বাংলাদেশ ক্রিকেটের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকে ২ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল(আইসিসি)। এই ইমেইল বার্তায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায়, সাকিবের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়ে আইসিসি।
দু’ বছরের মধ্যে এক বছর ‘স্থগিত নিষেধাজ্ঞা’। অর্থাৎ সাকিব ক্রিকেট থেকে পুরোপুরি বাইরে থাকবেন এক বছর। আইসিসি জানায়, নিষেধাজ্ঞার সময়ে সাকিব যদি শাস্তির নিয়ম ঠিকঠাক মেনে চলেন, তা হলে ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর আবারও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন। যেহেতু সাকিব আইসিসি’র আনা সব অভিযোগই মেনে নিয়েছেন, তাই শাস্তির মেয়াদ দুই বছর হলেও এক বছর কমানো হয়েছ।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট জুয়াড়িদের কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েও বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার তা গোপন করেন। এই কারণেই তাঁকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে আইসিসি সাকিবের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ এনেছিল। সে গুলি হল—
১) ২০১৮ সালে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজ ও ২০১৮ সালে আইপিএলের সময়ে জুয়াড়িদের কাছ থেকে পাওয়া প্রস্তাবের কথা আইসিসির দুর্নীতি দমন বিভাগকে জানান নি সাকিব।
২) ২০১৮ সালের ত্রিদেশীয় সিরিজ চলাকালে সাকিবের সঙ্গে বুকিরা দ্বিতীয়বার যোগাযোগ করে। সাকিব সেটিও আইসিসি’র দুর্নীতি দমন ইউনিটকে জানাননি।
৩) ২০১৮ সালের ২৬ এপ্রিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ-কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব ম্যাচের আগে সাকিবকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন বুকিরা। সেটিও জানাননি বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফ, আম্পায়ার, স্কোরার যদি বুকিদের কাছ থেকে কোনও প্রস্তাব পান, তা হলে আইসিসি বা সংশ্নিষ্ট দেশের ক্রিকেট বোর্ডের দুর্নীতি দমন কর্তাদের জানানো বাধ্যতামূলক। কিন্তু প্রস্তাব পাওয়ার পরে সাকিব পুরো ব্যাপারটাই গোপন করে গিয়েছিলেন। এর জন্য যে তাঁর উপরে নির্বাসনের খাঁড়া নেমে আসতে চলেছে, তা জানাই ছিল। ১৮ মাসের জন্য নির্বাসিত হতে পারেন বাংলাদেশের সেরা অলরাউন্ডার, এরকম খবরই ছড়িয়ে পড়েছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটাঙ্গণে। তবে সন্ধ্যায় আইসিসি জানিয়ে দেয়, ১৮ মাস নয়- ২ বছরের জন্য নির্বাসিত সাকিব। তবে এক বছর পরেই মাঠে ফিরতে পারবেন তিনি।
এদিকে, আইসিসির শাস্তি ঘোষণার পরে সাকিব সব দোষ স্বীকার করে বলেন, ‘যে খেলাটা আমি ভালবাসি, সেই খেলা থেকে নির্বাসিত হওয়ায় আমি সত্যিই দুঃখিত। আমাকে যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, তা আমি গোপন করেছিলাম। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা ক্রিকেটার ও অন্যান্য সমর্থকদের মতোই আমিও চাই ক্রিকেট সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত একটা খেলা হোক। আইসিসির দুর্নীতি দমন শাখার সঙ্গে আমি কাজ করতে চাই। আমি যে ভুল করেছি, উঠতি ক্রিকেটাররা যাতে আমার মতো ভুল না করে, সেই দিকে আমি নজর দেব।’