ব্রাজিলকে একমাত্র গোলে পরাজিত করে ২৮ বছর পর কোপা আমেরিকা শিরোপা জিতেছে আর্জেন্টিনা। ক্যারিয়ারে যে জিনিসটি এতদিন পাননি লিওনেল মেসি, সেই আন্তর্জাতিক ট্রফিটিও এবার তাঁর ক্যাবিনেটে ঢুকে পড়ল। কিন্তু কোপা ফাইনালে নামার আগেই নিজের শহরে বিরল সম্মান পেয়েছিলেন মেসি। অর্থাৎ, তাঁর ছোটবেলার শহর রোজারিও যেন জানত, এবারে আর ভুল করবে না ঘরের ছেলে।
রিও ডি জেনিরোর মারাকানা স্টেডিয়ামে সেলেসাওদের পরাজিত করে দেশে ফেরে আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা। সেখান থেকে নিজের বিমানে করে জন্মশহর রোজারিও'র বিমানবন্দরে দুপুর ১ টার পরে পৌছান মেসিরা। সঙ্গে ছিলেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া এবং জিওভান্নি লো সেলসো। পরে তারা বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা দেন।
এর আগে দলের কাছ থেকে চলে আসার সময় আর্জেন্টিনার অধিনায়কে শুভেচ্ছা জানান প্রচুর দর্শণার্থী। তিনি দিয়ে একটি সাদা গাড়িতে এটি করেছিলেন। একই সাথে স্কোয়াডের অন্যান্য সদস্যরা লাউটারো মার্তানেজ এবং নিকোলিস গঞ্জালেজ সহ একটি কাফেলার উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছিলেন।
মেসি এখন খুব পরিশ্রান্ত। বিশ্রাম থাকবেন কিছুদিন। তারপরে তিনি বার্সেলোনার সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করতে স্পেনে ফিরে যাবেন। ক্লাবটির সঙ্গে তার চুক্তির মেয়াদ ৩০ জুন শেষ হয়। আপাতত, তিনি নিজ শহর রোজারিওতে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে কাটাবেন।
রবিবার ভোরে অনুষ্ঠিত হয় কোপা আমেরিকা ফাইনাল। ঘরের মাঠে প্রত্যেকবারই কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ব্রাজিল। কখনওই হারেনি। অন্যদিকে, এর আগে ফাইনালে উঠলেও শেষ হাসি হাসতে পারেনি আর্জেন্টিনা। ফলে আশঙ্কা ছিলই। কিন্তু মেসির ছোটবেলার শহর যেন জানত, এবারে তাঁদের ‘নায়ক’ পারবেন স্বপ্নকে সত্যি করে তুলতে। আর তাই ম্যাচের আগের দিন শহরের ন্যাশনাল ফ্ল্যাগ মেমোরিয়ালে মেসির জন্য ৭০ মিটার লম্বা লেজার প্রজেকশন ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল। শেষপর্যন্ত জন্মভিটের মান রেখেছেন এলএম টেন। রূপকথার জন্ম দিলেন তিনি। ফলে আর্জেন্টিনা এখন শুধুই মেসিময়।
এর আগেও কোপা আমেরিকার ফাইনালে উঠেছিলেন মেসি। ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে। কিন্তু দু’বারই চিলির কাছে হারতে হয় আর্জেন্টাইনদের। এমনকী অবসর নেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন মেসি। যদিও পরে ফিরে আসেন। এর আগে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে এই মারাকানাতেই জার্মানির বিরুদ্ধে অতিরিক্ত সময়ে গোল হজম করে কাপ হারাতে হয়েছিল নীল-সাদা জার্সিধারীদের। তবে এদিন যেন সব সমালোচনার জবাব দেন তিনি। কাপ নিয়ে দেশে ফিরে পান রাজকীয় সংবর্ধনা।