গত মৌসুমেই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে টানা চার বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড করে ফেলেছে বসুন্ধরা কিংস। এবার সেই রেকর্ডকে আরো ওপরে তোলার পালা অস্কার ব্রুজনের দলের।
শনিবার আবাহনীকে ২-১ গোলে হারিয়ে টানা পঞ্চম শিরোপা জয়ের একদম কাছাকাছি পৌঁছে গেছে রাকিব-রবসনরা। ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে পেছনে থাকা মোহামেডানের চেয়ে ৯ পয়েন্টে এগিয়ে গেলো তারা। হাতে আছে চার ম্যাচ।
আবাহনীর এ হারটি ছিল প্রিমিয়ার লিগে কিংসের কাছে অষ্টম। শীর্ষ লিগে ওঠার পর কিংস কখনো আবাহনীর কাছে হারেনি। আবাহনী দুটি ম্যাচ ড্র করতে পেরেছে মাত্র। এবারের লিগের প্রথম পর্বে ২-০ গোলে জিতেছিল কিংস।
কিংস অ্যারেনায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের চেয়ে ৯ পয়েন্ট পেছনে থেকে ম্যাচটি খেলতে নেমেছিল আবাহনী। জিতলে কাগজ-কলমে চ্যাম্পিয়ন ফাইটে টিকে থাকতো আকাশি-নীলরা। হেরে যাওয়ায় আর কোনো সুযোগই থাকছে না সর্বাধিক ৬ বারের চ্যাম্পিয়নদের। কারণ, কিংস এবং আবাহনীর ব্যবধান দাঁড়ালো ১২ পয়েন্টের।
আবাহনী বাকি চার ম্যাচ জিতলেও কিংসকে টপকাতে পারবে না। এমনকি কিংস সব ম্যাচ হারলেও। তাই এই হারে প্রিমিয়ার লিগের আরেকটি ব্যর্থ আসর শেষ করতে যাচ্ছে আবাহনী।
জিততে না পারলেও এ ম্যাচ ড্র করে ফেরার দারুণ সুযোগ ছিল আবাহনীর। কিন্তু দুই ফরোয়ার্ড স্টুয়ার্ট কর্নেলিয়াস ও ওয়াশিংটনের গোল মিসে আবাহনীর আরেকবার লজ্জা পেলো কিংসের কাছে। ১০ ম্যাচ খেলে কিংসকে এক ম্যাচেও হারাতে না পারার যন্ত্রণা অনেকদিন পোড়াবে আবাহনী সমর্থকদের।
পঞ্চম মিনিটে পিছিয়ে পড়ে আবাহনী। ডান দিক থেকে পাওয়া কর্নার ছোট্ট করে মাসুক মিয়া জনিকে বাড়িয়ে দিয়েছিলেন মিগুয়েল। জনি আবার বলটি ঠেলে দিয়েছিলেন মিগুয়েলের কাছে। মিগুয়েলের শট ব্লক করেছিলেন আবাহনীর গোলরক্ষক সোহেল। বল তার হাত থেকে ছুটলে জটলা তৈরি হয়েছিল গোলমুখে। সেখান থেকে রাকিব সুযোগ কাজে লাগিয়ে বল জড়িয়ে দেন আবাহনীর জালে।
এরপরই বিপদ নেমে আসে কিংস শিবিরে। ১১ মিনিটে মিলাদ শেখের শট রুখে দিয়েছিলেন কিংসের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। ছুটে যাওয়া বল শট নিতে গিয়েছিলেন আবাহনীর গ্রানাডিয়ান ফরোয়ার্ড স্টুয়ার্ট কর্নেলিয়াস; কিন্তু সেই শট লাগে জিকোর মাথায়। মাথ ফেটে যায় জিকোর। দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। সিটিস্ক্যান করতে হয়েছে দেশের অন্যতম সেরা এই গোলরক্ষকের মাথায়।
৩৪ মিনিটে আবাহনীর বিপদ ডেকে আনেন মিলাদ শেখ। বল নিয়ে বক্সে ঢোকা মিগুয়েলকে ফেলে দেন ইরানি এই ডিফেন্ডার। রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দিলে মিগুয়েলই স্পট কিকে ব্যবধান ২-০ করেন।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে কিংসের রক্ষণে হানা দিতে থাকে আবাহনী। সফল হয় ৫ মিনিটের মধ্যেই। ওয়াশিংটনের সঙ্গে বল দেওয়া নেওয়া করে কিংসের বক্সে ঢুকে পড়েন কর্নেলিয়াস। দারুণ প্লেসিংয়ে গোল করে ব্যবধান কমান তিনি।
এর পর তিনটি সহজ সুযোগ পেয়েছিল আবাহনী। এর মধ্যে ৫৭ মিনিটে কর্নেলিয়াস কিংসের বদলি গোলরক্ষক মেহেদেী হাসান শ্রাবণকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি। তিনি যে শট নিয়েছিলেন তা চলে যায় পোস্ট ঘেঁষে বাইরে। ৬৪ মিনিটে ওয়াশিংটনও ব্যর্থ হন শ্রাবণতে একা পেয়ে। দুর্দান্ত সেভ করে তরুণ এ গোলরক্ষক। ৬৭ মিনিটে কর্নেলিয়াসের শট পোস্ট ঘেঁষে বাইরে গেলে শেষ সুযোগ হারায় আবাহনী।
এ ম্যাচ জিতলে পয়েন্ট টেবিলে মোহামেডানের সমান হতে পারতো আবাহনী। তারা হেরে যায় কিংসের চেয়ে ১২ পয়েন্ট পেছনে এখন ক্রুসিয়ানের দল। শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখার শেষ সুযোগ হাতছাড়া হওয়ায় ২৫ পয়েন্ট নিয়ে আবাহনীর চোখ এখন রানার্সআপে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।