স্বাগতিক ব্রাজিলকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকা কাপ ফুটবলের শিরোপা জিতলো আর্জেন্টিনা। রিও ডি জেনিরোর মারাকানায় ব্রাজিলকে হারিয়ে এই নিয়ে ১৫ বার কোপা আমেরিকা জিতল আর্জেন্টিনা। নিজের প্রথম কোপা আমেরিকা ফাইনালে হতাশ হতে হল নেইমারকে। ২২ মিনিটে আনহেল দি মারিয়ার গোলে এই প্রথম দেশের হয়ে কোনও কাপ জিতলেন লিওনেল মেসি। এতে দীর্ঘ ২৮ বছর পর বড় কোনো আসরে চ্যাম্পিয়ন হলো আলবিসেলেস্তরা।
এতে ১৯৯৩ সালের পর কোপা আমেরিকায় চ্যাম্পিয়ন হল আর্জেন্টিনা। এর আগে চারটি ফাইনাল খেললেও একবারও ট্রফি জিততে পারেনি নীল-সাদা জার্সিধারীরা। দুবার ব্রাজিল ও দুবার চিলির কাছে হারতে হয়েছিল। কোপা আমেরিকা খেতাব জয়ের ২৮ বছরের প্রতিপক্ষের অবসান হলো তাদের। আয়োজক দেশ হিসেবে এই প্রথম কোপা আমেরিকায় পরাজয়ের স্বাদ পেলো ব্রাজিল।
রিও ডি জেনিরোর মারাকানা স্টেডিয়ামে কোপা আমেরিকা ফাইনালে প্রথমার্ধে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে একমাত্র গোলটি করেন ডি মারিয়া। ২০০৪ সালের কোপা আমেরিকা ফাইনালে সিজার দেলগাডোর পর প্রথম আর্জেন্টাইন ফুটবলার হিসেবে গোল করলেন আনহেল দি মারিয়ার। ম্যাচের ২২ মিনিটে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন আর্জেন্টিনার এই নির্ভরযোগ্য ফুটবলার। রডরিগো ডি পলের বাড়ানো পাস আটকাতে ব্যর্থ হন ব্রাজিলের রেনান লোডি। পা বাড়িয়েছিলেন তিনি, কিন্তু বলে পৌঁছতে পারেননি।
সেই বল পেয়ে যান ডি মারিয়া। একাই এগিয়ে যেতে থাকেন বল নিয়ে। তাঁর গতির সঙ্গে পেরে ওঠেনি কেউ। গোলের সামনে পৌঁছে ব্রাজিলের গোলরক্ষক এডেরসন মোরায়েজের মাথার ওপর দিয়ে বল পাঠিয়ে দেন জালে। দেশের হয়ে তিনি শেষ গোল করেছিলেন ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে। সেই ম্যাচে ফ্রান্সের কাছে ৩-৪ গোলে হেরে রাউন্ড অব সিক্সটিন থেকে বিদায় নিয়েছিল আর্জেন্টিনা। যদিও ট্রফি এলো ডি মারিয়ার গোলেই।
খেলা শুরুর ৩ মিনিটের মধ্যে হলুদ কার্ড পান ব্রাজিলের ফ্রেড। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই তাঁকে তুলে নেন তিতে। ফ্রেডের বদলে মাঠে নামেন রবের্তো ফিরমিনো। তবে একে অপরের জামা ধরা, পা চালানো, ইচ্ছাকৃত আটকে রাখা চলতেই থাকে দুই দলের মধ্যে। হলুদ কার্ড দেখেন আর্জেন্টিনার লিয়েন্ড্রো প্যারাদেসও।
গোল শোধে মরিয়া ব্রাজিল ৫২ মিনিটে গোল পেয়েই গিয়েছিল। রিচার্লিসনের শট জালে জড়িয়ে যায়। তবে অফ সাইডের কারণে তা বাতিল হয়। ২ মিনিট পর আবারও আক্রমণে ব্রাজিল। এবারও সুযোগ পান রিচার্লিসন। তাঁর জোরালো শট দারুণ দক্ষতায় বাঁচিয়ে দেন প্রতিযোগিতার সেরা গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। বার বার আক্রমণে উঠতে থাকে ব্রাজিল। চাপ বাড়তে থাকে আর্জেন্টিনার রক্ষণে। পেনাল্টির আশার বক্সের মধ্যে একবার পড়ে যান নেইমার। তবে পেনাল্টি দেননি রেফারি।
তবে পাল্টা আক্রমণে গোলের সুযোগ তৈরি করছিল আর্জেন্টিনাও। কিন্তু নেইমাররা মরিয়া লড়াই চালিয়েও শেষরক্ষা করতে পারেননি। ২০০৪ ও ২০০৭ সালে ব্রাজিলের কাছে কোপা আমেরিকা ফাইনালে পরাজয়ের মধুর প্রতিশোধ লিওনেল মেসিরা নিলেন মারাকানায়। তারও আবার শিরোপা ছিনিয়ে নিলেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের কাছ থেকেই।
শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলের জয়েই চ্যাম্পিয়ন হয় লিওনেল স্কোলানির দল।