কাতার বিশ্বকাপ জয়ের কীর্তিতে গত বছরের ফিফা ‘দ্য বেস্ট’ হয়েছিলেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা লিওনেল মেসি। এবার ভাবা হচ্ছিল তাঁকে পেছনে ফেলবেন ট্রেবল জয়ী ম্যানসিটির নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার আর্লিং হাল্যান্ডের। তিনি সিটির হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ইংলিশ লিগ ও এফএ কাপ জিতেছেন। কিন্তু এবারও মেসির কাছেই হারলেন হাল্যান্ড।
বিশ্বের প্রতিটি দেশের কোচ, অধিনায়ক, সাংবাদিক এবং সমর্থকদের ভোটে টানা দ্বিতীয়বারের মত ফিফা ‘দ্য বেস্ট’ অ্যাওয়ার্ড জিতলেন মিয়ামি তারকা মেসি। সবমিলিয়ে তৃতীয়বারের মতো এই পুরস্কার ঘরে তুলে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন এলএম-টেন। এর আগে ২০১৯ সালে প্রথমবার ‘ফিফা দ্য বেস্ট’ জেতেন মেসি। তবে এবার পুরস্কার বিতরণীতে উপস্থিত ছিলেন না মেসি। তার বদলে উপস্থাপক থিয়েরি অঁরি নিজেইপুরস্কারটি গ্রহণ করেন।
লন্ডনে সোমবার রাতে ‘দা বেস্ট ফিফা ফুটবল অ্যাওয়ার্ডস’ অনুষ্ঠানে পুরস্কারটির বিজয়ী হিসেবে মেসির নাম ঘোষণা করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না তিনি।
টানা দ্বিতীয় এবং সব মিলিয়ে অষ্টমবারের মতো ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলারের স্বীকৃতি পেলেন ৩৬ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।
গত সেপ্টেম্বরে ফিফার বিশেষজ্ঞ প্যানেল প্রথমে ১২ জনের তালিকা দিয়েছিল। তাদের মধ্যে সংক্ষিপ্ত তিন জনের তালিকা ডিসেম্বরে প্রকাশ করা হয় ফিফা ওয়েবসাইটে জাতীয় দলের কোচ, অধিনায়ক, ফুটবল সাংবাদিক ও সমর্থকদের দেওয়া ভোটে।
এবার পুরস্কারটি জয়ের সম্ভাবনায় ম্যানচেস্টার সিটির ট্রেবলজয়ী স্ট্রাইকার হলান্ডকে এগিয়ে রাখা হচ্ছিল। ২০২২-২৩ মৌসুমে সিটির জার্সিতে নরওয়ের তারকার পারফরম্যান্স ছিল রীতিমতো চোখধাঁধানো।
গত মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে রেকর্ড ৩৬ গোল করেন হলান্ড। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে করেন ক্লাব রেকর্ড ৫২ গোল। সেরার জন্য বিবেচিত সময়ে ৩৩ ম্যাচে তার গোল ছিল ২৮টি।
ফিফার ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, পুরস্কারটি জিততে হলান্ডের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে মেসির। ভোটাভুটিতে দুজনই সমান ৪৮ স্কোরিং পয়েন্ট পেয়েছেন। কিন্তু (নিয়মের ধারা অনুযায়ী) জাতীয় দলের অধিনায়কদের পছন্দের তালিকায় সবচেয়ে বেশিসংখ্যকবার প্রথমে থেকে এগিয়ে যান মেসি। এমবাপে ৩৮ স্কোরিং পয়েন্ট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন।
বিভিন্ন নামে ১৯৯১ সাল থেকে বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার দিয়ে আসছে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্তা সংস্থাটি। শুরু থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ‘ফিফা ওয়ার্ল্ড প্লেয়ার অব দা ইয়ার’ নামের পুরস্কারটি একবার জেতেন মেসি, ২০০৯ সালে। সেই থেকে শুরু সেরার মঞ্চে এই মহাতারকার আধিপত্যের।
পরের ৬ বছর ফরাসি ম্যাগাজিন ‘ফ্রান্স ফুটবল’ আর ফিফা মিলে দেয় ফিফা ব্যালন দ’র। এই পুরস্কারটি মেসি জেতেন ২০১০, ২০১১, ২০১২ ও ২০১৫ সালে। এরপর বর্তমানের ‘দা বেস্ট’ নাম দেয় ফিফা, যেটি মেসি প্রথম জেতেন ২০১৯ সালে। এরপর টানা দুইবার পুরস্কারটি জিতলেন তিনি।
গতবার মেসির বর্ষসেরা হওয়ায় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছিল কাতার বিশ্বকাপে তার অসাধারণ পারফরম্যান্স। ৩৬ বছরের খরা কাটিয়ে দলকে বিশ্বকাপ জেতানোয় সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন তিনি।
এক নজরে ফিফা ‘দ্য বেস্ট’ ২০২৩
ফিফা ‘দ্য বেস্ট’ নারী খেলোয়াড়: আইতানা বোনমাতি (স্পেন)
ফিফা ‘দ্য বেস্ট’ পুরুষ খেলোয়াড়: লিওনেল মেসি (আর্জেন্টিনা)
ফিফা ‘দ্য বেস্ট’ নারী গোলকিপার: মেরি আর্পস (ইংল্যান্ড)
ফিফা ‘দ্য বেস্ট’ পুরুষ গোলকিপার: এদেরসন (ব্রাজিল)
ফিফা ‘দ্য বেস্ট’ নারী কোচ: সারিনা ভাইগমান (নেদারল্যান্ডস)
ফিফা ‘দ্য বেস্ট’ পুরুষ কোচ: পেপ গার্দিওলা (স্পেন)
ফিফা পুসকাস অ্যাওয়ার্ড: গিলের্মে মাদরুগা (ব্রাজিল)
ফিফা স্পেশাল অ্যাওয়ার্ড: মার্তা (ব্রাজিল)
ফিফা ফেয়ারপ্লে অ্যাওয়ার্ড: ব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দল
ফিফা ফ্যান অ্যাওয়ার্ড: হুগো দানিয়েল ইনিগুয়েজ
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।