ডাবল সুপার ওভারের ঘটনাবহুল ম্যাচে আফগানিস্তানকে হারালো ভারত। এতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে আফগানদের হোয়াইট ওয়াশ করলো রোহিত শর্মার দল। অবশ্য শুরুর কঠিন পরিস্থিতিটা ধীরেসুস্থে সামাল দিয়ে এগোতে থাকেন রোহিত-রিঙ্কু। তাদের কার্যকরী ব্যাটিংয়ে কিছুটা চাঙা হয়ে ওঠে ভারতের ইনিংস। সময় বুঝে আক্রমণের ধার বাড়িয়েছেন রোহিত এবং রিঙ্কু, বেড়েছে রানের গতিও। ফিফটি হাঁকিয়ে ছুটতে থাকেন রোহিত।
রিঙ্কুও সমান তালে এগিয়েছেন। মারকুটে ব্যাটিংয়ে আফগান বোলারদের শাসন করে রান তুলতে থাকেন দুজন। তবে ১৫ ওভার পর্যন্তও অবশ্য টের পাওয়া যায়নি শেষ দিকে আসলে কী ঘটতে চলেছে। ১৫ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ভারত তোলে ১০৯ রান। ফিফটি হাঁকানো রোহিত তখন ৪৭ বলে ৫৫ রান করে ক্রিজে। অন্যদিকে ২৯ বলে ৩৫ রান করে টিকে ছিলেন রিঙ্কু।
পরের ৫ ওভারে যেন দোর্দন্ড প্রতাপে এক ঝড় বয়ে গেল চিন্নাস্বামীতে। যেখানে নায়ক রোহিত, পার্শ্বনায়ক রিঙ্কু। দুজনের অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে শেষের ৫ ওভারে ভারত তুলেছে ১০৩ রান, উইকেট হারায়নি একটিও। চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে যেন পুরো স্টেডিয়ামকে উত্তপ্ত করে ফেলেছিলেন রোহিত এবং রিঙ্কু। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে রেকর্ড গড়ে নিজের ৫ম সেঞ্চুরি হাঁকান রোহিত। রিঙ্কু পান ফিফটির দেখা। নির্ধারিত ২০ ওভারের খেলা শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ২১২ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় ভারত।
৫ম উইকেট জুটিতে রোহিত এবং রিঙ্কু মিলে যোগ করেন ১৯০ রান, মাত্র ৯৩ বলে। ৬৯ বলে ১২১ রান করে অপরাজিত ছিলেন রোহিত। অন্যদিকে রিঙ্কু ৩৯ বলে ৬৯ রানের ইনিংস খেলে টিকে ছিলেন।
আফগানিস্তানের হয়ে ২০ রান খরচায় ৩ উইকেট শিকার করেন ফরিদ আহমেদ। এছাড়া ১ উইকেট নেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই।
ভারতের রানের পাহাড় দেখে অবশ্য ভড়কে যায়নি আফগানিস্তান। শুরু থেকে মারকুটে ব্যাটিংয়ে তারাও জবাব দেওয়ার চেষ্টা করেছে। ফিফটি হাঁকিয়েছেন দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ এবং ইবরাহিম জাদরান। উদ্বোধনী জুটি থেকে রান আসে ৯৩। ৩২ বলে ৫০ রান করে আউট হন গুরবাজ। অন্যদিকে দলের ১০৭ রানের মাথায় আউট হওয়ার আগে ৪১ বলে ৫০ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে যান ইবরাহিম।
এরপর ব্যাট হাতে ঝড় তুলেছিলেন মোহাম্মদ নবি। তবে ১৬ বলে ৩৪ রানের ক্যামিও খেলেই থামতে হয়েছে তাকে। শেষ দিকে লড়াই চালিয়ে গেছেন গুলবাদিন নাইব। সবাই হতাশ করলেও হতাশ করেননি নাইব। একা হাতে চালিয়ে গেছেন লড়াই। শেষ পর্যন্ত ঝড় চালু রেখে ম্যাচ জেতার খুব কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন দলকে। শেষ দিকে দারুণভাবে জমে ওঠে ম্যাচ। শেষ ওভারে জয়ের জন্য আফগানিস্তানের দরকার ছিল ১৯ রান। তারা নিতে পারে ১৮ রান, অর্থাৎ ২০ ওভার শেষে ঠিক ২১২ রানের মাথাতেই থামে আফগানিস্তান। সুপার ওভার! বীরত্বমাখা ব্যাটিংয়ে ২৩ বলে ৫৫ রানের বিস্ফোরক এক ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিলেন নাইব।
ভারতের হয়ে ৩ উইকেট শিকার করেন ওয়াশিংটন সুন্দর। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন আবেশ খান এবং কুলদীপ যাদব।
সুপার ওভারে আগে ব্যাট করে আফগানিস্তান তোলে ১৬ রান, উইকেট হারায় ১টি। ছক্কা হাঁকান নবি, চার মারেন গুরবাজ। সেই রান তাড়া করতে নেমে ভারতের হয়ে ২টি ছক্কা হাঁকান রোহিত। পরে সিঙ্গেল নিলে স্ট্রাইকে যান জাইসওয়াল। ১ বলে দরকার ছিল ২ রান। তবে জাইসওয়াল নিতে পারেন ১ রান। মানে আবারও টাই, আবারও সুপার ওভার!
দ্বিতীয় সুপার ওভারে আগে ব্যাট করে ভারত। এবার অবশ্য সুবিধা করতে পারেনি তারা। চার আর ছয় মেরে রোহিত প্রথম দুই বলে ১০ রান নিলেও রান হয়েছে মোটে ১১। ৪র্থ আর ৫ম বলে দুই উইকেট হারিয়ে ১১ রানই তুলতে পারে ভারত।
নাটকীয়তা আরও বাকি ছিল। আফগানিস্তানের ব্যাটিংয়ের সময় বোলিংয়ে আসেন রবি বিষ্ণই। তিন বলের মধ্যে ১ রান তোলে আফগানরা, বিষ্ণই তুলে নেন ২ উইকেট। শেষ, বিজয়ী ভারত! দুইবার সুপার ওভারের পর অসাধারণ এক জয় পায় ভারত।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।