এম এস সাহাব : বিশ্বকাপের শিরোপা তো দূরের কথা, এর আগে কখনই ফাইনাল খেলেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। আর ভারত গত এক দশকের বেশি সময় ধরে জিততে পারেনি টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের শিরোপা। এরমধ্যে সেমিফাইনাল পর্যন্ত তারা একাধিকবার পৌঁছলেও ফাইনাল খেলা হয়নি। তাই এই দলের গায়ে লেগেছিল ‘চোকার্স’ এর তকমা। অবশেষ এই তকমা মুছে দিয়ে শিরোপা জিতেছে রোহিত শর্মার দল ভারত। তারা ৭ রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ঘরে তুলেছে ক্রিকেটের সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত ও আকর্ষণীয় আসরের ট্রফি।
অপবাদ ঘুচাতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১৭৭ রানের টার্গেট দিয়েছিল ভারত। একটা সময় মনে হচ্ছিল ম্যাচটি তাদের হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু শেষদিকে ফার্ষ্ট বোলারদের কার্যকর বোলিং নাটকীয় জয় এনে দেয় ভারতকে।
গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপ ফাইনালে হারের দুঃসহ স্মৃতি ভুলে ১৩ বছরের শিরোপার আক্ষেপ ঘুচিয়ে বিশ্বের তৃতীয় দল হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হয়েছে টিম ইন্ডিয়া। ২০১১ সালে আইসিসির মেগা ইভেন্টে শেষবারের মতো শিরোপা জিতে ভারত। সেটি ছিল ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এর আগে ২০০৭ সালের প্রথম আসরের চ্যাম্পিয়ন তারা। ভারত ছাড়াও দুটি করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা রয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডের। শনিবার (২৯ জুন) মেগা ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্রিজটাউনের কিংসটন ওভালে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়।
টস জিতে আগে ব্যাটিং করে বিরাট কোহলির ৫৯ বলে ৭৬, অক্ষর প্যাটেলের ৩১ বলে ৪৭ ও শিভম দুবের ১৬ বলে ২৭ রানের কল্যাণে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর সংগ্রহ করে ভারত। জবাবে হেনরিক ক্লাসেনের ২৭ বলে ৫২ রানের তাণ্ডবীয় ইনিংস সত্ত্বেও ভারতীয় বোলারদের তোপে পড়ে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৯ রান করতে সক্ষম হয় প্রোটিয়ারা। এতে করে ৭ রানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারত।
১৭৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১২ রানের মধ্যে জোড়া উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ৫ বলে ৪ রান করে আউট হন রেজা হেনড্রিকস ও এইডেন মার্করাম।
এরপর স্টাবসকে সঙ্গে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন ডি কক। ৫৮ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার। তবে দলীয় ৭০ রানে ২১ বলে ২১ রান করে আউট হন স্টাবস। এরপর ক্রিজে আসা হেনরিখ ক্লাসেনকে নিয়ে ব্যাট করতে থাকেন ডি কক। তারা জয়ের আশা জাগিয়ে ছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। বাজিমাত করে রোহিত-কোহলিরা।
পুরো টুর্নামেন্টে নিজের নামের প্রতি সেভাবে সুবিচার করতে পারেনি বিরাট কোহলি। কিন্তু ফাইনাল ম্যাচে স্বরূপে ফেরেন ভারতের এ ওপেনার। তার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭৬ রান করে দলটি। কোহলি ৫৯ বলে ৬টি চার ও ২ ছক্কায় ৭৬ রানের ইনিংস খেলেন। অক্ষর ৩১ বলে ১টি চার ও ৪ ছক্কায় খেলেন ৪৭ রানের ইনিংস। আর দুবে ১৫ বলে ৩টি চার ও ১ ছক্কায় ২৭ রানের ইনিংস খেলেন। বল হাতে প্রোটিয়াদের কেশব মহারাজ ৩ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ২টি উইকেট নেন। ১টি করে উইকেট নেন মার্কো জানসেন, কাগিসু রাবাদা ও অ্যানরিখ নরকিয়া।
এর আগে টসে জিতে ঝড়ো শুরুর আভাস দিয়ে শুরুতেই ফিরেন রোহিত শর্মা। মার্কো জানসেনের প্রথম ওভারে বিরাট কোহলি তিনটি চার মেরে ১৫ রান তোলেন। কেশভ মহারাজের দ্বিতীয় ওভারে রোহিত পর পর দুই বলে দুটি চার মারেন। তাতে ১.৩ ওভারেই ভারতের রান হয়ে যায় ২৩। কিন্তু তৃতীয় বলেই স্কয়ার লেগে হেনরিখ ক্লাসেনের হাতে ধরা পড়েন ৫ বলে ৯ রান করে। তবে ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারানো ভারতকে পরে টেনে তোলেন কোহলি ও অক্ষর। চতুর্থ উইকেটে তারা দুজন ৫৪ বলে তোলেন ৭২ রান। ঝড়ো ব্যাটিং করা অক্ষর দলীয় ১০৬ রানের মাথায় রান আউট হয়ে ফিরে যান। ৩১ বল খেলে ১টি চার ও ৪ ছক্কায় ৪৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে যান।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।