বিপিএলের নবম আসরের ফাইনালিস্ট দল সিলেট স্ট্রাইকার্স চলতি বিপিএলে একটি জয়ও তুলে নিতে পারেনি। ঢাকা পর্বের দুই হার শেষে সিলেট পর্বও শুরু হয়েছে হার দিয়ে। তবে দল ভালো অবস্থানে খুব দ্রুত ফিরে আসবে এবং সেটি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার নেতৃত্বগুণেই, এমনটাই জানিয়েছেন সিলেটের ম্যানেজার নাফিস ইকবাল।
রোববার (২৮ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আউটারে ঐচ্ছিক অনুশীলন করে সিলেট স্ট্রাইকার্স। এই অনুশীলনে দলের অধিনায়ক মাশরাফী ছিলেন না। বাকিদের প্রায় সকলেই উপস্থিত ছিলেন দলীয় অনুশীলনে। দীর্ঘসময় ক্রিকেটারদের সঙ্গে কাজ করেছেন কোচ রাজিন সালেহ। চেষ্টা করেছেন সকলকে চাঙ্গা রাখতে।
এই বিপিএলে কয়েক দফায় মাশরাফী জানিয়েছেন, তিনি আদর্শ অবস্থানে নেই। ভালো হতো না খেললে। এ বিষয়ে অনুশীলন শেষে টিম ম্যানেজার নাফিস ইকবাল বলেন, ‘আমি মাশরাফীর বক্তব্য শুনিনি। কিন্তু ফ্রাঞ্চাইজি তার গুরুত্বটা বোঝে। সকলেই চাইছে সে মাঠে উপস্থিত থাকুক। এক একটা দলের শক্তির জায়গা একেক রকম থাকে। আমরা সকলেই জানি মাশরাফী কতটা শক্তিশালী, শুধু মাঠে খেলোয়াড় হিসেবে না, তার মধ্যে অসাধারণ নেতৃত্বগুণ রয়েছে। দলকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্যও কিন্তু আমাদের দেখতে হয়। আমাদের ফ্রাঞ্চাইজি মালিক যারা রয়েছেন তারা চান যে ওই নেতৃত্বের জায়গা থেকে মাশরাফী যেন একাদশে থাকে।’
তবে মাঠে নামার জন্য যতটা প্রস্তুতি থাকা দরকার, মাশরাফী সেটি নিতে পারেননি। এটিও জানেন নাফিস ইকবাল। এই বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, যদি প্রস্তুতির জায়গা থেকে বলেন, আগে একটা জাতীয় সংসদ নির্বাচন ছিল। যার কারণে সে নিজেকে প্রস্তুত করতে পারেনি। কিন্তু আপনি যদি সব শেষ ম্যাচটি দেখেন, সে খুবই ভালো করেছে, তার বোলিংও ভালো হয়েছে। সুতরাং আমার মনে হয়, যতই দিন যাবে সে আরও ভালো করবে।’
তিন ম্যাচের দুটিতে মাশরাফী বল করেছেন। সবশেষ ম্যাচে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়েছিলেন সিলেটের অধিনায়ক। নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে তিনি বল করেননি। আর প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে ২.৩ ওভার বলে করে ২৫ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ১ উইকেট। তবে পারফরম্যান্সের চেয়েও তার নেতৃত্বগুণ বিবেচনায় রেখে তাকে দলে নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে নাফিস ইকবাল বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হচ্ছে মাশরাফীর মেন্টালিটি সব থেকে শক্তিশালী। এই গুণটা সে সৃষ্টিকর্তা থেকে পেয়েছে উপহার হিসেবে। সবার মধ্যে এই জিনিসটা থাকে না। নেতৃত্বের মাধ্যমে সবকিছুর সঙ্গে ভালোভাবে মানিয়ে নিতে পারে মাশরাফী।’
সিলেটের ম্যানেজার আরও বলেন, ‘ক্রিকেট অনেক পেশাদার জায়গায় চলে গেছে। এখানে একদিনের অনুশীলনের থেকে তিন দিনের বিশ্রামটা বেশি জরুরি। আপনি কীভাবে আপনার মাইন্ডকে পরিষ্কার রাখবেন, আপনি কীভাবে পরিকল্পনা করবেন, এটা সম্পূর্ণই আপনার ওপরে নির্ভর করছে।’
দলের ধারাবাহিক হারের বিষয়ে নাফিস ইকবাল বলেন, ‘কেউ কিন্তু ইচ্ছা করে হারতে চায় না। আপনি যদি রাস্তার মধ্যেও বল করেন তাহলে কেউ ইচ্ছা করে আউট হতে চাইবে না বা হারতে চাইবে না। আমাদের ছোট ছোট কিছু ভুল হয়েছে যার কারণে খেলাগুলোতে আমাদের হারতে হয়েছে। সবাই এটা নিয়ে কাজ করছে। আশা করি খুব দ্রুত ভালো কিছু পাওয়া যাবে।’
সিলেটের ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়ে জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার নাফিস ইকবাল বলেন, ‘দুই-তিনটা হারের পরে একটু বাজে অবস্থা তৈরি হয়। তারপরও খেলোয়াড়রা খুব ভালো অবস্থানে আছে। পরের ম্যাচটি যদি আমরা ভালো খেলি তাহলে এখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। একটা-দুইটা ম্যাচ পরপর জিততে পারলে তখন আবার ভালো অবস্থানে চলে আসবে দল। আর এসব টুর্নামেন্টে সঠিক সময়ে ভালো করাটা জরুরি। আমাদের হাতে সময় রয়েছে এবং আশা করি খুব দ্রুত আমরা ফিরে আসবো।’
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।