কুয়েতে ফিলিস্তিনের কাছে অসহায়ভাবে আত্মসমর্পণ করেছিল বাংলাদেশ। হেরেছিল ৫-০ গোলে। তবে বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বে আজ কিংস অ্যারেনাতে শেষ পর্যন্ত লড়াই করার চেষ্টা করেছেন জামাল ভূঁইয়ারা। কিন্তু রক্ষণের ভুলে শেষ মুহূর্তে এক গোল খেয়ে হেরে মাঠ ছাড়তে হয়েছে হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যদের। তবে ম্যাচ হারলেও জামাল-তপু-হৃদয়দের নিয়ে গর্বিত হওয়া উচিত বলে মনে করছেন স্প্যানিশ কোচ।
পুরো ম্যাচে ফিলিস্তিনের পাশাপাশি বাংলাদেশও সুযোগ পেয়েছিল। রাকিব-ফাহিমরা ভীতি ছড়ালেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। কুয়েতের মাঠে যেভাবে রক্ষণের ভুলে একের পর এক গোল হয়েছে, কিংস অ্যারেনাতে তা হয়নি। আগের চেয়ে ভুল-ভ্রান্তিও কম হয়েছে। তবে দুটি ভুল ছিল চোখে পড়ার মতো।
প্রথমটিতে ম্যাচঘড়ির ৪৮ মিনিটে ফিলিস্তিন ভালো সুযোগ নষ্ট করে। শাকিল হোসেনের ব্যাক পাস মিতুল ঠিকমতো ক্লিয়ার করতে পারেননি। বল পায়ে রেখে ক্লিয়ার করার আগেই তা ওলে দাবাঘ ফাঁকায় পেয়েও ঠিকমতো লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি। তার আগেই মিতুল প্রাচীর হয়ে শুয়ে পড়ে আটকানোর চেষ্টা করেছেন। শেষ পর্যন্ত দাবাঘের শট অল্পের জন্য পোস্টের বাইরে দিয়ে গেছে।
তবে শেষটি থেকে ঠিকই ফিলিস্তিন গোল আদায় করে নিয়েছে। যোগ করা সময়ে কর্নার থেকে ইসলাম বারতানের হেডে তেরমানির আনমার্কড থেকে গোল করতে কোনও সমস্যাই হয়নি। গোলকিপার শ্রাবণ কিছুই করতে পারেনি।
বাংলাদেশ কোচ কাবরেরা ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘ফুটবলে এমনটা হতে পারে। আমাদের দল নিয়ে গর্বিত হওয়া উচিত, বিশেষ করে প্রথমার্ধে আমরা জমাট ছিলাম। যদিও ওরা বল পজিশনে এগিয়ে ছিল, কিন্তু আমরা আধিপত্য দেখিয়েছি, ভীত ছিলাম না। পরিস্থিতি ভালোভাবে সামাল দিয়েছি। অনেক কর্নার পেয়েছিল ওরা, সেগুলোও আমরা ভালোভাবে ডিফেন্ড করেছি। শেষ দিকে আমরাও কিছু সুযোগ পেয়েছিলাম, কিন্তু কাজে লাগাতে পারিনি।’
বিরতির পর একই গতিতে খেলা চলতে থাকে। বাংলাদেশও সুযোগ পেয়ে গোল করতে পারেনি। তবে ফিলিস্তিনকে আর রোখা যায়নি। কাবরেরা বলেছেন, ‘দ্বিতীয়ার্ধেও ভালো শুরু করলাম। কিন্তু আবারও ছন্দপতনের মুহূর্ত এলো, পরে আমরাও সম্ভবত জয়ের সুযোগ পেয়েছিলাম। শেষ পর্যন্ত শারীরিক শক্তিনির্ভর দলের বিপক্ষে আমরা জাল অক্ষত রাখতে পারলাম না; এটা হতে পারে। যাই হোক, ৯৫ মিনিট…আমাদের জন্য দারুণ ছিল। দল ভীষণ ইতিবাচক ছিল। এখন আমাদের জুনের পরবর্তী চ্যালেঞ্জ নিয়ে ভাবতে হবে।’
গোলকিপার মিতুল মারমার পারফরম্যান্সে প্রশংসা ঝরলো কাবরেরার কণ্ঠে। বলেছেন, ‘মাসের পর মাস সে (মিতুল) পারফর্ম করছে। সে সেই পর্যায়ে আছে। মিতুল আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দেখা যাক, তার কী হয়েছে, কী অবস্থা সেটা দেখতে হবে।’
দল যে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে পয়েন্টর জন্য তাও উঠে এলো বাংলাদেশ কোচের কথায়। তবে সবসময় ফল নিজেদের অনুকূলে থাকে না সেটা বুঝিয়ে দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘৯৫ মিনিট পর্যন্ত আমরা পয়েন্ট পাওয়ার জন্য লড়াই করেছি। রক্ষণ অটুট রেখেছি। আপনাদের এর চাপ ও অ্যাটেনশন বুঝতে হবে। ফিলিস্তিনের বিপক্ষে, যারা ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৯৭তম স্থানে আছে, তাদের বিপক্ষে পয়েন্ট পাওয়ার জন্য যতটা সম্ভব চেষ্টা করেছি আমরা, যেটা আমাদের মান দেখাচ্ছে। এটা মনোযোগের ঘাটতি নয়। কখনও আপনি প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল পাবেন, কখনও পাবেন না। এটা হতাশাজনক। আসলেই আজ তাদের চেয়েও আগে আমাদের গোল প্রাপ্য ছিল। পয়েন্ট না পাওয়ায় অবশ্যই হতাশ।’
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।