স্প্যানিশ জায়ান্ট বার্সেলোনাকে রেকর্ড ৮-২ গোলে পরাজিত করে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি ফাইনালে উঠেছে বায়ার্ন মিউনিখ। খেলার আগে জেতার আশা করলেও এতোটা বড় ব্যবধানে জয় নিশ্চয়ই প্রত্যাশায় ছিলোনা বাভারিয়ানদের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটাই হয়েছে। আর এই বড় জয়ে সেমিফাইনালে উঠে গেল বায়ার্ন। ফাইনালের টিকিট পেতে এখন তাদেরকে লড়তে হবে ম্যানচেস্টার সিটি ও অলিম্পিক লিঁওয়ের মধ্যকার বিজয়ীর সঙ্গে।
বায়ার্ন মিউনিখের ফুটবলশৈলির সামনে যেনো খেলতেই ভুলে গিয়েছিল বার্সেলোনা। হারিয়েছিল তাদের লড়াই করার মানসিকতা, ভুলেছিলো খেলার কৌশল, হারিয়েছিলো চিন্তা-প্রাণশক্তিও।
খেলার ৩ মিনিটেই গোলের খাতা খোলে বায়ার্ন। ইভান পেরিসিকের কাছ থেকে বল পেয়ে দলকে এগিয়ে দেন টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি ১১৩টি ম্যাচ খেলতে নামা থমাস মুলার। মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগানকে প্রতিরোধের কোনো সুযোগই দেননি এই জার্মান মিডফিল্ডার।
তবে তারা বেশিক্ষণ লিড ধরে রাখতে পারেনি। খেলার ৭ মিনিটে ডেভিড আলবার আত্মঘাতি গোলে ম্যাচে সমতা ফেরায় বার্সেলোনা। ফ্রাঙ্ক ডি জং, প্রতিপক্ষের বিপদ সীমায় লুইস সুয়ারেজকে উদ্দেশ্য করে বল পাস দেন। কিন্তু তার আগেই ডেভিড আলবার পায়ে লেগে জালে জড়ায়।
লিওনেল মেসির একটি আক্রমণ ম্যানুয়েল ন্যুয়ার ঠেকানোর পরের মিনিটেই ক্রেয়েশিয়ার ইভান পেরিসিক ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে দেন বায়ার্ন মিউনিখকে।
২৭ মিনিটে গোরেতজকার কাছ থেকে বল পেয়ে সার্জি গেনব্রি, মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগানকে বোকা বানান। ৩-১ গোলে এগিয়ে যায় বাভারিয়ানরা। বার্সার রক্ষণভাগ নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করে বায়ার্ন ফরোয়ার্ডরা।
৩১ মিনিটে জশুয়া কিমিচের কাছ থেকে পোস্টের কাছে পাওয়া বলে শুধুমাত্র পা ছোঁয়ানো ছাড়া কিছু করার ছিলনা থমাস মুলারের। তাতে হতাশা বাড়ে কাতালানদের। ৪-১ এ লিড পায় জার্মান চ্যাম্পিয়নরা।
এতে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে দ্রুততম সময়ে নকআউট পর্বে চার গোল খাওয়ার রেকর্ড গড়লেন মেসি-সুয়ারেজরা। তাছাড়া ২০১৫ সালের পর বার্সেলোনা প্রথম দল হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বের ম্যাচের প্রথমার্ধে চার গোল হজম করলো।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করে বার্সেলোনা। ৫৭ মিনিটে জর্ডি আলবার ক্রসে ব্যবধান ৪-২ এ নামিয়ে আনেন উরুগুয়ের স্ট্রাইকার লুইস সুয়ারেজ। বার্সাকে ম্যাচে ফেরার সাহস জোগায় এই গোল।
কিন্তু জয়ের নেশায় থাকা বায়ার্ন, কাতালান শিবিরে আবারও হতাশার শীতল স্রোত বইয়ে দেয়। ৬৩ মিনিটে টিনেজ খেলোয়াড় আলফানসো ডেভিডসের কাছ থেকে বল পেয়ে দলকে ৫-২ গোলে এগিয়ে দেন জশুয়া কিমিচ। ১৯৭৬ সালের মার্চে উয়েফা কাপের ম্যাচে লেভস্কি সোফিয়ার কাছে ৫-৪ গোলে পরাজয়ের পর আবারও পাঁচ গোলের প্যাচে পড়লো বার্সা।
কাতালান খেলোয়াড়রা যেনো বায়ার্ন মিউনিখের আক্রমণ প্রতিরোধ করতেই ভুলে যায়। ৮২ মিনিটে গোলের খাতা খোলেন রবার্ট লিওনডস্কি। চলতি টুর্নামেন্টে এটি তার ১৪তম গোল।
এরপর বদলি হিসেবে মাঠে নেমে ৮৫ ও ৮৯ মিনিটে আরও দুই করে কাতালানদের ৮-২ গোলের লজ্জায় ডোবান বার্সেলোনা থেকে ধারে বায়ার্নে খেলতে আসা কুতিনহো।