শেষ হইয়াও হইল না শেষ– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এ উক্তির মতোই বিসিবির নির্বাচনে বিতর্কের রেশ শেষ হচ্ছে না। গতকাল নির্বাচন কমিশন পূর্ণাঙ্গ কাউন্সিলর তালিকা প্রকাশের পর মনে হতে পারে বড় বিতর্ক থেকে বেঁচে গেছে বিসিবি। দুদকের দোহাই দিয়ে ১৫টি ক্লাবকে বাতিল করার যে কৌশল নেওয়া হয়েছিল, সেই অবস্থান থেকে সরে এসেছে কমিশন।
আপত্তির ওপর বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে ৭৬টি ক্লাবকেই কাউন্সিলরশিপ দেওয়া হয়েছে। ২ নম্বর ক্যাটেগরি থেকে ১২ জন পরিচালক নির্বাচিত হবেন তাদের ভোটে। গতকাল নির্বাচন নিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং বিএনপি প্রতিনিধি আমিনুল হকের সঙ্গে বৈঠকও হয়েছে বলে বিসিবি সূত্রে জানা গেছে।
ক্লাব ক্যাটেগরি থেকে তিনজন পরিচালক বুলবুলের পক্ষে চেয়েছেন উপদেষ্টা। বিভাগ থেকে তামিম চেয়েছেন দুজন পরিচালক। বুলবুলকে সভাপতি আর তামিমকে সিনিয়র সহসভাপতি করার প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গতকালও এ নিয়ে মিটিং ছিল তামিম প্যানেলের। এ পর্যন্ত মেনে নেওয়া হলেও বড় বিতর্ক অপেক্ষা করছে সভাপতি ও সহসভাপতি পদে নির্বাচন ঘিরে। পরিচালনা পর্ষদ ছাড়াও এবার সভাপতি ও দুটি সহসভাপতি পদে নির্বাচন পরিচালনা করবে নির্বাচন কমিশন। ২৫ জন পরিচালকের গোপন ভোটে নির্বাচিত হবেন তারা।
১৫টি ক্লাবকে বাদ রেখে ক্লাব ক্যাটেগরির কাউন্সিলরশিপের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার শুনানিতে বাদ পড়া ১৫ জন কাউন্সিলর একসঙ্গে কমিশনের সামনে শুনানিতে আপত্তি তুলে ধরেন। নাখালপাড়া ক্রিকেটার্সের কাউন্সিলর লোকমান হোসেন ভূঁইয়া সবার পক্ষে বক্তব্য দেন। পরে তামিম ইকবাল দেশের ক্রিকেটের স্বার্থের দিকটি তুলে ধরেন। নির্বাচন কমিশনকে সর্বময় ক্ষমতা দেওয়ার ব্যাপারেও কমিশনের সামনে আপত্তি তুলে ধরেন দুজন পরিচালক ফাহিম সিনহা ও ইফতেখার রহমান মিঠু।
তারা জানান, বোর্ড সভায় এমন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ নিয়ে সন্ধ্যায় ব্রিফিংয়ে তিন নির্বাচন কমিশনারকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত হতে হয়। তবে বিতর্কিত চিঠি ইস্যুকারীর নাম প্রকাশ করেননি তারা।
গতকাল চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ হোসেন ফোনে বলেন, ‘কাউন্সিলরের তালিকা বিসিবির ঠিক করে দেওয়ার নিয়ম। বিসিবি ১৫টি ক্লাবকে কাউন্সিলরশিপ দেওয়ায় আমরা বাতিল করতে পারি না। আর কাউন্সিলরশিপের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশে সময় এক দিন বাড়ানোয় ফারুক আহমেদেরটা বৈধ করা হয়েছে।’
পাঁচটি জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাউন্সিলরশিপ গ্রহণ করার পেছনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, জেলা প্রশাসকরা ফর্মে স্বাক্ষর করতে দেরি করায় এ সিদ্ধান্ত।
বিসিবি প্রধানের চিঠিতে নির্বাচন কমিশনকে নিয়মতবহির্ভূত কিছু ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। কাউন্সিলরশিপের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। দ্বিতীয়টি হলো সভাপতি, সহসভাপতি পদে নির্বাচনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কমিশনকে।
এ ব্যাপারে প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘সভাপতি, সহসভাপতি পদের নির্বাচনও আমাদের করে দিতে বলা হয়েছে চিঠিতে। কিছু ঝামেলা থাকায় হয়তো এ সিদ্ধান্ত।’ যদিও বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি নেতৃত্ব এবং উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার মধ্যে সমঝোতা বৈঠক হয়েছে বলে জানা গেছে। সেখানে ক্লাব ক্যাটেগরি থেকে তিনজন পরিচালক চেয়েছেন উপদেষ্টা। বিএনপি প্রতিনিধি তাতে রাজি হলেও তামিমের আপত্তি আছে। তিনি দুজন পরিচালক ছাড় দিতে রাজি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।