জাতীয় ক্রিকেট লিগ (এনসিএল) টি-টোয়েন্টির দ্বিতীয় আসর প্রায় শেষের দিকে। জাতীয় দলের নিয়মিত খেলোয়াড়দের অনুপস্থিতি এবং বৃষ্টির বাধার মধ্যেও ভালোভাবেই জমেছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের এই আসর।
রোববার (১২ অক্টোবর) টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচে মাঠে নামছে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন রংপুর এবং খুলনা। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বিকেল ৫টায় শুরু হবে শিরোপার লড়াই।
ফাইনালের মঞ্চে নামার আগে আজ দুপুরে আনুষ্ঠানিক ফটোসেশন এবং সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন দুই দলের অধিনায়করা। রংপুরের অধিনায়ক আকবর আলী সেখানে জানান, ফাইনালকে তিনি বাকি ৮-১০টা ম্যাচের মতোই দেখেন। এই ম্যাচের বিশেষ গুরুত্ব থাকলেও নিয়মিত গেইম প্ল্যান নিয়েই মাঠে নামবে তার দল। খুলনার অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুনের লক্ষ্য একটাই, ট্রফি নিজেদের ঘরে তোলা। তিনি জানান, অনেকদিন ধরে ট্রফি না পাওয়া খুলনাকে এই ট্রফি উপহার দিতে চায় তার দল।
মিঠুন বলেন, ‘অনেক লম্বা সময় খুলনায় ট্রফি যায়নি। টুর্নামেন্টের প্রথম থেকেই আমাদের খেলোয়াড়রা সবাই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম যে এই ট্রফিটা আমরা নিতে চাই। নতুন একটা ম্যাচ (ফাইনাল), চেষ্টা থাকবে সেরাটা দেওয়ার। ডে ওয়ান থেকেই আমাদের প্রতিটি খেলোয়াড়ের মোটিভেশন এটাই ছিল যে আমরা খুলনাকে ট্রফিটা উপহার দিতে চাই।’
কোয়ালিফায়ার খেলে সরাসরি ফাইনালে এসেছে খুলনা। পারফরম্যান্সের দিক থেকে সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত একটু এগিয়ে তারা। অভিজ্ঞতার দিক থেকেও বেশ অভিজ্ঞ দলটি। তবে ফাইনালের আগে নিজেদের সক্ষমতার পাশাপাশি প্রতিপক্ষেরও প্রশংসা করলেন মিঠুন।
তিনি বলেন, ‘রংপুর শেষ কিছু ম্যাচে অবশ্যই ভালো ক্রিকেট খেলেছে। ওরা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন, অবশ্যই খুব ভালো দল। ওদের প্রতি সম্মানটা থাকবে। তবে একই সময়ে আমরাও খুবই ভালো ক্রিকেট খেলেছি। আমাদের দলটাও খুবই ভারসাম্যপূর্ণ এবং অভিজ্ঞ। আমরা আশাবাদী।’
প্রায় ৫ বছর ইনজুরি কাটিয়ে এবারের এনসিএলে যোগ দিয়েছেন অভিষেক দাস। আর সুযোগটা ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছেন তিনি। কোয়ালিফায়ারের মতো বড় ম্যাচে অনবদ্য ব্যাটিং-বোলিং দিয়ে হয়েছেন ম্যাচসেরা। তাকে নিয়ে নিজের প্রত্যাশার কথাও জানিয়েছেন অধিনায়ক।
মিঠুন বলেন, ‘অভিষেক সম্পর্কে আমাদের প্রথমদিকে পরিপূর্ণ ধারণা ছিল না। ওর সক্ষমতা কী সেটা তো সবাই দেখেছেন এখন। কারণ অনূর্ধ্ব-১৯ এ ওই সময় আমি ওর সম্পর্কে ভালো জানতাম না। কিন্তু ডে বাই ডে আমরা চেষ্টা করছিলাম, যেহেতু ও ইনজুরি থেকে এসেছে, ওকে যেন সময়মতো কাজে লাগাতে পারি।’
এদিকে ফাইনাল নিয়ে নিজের ভাবনার কথা জানাতে গিয়ে আকবর বলেন, ‘ম্যাচটা ফাইনাল হলেও আমি বলব এটা অন্য ৮-১০টা ম্যাচের মতোই একটা ম্যাচ। এটার হয়তো গুরুত্বটা একটু বেশি। কিন্তু আমরা যেরকম পরিকল্পনা নিয়ে নামি, হয়তো বা ওই পরিকল্পনা নিয়েই নামব। চেষ্টা থাকবে অবশ্যই ম্যাচ জেতার।’
এলিমিনেটর এবং কোয়ালিফায়ার খেলে ফাইনালে এসেছে রংপুর। গতকাল চট্টগ্রামকে কোয়ালিফায়ার ম্যাচে হারিয়ে এই মঞ্চে জায়গা করে নিয়েছে তারা। গুরুত্বপূর্ণ কোয়ালিফায়ার ম্যাচে ব্যাট-বল হাতে দলকে জেতানোর নায়ক ছিলেন নাসির হোসেন। ফাইনালের আগে তাকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন অধিনায়ক আকবর।
তিনি বলেন, ‘নাসির ভাই আসলে প্রতিটি দলের জন্যই সম্পদ। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই দেখবেন উনি নতুন বলে বোলিং করছেন, পাওয়ারপ্লেতে বোলিং করছেন। আর টুর্নামেন্টের শেষের দিকে এসে টপ অর্ডারে ব্যাটিং করেছেন।’
ফাইনালে আকবরের খেলা মানে নিশ্চিত ট্রফি জয়। বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গনে এমন একটি ধারণা আছে তাকে নিয়ে। অনেকে তাকে ‘ক্যাপ্টেন কুল’ বলেও সম্বোধন করেন। তবে প্রচলিত এই ধারণাকে খুব একটা পাত্তা না দিয়ে ফাইনালকে ফাইনালের মতো গুরুত্ব দিতে চাইছেন আকবর।
তিনি বলেন, ‘এটা নিয়ে আমি আসলে বলব না। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ, যেভাবে যাচ্ছে ভালো যাচ্ছে। এটা আসলে বলার জন্য বলতে গেলে বা শুনার জন্য শুনতে গেলে ভালো লাগে। আসলে ব্যাপারটা এত সহজও না।’
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।