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতেই খেলছে সবাই। আমরাও চেষ্টা করব অবশ্যই। সাদা বল থেকে লাল বলে আসব যেহেতু, ছোট ছোট যে কৌশলগত ব্যাপারগুলো আছে, সেগুলো তো বদলাতে হবেই। আর মানসিকতা একই থাকতে হবে। দিনশেষে রান করাটা গুরুত্বপূর্ণ—সাদা বল, লাল বলে কিছু যায় আসে না। আপনি রান করছেন কি না। একটা খেলোয়াড় রান করছে কি না, উইকেট পাচ্ছে কি না, সেটি গুরুত্বপূর্ণ।’
উইকেটের বিবেচনায় যদি আক্রমণাত্ব ক্রিকেট খেলা লাগে বাংলাদেশ তাই করবে, ‘আমরা যদি আক্রমণাত্মক খেলতে পারি, তাহলে তো ভালো। দিনশেষে রান করাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যদি ১০০ ওভারে ৩৫০-৪০০ রান করতে পারি, তাহলে তো ভালো। দলের জন্যও ভালো, খেলোয়াড়দের জন্যও। এটি উইকেটের ওপর নির্ভর করে। কেমন বল হচ্ছে সেটিও।’
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগামীকাল (মঙ্গলবার) আয়ারল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর এখন পর্যন্ত মাত্র তিন ম্যাচ খেলা আয়ারল্যান্ড বাংলাদেশের জন্য অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রতিপক্ষ। যদিও এই সংস্করণে বাংলাদেশও নরবড়ে। টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়া নতুন সদস্য আফগানিস্তানের বিপক্ষেও টেস্ট হেরেছিল স্বাগতিক শিবির।
আইরিশদের বিপক্ষে বাংলাদেশের লক্ষ্য একটাই থাকবে, সেটি হলো জয়, ‘দ্রুত মানিয়ে নেওয়া আমাদের কাজ। খুব তাড়াতাড়ি ভিন্ন সংস্করণে খেলতে হয়। সেই মানিয়ে নেওয়াটা পারি আমরা। আয়ারল্যান্ড হয়তো অভিজ্ঞতায় অনেক ম্যাচ খেলেনি, আমরা সে তুলনায় অভিজ্ঞ। চেষ্টা থাকবে ব্যবধান যাতে বড় থাকে। তবে জয় তো ১ রানেও হয়, প্রথম চেষ্টা থাকবে জেতা।’
আয়ারল্যান্ড এর আগে তিন ম্যাচ খেলে তিনটিতেই হেরেছে। সবশেষ টেস্ট খেলেছে ৪ বছর আগে, ২০১৯ সালে। অন্যদিকে বাংলাদেশের ঝুলিতে ১৩৬ টেস্টের অভিজ্ঞতা। টেস্ট ক্রিকেটে নবাগত এই দলের বিপক্ষে খেললেও বাংলাদেশ বড় দলের বিপক্ষে খেলার মানসিকতা নিয়েই নামবে।
‘আমরা সবাই সিরিয়াস। ভারতের সঙ্গে খেললে অনেক সিরিয়াস বা আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে কম ফোকাস তা তো নয়। হয়তো আত্মবিশ্বাস ওঠানামা করে। এটা মানুষের তো হয়, কখনো আত্মবিশ্বাস অনেক উঁচুতে থাকে, কখনো নিচে নামে। মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার। এমন দলের সঙ্গে খেলতে গেলে হয়তো কিছু কনফিউশন থাকে। তবে এমন দলের সঙ্গে ফোকাস বেশি থাকে’-বলছিলেন মিরাজ।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।