সোমবার থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে খেলবে বাংলাদেশ। আর মাত্র দুই দিন বাকি, তাই ক্রিকেট নিয়েই বেশি আলোচনা হওয়ার কথা। কিন্তু ক্রিকেটপ্রেমী দর্শকরা ভাগ হয়ে গেছেন দুই ভাগে। দলে রাখার পর সাকিব আল হাসানকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে না পারায় তিনি বাংলাদেশে আসেননি। তাকে বাদ দিয়ে দল ঘোষণা করতে হয়েছে নির্বাচকদের। এটা নিয়েই আপত্তি সাকিব ভক্তদের। অন্যদিকে সাকিব বিরোধীদের স্পষ্ট বার্তা, বাঁহাতি অলরাউন্ডারকে দেশের জার্সিতে কোনদিন দেখতে চান না তারা। মাঠের বাইরের এমন অবস্থায় ক্রিকেটারদের মাঠের ভেতরে মনোযোগ ধরে রাখা বেশ কঠিনই। যদিও নতুন কোচ ফিল সিমন্স মাঠের বাইরের বিষয়গুলোকে একপাশে সরিয়ে রেখে মাঠে শিষ্যদের মনোযোগ ফেরাতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার সাকিব বিরোধীরা মিরপুর স্টেডিয়ামে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে। একদিন পর সাকিবের সমর্থকরা বিক্ষোভ করে। বাংলাদেশ দল যখন অনুশীলন করছিলেন, তখন তারা স্টেডিয়ামের মূল ফটকের বাইরেই ছিলেন। ক্রিকেটাররা স্টেডিয়াম ছাড়ার সময় ওসব দৃশ্য দেখেও গেছেন। অবস্থাদৃষ্টে বাংলাদেশের সমর্থকরা এখন দুই ভাগে ভাগ হেয়ে গেছে। এইসব কি ক্রিকেটারদের মধ্যে প্রভাব ফেলতে পারে, এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছিল সিমন্সের কাছে।
তার উত্তর, ‘বাইরে কী হচ্ছে তা নিয়ে মাথা না ঘামানো এবং ক্রিকেটে মনোযোগ রাখা আমাদের দায়িত্ব। আমি সেটাই নিয়ন্ত্রণ করতে চাই, যা আমার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। তা হলো প্রস্তুতি। সোমবার শুরু হতে যাওয়া ম্যাচেই আমাদের সব মনোযোগ।’
ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হারলেও পাকিস্তানে ভালো ক্রিকেট খেলেছে বাংলাদেশ। দুই টেস্টেই জিতেছিল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। নিজের টিম নিয়ে সিমন্স বলেছেন, ‘তরুণরা মাত্র কদিন আগেই ভালো করে দেখিয়েছে। পাকিস্তানে পাকিস্তানকে হারানো সহজ কথা নয়। উন্নতি হচ্ছে, তাদের মধ্যে ভালো করার ইচ্ছাশক্তি আছে।’
হোম কন্ডিশনে বাংলাদেশ বরাবরই ভালো দল। যদিও ঘরে বাইরে এখনও প্রোটিয়াদের বিপক্ষে টেস্ট জিততে পারেনি বাংলাদেশ। সবমিলিয়ে ১৪ ম্যাচে ১২টিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। দুটি ম্যাচ ড্র করেছে। সিমন্স মনে করেন হোম কন্ডিশনে বাংলাদেশের লক্ষ্য হওয়া উচিত ম্যাচ জেতা, ‘লক্ষ্য হওয়া উচিৎ শুধু ম্যাচ জেতা, আমি এভাবেই কাজ করি। এটা অবশ্যই ভালো সুযোগ। হোমে বাংলাদেশ খুব শক্তিশালী। তাই সিরিজ জয়ের মোক্ষম সুযোগ। তবে দক্ষিণ আফ্রিকা শক্তিশালী দল। আমাদের প্রথম টেস্ট জিততে হবে, এরপর দ্বিতীয় টেস্ট নিয়ে ভাবতে হবে। সেজন্য পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিতে হবে।’
টেস্ট সিরিজ শুরু হওয়ার চার দিন আগে গত বৃহস্পতিবার দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সিমন্স। অল্প কয়েক সেশন শিষ্যদের নিয়ে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছেন তিনি। তার জন্য প্রথম টেস্টের আগে পরিকল্পনা সাজানো সহজ হওয়ার কথা নয়। যদিও সিমন্স মনে করেন দল পুরোপুরি প্রস্তুত, ‘দল মোটিভেটেড। এখানে আমি আসার আগে থেকেই তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা এই সিরিজে ভালো করতে খুবই ক্ষুধার্ত। ভারতে ভালো না হলেও পাকিস্তান সিরিজের সাফল্য তারা এখানেও পেতে চায়। আমি তাদের খুবই উজ্জীবিত দেখেছি।’
দলের পরিকল্পনা নিয়ে ইতিমধ্যে অধিনায়ক শান্তর সঙ্গেও কথা হয়েছে বলে জানালেন সিমন্স, ‘অধিনায়কের সঙ্গে দল নিয়ে কথা হয়েছে। তার ভাবনাচিন্তা ও লক্ষ্য সম্পর্কে শুনেছি। যত সময় যাবে, আরও জানতে পারবো পরস্পরকে।’
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।