ওপেনিংয়ে আব্দুল্লাহ শফিক ও ইমাম উল হকের উড়ন্ত সূচনায় ১০ দিনের ব্যবধানে বিশ্বকাপে নতুন ইতিহাস লেখার বার্তা দিয়েছিল পাকিস্তান। তবে মার্কাস স্টয়নিস ও অ্যাডাম জাম্পার বোলিং নৈপুণ্যে রেকর্ড গড়া হলো না বাবর আজমদের। ২৭ বল হাতে থাকলেও দ্রুত উইকেট বিলিয়ে দিয়ে ৬২ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে পাকিস্তান।
লক্ষ্য ৩৬৮ রানের। বেশ কঠিনই। তবে অস্ট্রেলিয়ার ছুড়ে দেওয়া এত বড় লক্ষ্য সামনে রেখেও লড়ছিল পাকিস্তান। ৩৮.৫ ওভার শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ২৬৯ রান। কিন্তু এরপরই খেয় হারিয়ে ফেলে তারা। ইফতিখারের (২৬) পর মোহাম্মদ রিজওয়ান (৪৬) আউট হলে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত তারা ৪৫.৩ ওভারে ৩০৫ রানে অলআউট হয়ে যায়। অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ জিতে নেয় ৬২ রানে।
বড় রান তাড়ায় ওপেনিংয়ে দারুণ সূচনা পেয়েছে পাকিস্তান। ১২৭ বলে ১৩৪ রান তুলে দিয়েছেন আবদুল্লাহ শফিক আর ইমাম উল হক। অবশেষে শফিকের আউটে ভেঙেছে এই জুটি। মার্কাস স্টয়নিস বল হাতে নিয়েই পেয়েছেন সাফল্য। তাকে পুল করতে গিয়ে সহজ ক্যাচ তুলে দেন শফিক। ৬১ বলে ৬৪ রানের ইনিংসে ৭টি চার আর ২টি ছক্কা হাঁকান পাকিস্তানি ওপেনার।
আরেক ওপেনার ইমাম উল হককেও শিকার করেছেন স্টয়নিস। ৭১ বলে ১০ বাউন্ডারিতে ইমাম করেন ৭০। দুই সেট ব্যাটার ফেরার পর বাবর আজমের ওপর ভরসা ছিল। কিন্তু অ্যাডাম জাম্পার নিচু হয়ে যাওয়া বল পুল খেলতে গিয়ে কামিন্সের দারুণ এক ক্যাচ হয়েছেন পাকিস্তান অধিনায়ক।
এর আগে ৪৫ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার রান ছিল ৫ উইকেটে ৩৪০। মনে হচ্ছিল, সংগ্রহটা চারশোর আশপাশে চলে যাবে। সেটা হয়নি। শেষ ৫ ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করেছে পাকিস্তান। অস্ট্রেলিয়া ৪টি উইকেট হারিয়ে তুলতে পেরেছে মোটে ২৭ রান।
তবে কাজের কাজ তো আগেই করে গেছেন দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার আর মিচেল মার্শ। তাদের জোড়া সেঞ্চুরিতে ভর করে শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ৩৬৭ রানের বড় পুঁজি গড়েছে অস্ট্রেলিয়া।
বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টস জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানানোই যেন কাল হয়েছে পাকিস্তানি অধিনায়ক বাবর আজমের। এক ওপেনিং জুটি ভাঙতেই ঘাম ঝরেছে পাকিস্তানি বোলারদের।
ওপেনিংয়ে ৩৩.৪ ওভারে ২৫৯ রান। মারকুটে ব্যাটিংয়ের সঙ্গে জোড়া সেঞ্চুরিও তুলে নেন মিচেল মার্শ আর ডেভিড ওয়ার্নার। একটি উইকেটের জন্য রীতিমত হাহাকার করছিল পাকিস্তান।
অবশেষে ম্যারাথন ওপেনিং জুটিটি ভাঙেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। শর্ট ফাইন লেগে উসামা মীরের হাতে ক্যাচ দেন মার্শ। ১০৮ বলে ১২১ রানের ইনিংসে ১০টি বাউন্ডারি আর ৯টি ছক্কা হাঁকান মার্শ। এটি তার ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসও।
বিধ্বংসী ওপেনিং জুটি ভাঙার পরের বলে আরও একটি উইকেট তুলে নেন শাহিন আফ্রিদি। মিডঅনে তুলে মারতে গিয়ে বাবর আজমের ক্যাচ হন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (১ বলে ০)।
অস্ট্রেলিয়ার আরেক ব্যাটিং স্তম্ভ স্টিভেন স্মিথকেও থিতু হতে দেননি উসামা মীর। লেগস্পিন বলে ফিরতি ক্যাচ বানিয়ে ফেরান ডানহাতি এই ব্যাটারকে (৭)। অল্প সময়ের মধ্যে ৩টি উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।
কিন্তু ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২১তম সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া ওয়ার্নার তার ইনিংসটি বড় করেছেন বেশ। ৪৩তম ওভারে এসে অবশেষে এই বিধ্বংসী ব্যাটারকে সাজঘরের পথ দেখান হারিস রউফ।
তবে ওয়ার্নার ততক্ষণে দেড়শ পেরিয়ে তার ব্যক্তিগত সংগ্রহকে নিয়ে গেছেন ১৬৩ রানে। ১২৪ বলের মারকুটে ইনিংসে ১৪ বাউন্ডারির সঙ্গে ৯টি ছক্কা হাঁকান এই ওপেনার। তবে এটিই ওয়ার্নারের ক্যারিয়ারসেরা নয়। তার ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসটি ১৭৯ রানের।
পাকিস্তানের সবচেয়ে সফল বোলার শাহিন শাহ আফ্রিদি। ১০ ওভারে ৫৪ রান দিয়ে একাই নেন ৫টি উইকেট। ৩ উইকেট শিকার হারিস রউফের।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।