গোলাপি বলের ঐতিহাসিক টেস্টের দ্বিতীয়দিন শেষেই জয়ের সুবাস পাচ্ছে বিরাট কোহলির ভারত। আর ইনিংস পরাজয় এড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
মূলত বিরাটের ব্যাটেই প্রত্যাশামতো ঐতিহাসিক দিন-রাতের টেস্ট জয়ের সন্ধিক্ষণে এখন ভারতীয় দল। প্রথম ইনিংসে পাঁচ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও গোলাপি বল হাতে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেন ইশান্ত শর্মা। তবে প্রাথমিক ধাক্কা সামলে দ্বিতীয় ইনিংসে চওড়া হয়ে উঠল মুশফিকুর রহিমের ব্যাট। আর তাতেই তৃতীয়দিন গড়ায় ইডেনে ঐতিহাসিক দিন-রাতের টেস্ট।
দ্বিতীয়দিনের শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ১৫২। ইনিংস হার এড়াতে বাংলাদেশকে আরও ৮৯ রান করতে হবে। অর্থাৎ ইনিংস হার এড়ালেও মিরাকল ছাড়া বাংলাদেশের ম্যাচ বাঁচানোর কোনও সম্ভাবনা নেই।
এর আগে ইডেনে ঐতিহাসিক টেস্টের দ্বিতীয়দিন ২৪১ রানে এগিয়ে থেকে প্রথম ইনিংসে ঘোষণা করে ভারত। পিঙ্ক বলে দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে অধিনায়ক বিরাট কোহলির শতরানই দ্বিতীয়দিন ভারতের প্রথম ইনিংসের মূল আলোচ্য বিষয়। তিন উইকেটে ১৭৪ রানে শনিবার খেলা শুরু করে ভারত। চতুর্থ উইকেটে কোহলি ও রাহানে ৯৯ রান যোগ করে ভারতীয় ইনিংসে বড় রানে পৌঁছে দেন। কিন্তু হাফ-সেঞ্চুরি করার পরই প্যাভিলিয়নের রাস্তা ধরেন রাহানে৷। ৫১ রানে তাইজুল ইসলামের শিকার হন তিনি৷ তাঁর ডেপুটি টেস্ট কেরিয়ারে ২৭তম হাফ-সেঞ্চুরি করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরলেও বিরাট তাঁর টেস্ট কেরিয়ারে ২৭তম সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যান।
শেষ পর্যন্ত সেঞ্চুরি পূর্ণ করে ইতিহাস গড়েন ক্যাপ্টেন কোহলি। ইন্দোরে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম টেস্টে শূন্য রানে প্যাভিলিয়নে ফিরলেও ইডেনে অবিচল ছিলেন বিরাট। বাংলাদেশি বোলারদের বিরুদ্ধে অবলীলায় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। শেষ পর্যন্ত ব্যক্তিগত ১৩৬ রানে আউট হন তিনি। প্রথম ভারতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ডে-নাইট টেস্টে সেঞ্চুরির পাশাপাশি ভারতীয় ক্যাপ্টেন হিসেবে ২০ নম্বর টেস্ট সেঞ্চুরি করেন কোহলি। ক্যাপ্টেন হিসেবে সর্বাধিক ৪১টি আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরির মালিক হলেন কোহলি।
বিরাট আউট হওয়ার পর দ্রুত তিন উইকেট হারায় ভারত৷ কিন্তু শেষ উইকেটে ঋদ্ধিমান সাহা ও মোহাম্মদ সামি ১৯ রান যোগ করার পর ড্রেসিংরুম থেকে বেরিয়ে ব্যাটসম্যানদের ডেকে নেন কোহলি। ব্যক্তিগত ১৭ রানে অপরাজিত থাকেন ঋদ্ধিমান আর ১০ রানে ক্রিজে ছিলেন সামি। বাংলাদেশের হয়ে এবাদত হোসেন ও আল-আমিন হোসেন দু’জনেই তিনটি করে উইকেট তুলে নেন। এছাড়াও আবু জায়েদ দু’টি এবং তাইজুল ইসলাম একটি উইকেট নেন।
এরপর দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই ফের ইশান্তের ধাক্কায় ১৩ রানে ৪ উইকেট খুঁইয়ে বসে বাংলাদেশ। পঞ্চম উইকেটে অভিজ্ঞ মুশফিকুর ও মাহমুদুল্লাহর ৬৯ রানের জুটিতে কিছুটা অক্সিজেন পায় বাংলাদেশ। যদিও রান নিতে গিয়ে মাহমুদুল্লাহর হ্যামস্ট্রিং ইনজুরির কারণে ফের ছন্দ হারায় বাংলাদেশ। ব্যক্তিগত ৩৯ রানে আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। এরপর মেহেদি হাসানকে নিয়ে একাই লড়াই চালান মুশফিকুর রহিম। অর্ধশতরান পূর্ণ করে ইনিংস হারের লজ্জা থেকে দলকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু জুটিতে ৫১ রান যোগ করে ব্যক্তিগত ১৫ রানে আউট হন মেহেদি। বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি তাইজুলের ইনিংসও (১১)।
দিনের শেষে ৬ উইকেটে ১৫২ রানে খেলা শেষ করে বাংলাদেশ। ৭০ বলে ৫৯ রানে অপরাজিত মুশফিকুর। তৃতীয়দিন মুশফিকুরের ব্যাটে ভর করে ইনিংস হারের লজ্জা এড়াতে পারবে হয়তো বাংলাদেশ।