আইপিএলে দ্বিতীয় সর্বাধিক রান তাড়া করে জয় পেল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। কাইরন পোলার্ডের ‘অতিমানবিক’ ৩৪ বলে ৮৭ রানের ইনিংসে চেন্নাই সুপার কিংসকে ৪ উইকেটে হারায় মুম্বাই। দেশজুড়ে অতিমারীর ভয়ানক আবহেও এমন ইনিংস ক্রীড়া অনুরাগীদের বিনোদিত করবে সন্দেহ নেই। তাই হাহাকার-আর্তনাদের মাঝে পোলার্ডের ম্যাচ জেতানো ইনিংস যেন এক চিলতে মুক্ত বাতাস।
চেন্নাই সুপার কিংসের দেয়া পাহাড়প্রমাণ ২১৮ রান তাড়া করে জয় তুলে নিয়ে নিজেদের সামর্থের প্রমানও দিল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। গত আইপিএলে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাঞ্জাবের দেয়া ২২৪ রানের তাড়া করেছিল রাজস্থান রয়্যালস। যা আইপিএলের ইতিহাসে সর্বাধিক রান তাড়া করে জয়। এদিন মুম্বাইয়ের রান তাড়া করে এই জয় স্থান করে নিল ঠিক তার পরেই।
টস জিতে চেন্নাই সুপার কিংসকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান মুম্বাই অধিনায়ক রোহিত শর্মা। কিন্তু চেন্নাই ব্যাটসম্যানদের প্রবল পরাক্রমী ব্যাটিং কোনওভাবেই রোহিতের সেই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দেয়নি। ওপেনার রুতুরাজ প্রথম ওভারে ফিরলেও বাকি সময়টা রোহিতের দলের বোলারদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করেন ফ্যাফ ডু’প্লেসিস, মইন আলি, আম্বাতি রায়ডুরা। একটি উইকেট নিলেও ৪ ওভারে মুম্বাইয়ের স্ট্রাইক বোলার বুমরাহ খরচ করেন ৫৬ রান।
ডু’প্লেসিস ২৮ বলে ৫০, মইন ৩৬ বলে ৫৮, রাইডু ২৭ বলে ৭২। মূলত এই তিন ব্যাটসম্যানের বিস্ফোরক ব্যাটিং’য়ে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২১৮ তোলে সিএসকে। কিন্তু প্রত্যাঘাতটা যে এভাবে আসবে ঘুণাক্ষরেও টের পাননি মহেন্দ্র সিং ধোনিরা। পাহাড়প্রমাণ রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা যেমন করা দরকার তেমনই করেন রোহিত এবং ডি’কক। ওপেনিং জুটিতে ৪৬ বলে ওঠে ৭১ রান। কিন্তু দুই ওপেনারের কারও ইনিংস লম্বা হয়নি।
২৮ বলে ৩৮ করেন কক। ২৪ বলে ৩৫ করে আউট হন অধিনায়ক রোহিত। ১০ রানের মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে মুম্বাই। চতুর্থ উইকেটে হাল ধরেন ক্রুনাল পান্ডিয়া এবং কাইরন পোলার্ড। পান্ডিয়া সেই অর্থে বিস্ফোরক না হলেও রণমূর্তি ধারণ করেন পোলার্ড। এনগিদি-শার্দুলরা খড়কুটোর মত উড়ে যান ক্যারিবিয়ানের ব্যাটিং বিক্রমের সামনে। রাইডুর ২০ বলের পালটা ১৭ বলে হাফসেঞ্চুরি করেন পোলার্ড।
চতুর্থ উইকেটে ক্রুনাল-পোলার্ডের ৪১ বলে ৮৯ রানে জুটিতেই জয়ের স্বপ্ন দেখা শুরু মুম্বাইয়ের। ক্রুনাল ২৩ বলে ৩২ রান করে আউট হলে পোলার্ডকে সঙ্গ দিতে আসেন ভাই হার্দিক। কিন্তু জোড়া ছক্কায় ৭ বলে ১৬ রান করে আউট হন হার্দিক। ১৯ তম ওভারে জোড়া উইকেট খোয়ানোয় কাজ কঠিন হয়ে যায় মুম্বাইয়ের। শেষ ওভারে তাদের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। ক্রিজে অন-স্ট্রাইক ছিলেন পোলার্ড।
এনগিদির প্রথম বল মিড-উইকেটে পাঠিয়েও রান নেননি তিনি। দ্বিতীয় এবং চতুর্থ বলে বাউন্ডারি হাঁকান পোলার্ড। সমীকরণ দাঁড়ায় ৩ বলে ৮। চতুর্থ বলে আবার রান নেওয়া থেকে বিরত থাকেন ক্যারিবিয়ান। এরপর পঞ্চম বলে ছক্কা এবং শেষ বলে প্রয়োজনীয় ২ রান সংগ্রহ করে রোহিতের দলকে স্মরণীয় জয় উপহার দেন পোলার্ড।
ক্যারিবিয়ানের ৩৪ বলে অপরাজিত ৮৭ রানের ইনিংস সাজানো ছিল ৬টি চার এবং ৮টি ছয়ে। এনগিদি খরচ করেন ৪ ওভারে ৬২। শার্দুল ৪ ওভারে দেন ৫৬ রান।