সম্প্রতি বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ফিক্সিং ইস্যুতে তোলপাড় হয়েছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) জমা পড়েছে তদন্ত রিপোর্ট। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগেও (ডিপিএল) হরহামেশাই ম্যাচ গড়াপেটার ওঠে অভিযোগ। এরই মাঝে জানা যায়, জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টিতে রংপুরের ক্রিকেটার নাঈম ইসলামকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
শুধু নাঈম একমাত্র ক্রিকেটার নন, এনসিএল টি টোয়েন্টিতে ফিক্সারদের রাডারে ছিলেন বরিশালের অলরাউন্ডার মঈন খানও। সিনিয়রকে অনুসরণ করে তিনিও সাথে সাথে দলের ম্যানেজার জানিয়ে সততার পরিচয় দেন। তবে এটাই একমাত্র ঘটনা নয়। সূত্র বলছে, এনসিএল টি টোয়েন্টিতে কমপক্ষে তিন দলের ক্রিকেটাররা ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, ৩ অক্টোবর সকাল পৌনে ৯টায় বরিশাল অলরাউন্ডার মঈন খানের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে একটি মেসেজ আসে। বিশ্লেষণ করে দেখা যায় নম্বরটি যুক্তরাজ্যের। সন্দেহজনক বার্তা পেয়ে দলের ম্যানেজার গোলাম কিবরিয়া সোহেলকে অবহিত করেন মঈন খান। সেদিনই সিলেট স্টেডিয়ামে অ্যান্টি করাপশন ইউনিটের কাছে রিপোর্ট করেন বরিশাল ম্যানেজার।
মুঠোফোনে মঈন খান বলেন, ‘একটা হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার থেকে একটা মেসেজ আসছে। আমি আবার সেটা সাথে সাথে ম্যানেজারকে জানিয়েছি। ম্যানেজার আবার আকসুকে জানিয়েছে। উনি আমার কাছে প্রমাণগুলা চাইসে, আমি আবার সেগুলা সাথে সাথে দিয়ে দিয়েছি। ওইদিন মেসেজ পাঠানোর ১০-২০ মিনিটের মধ্যে আমি জানিয়ে দিয়েছি এরকম।’
ঘরোয়া ক্রিকেটে নিয়মিত মুখ ৩০ বছর বয়সী মঈন খান। ২০১৬ সালে তিনি জাতীয় ক্রিকেট লিগে বরিশাল বিভাগ ক্রিকেট দলের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন। পরের বছর প্রিমিয়ার বিভাগ ক্রিকেট লিগে খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতির হয়ে লিস্ট এ ক্রিকেটে পদার্পণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত প্রথম শ্রেণিতে ৩৯টি, লিস্ট এ’তে ৪৫ ও ১৭টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন।
এর আগে ২৬ সেপ্টেম্বর এনসিএল টি টোয়েন্টিতে রংপুরের জাতীয় দলের সাবেক অলরাউন্ডার নাঈম ইসলামকে ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল ফিক্সাররা। ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে ম্যাচ শুরুর আগে নিয়ম অনুযায়ী সবার মতো মোবাইল জমা দিয়েছিলেন তিনি। ম্যাচ শেষে ফোন হাতে নিয়ে দেখতে পান অপরিচিত নম্বর থেকে সন্দেহজনক মেসেজ। ৩৮ বছর বয়সী জাতীয় দলের সাবেক এই অলরাউন্ডার অবশ্য সে পথে পা বাড়াননি।
ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পাওয়ার সাথে সাথে রংপুরের ম্যানেজার তারেক আহমেদ রুবেনকে বিষয়টি জানালে তিনি তা বিসিবির অ্যান্টি করাপশন ইউনিটকে (এসিইউ) অবহিত করেন। জানা গেছে, ‘ডেভিল’ ছদ্মনামধারী বার্তাপ্রেরকের নম্বর ছিল যুক্তরাজ্যের। পরিচয় দেখিয়েছে ভারতীয় অমিত এমজেঠিয়া। মূলত ম্যাচের মাঝখানে ১ ওভার ফিক্সিং করার জন্যই কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি।
দুটি ঘটনাতেই ক্রিকেটাররা সততার পরিচয় দিয়েছে। তবে এনসিএল টি টোয়েন্টিতে কোন ক্রিকেটার ফিক্সিংয়ের সম্পৃক্ত ছিলো কি না তা যাচাই করছে বিসিবির অ্যান্টি করাপশন ইউনিট। বিপিএলের বাইরে দেশের ঘরোয়া লিগ ও টুর্নামেন্টগুলোতেও এখন বাজিকররা সম্পৃক্ত হচ্ছে। মূলত যেসব ক্রিকেটারদের জাতীয় দলে খেলার সম্ভাবনা কম তাদেরকে টার্গেট করছে ফিক্সাররা। যা বিসিবির দুর্নীতি দমন ইউনিটের জন্য দিন দিন আরও চ্যালেঞ্জিং হচ্ছে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।

