১৮৭৭ সালের ১৫ মার্চ ইতিহাসের প্রথম টেস্ট ম্যাচটায় মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড। এই অভিজাত সংস্করণে প্রথম শততম টেস্ট খেলা ক্রিকেটারকে পেতে অপেক্ষা করতে হয়েছে প্রায় এক শতাব্দী। আর দ্বিতীয়জনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে আরও ১৮ বছর। তবে, ধীরে ধীরে ম্যাচ সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই সংখ্যা বেড়েছে দ্রুতগতিতে। ১২টি টেস্ট খেলুড়ে দলের আটটিরই আছে কেউ না কেউ টেস্ট ম্যাচের সংখ্যার সেঞ্চুরি করেছেন। নবম দল হিসেবে এবার সেই তালিকায় নাম লেখাতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
টেস্ট ক্রিকেটের প্রায় দেড়শ বছরের ইতিহাসে ১০০ বা তার বেশি টেস্ট খেলেছেন মাত্র ৮৩জন ক্রিকেটার। ১৯৬৮ সালে প্রথম ক্রিকেটার হিসেব টেস্ট ম্যাচ খেলার সেঞ্চুরি করেন কলিন কাউড্রে। ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে জন্ম নেয়া এই কিংবদন্তি ক্রিকেট খেলেছেন ইংল্যান্ডের হয়ে। ১৯৬৮ সালে শততম টেস্ট খেলে ইতিহাস গড়েন কাউড্রে। ১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে অবসর নেয়ার আগে ১১৪ টেস্টে ২২ সেঞ্চুরিতে সাড়ে সাত হাজারের রান করেছেন এই ইংলিশ কিংবদন্তি।
১০০ টেস্ট খেলার তালিকায় শেষ নামটা অস্ট্রেলিয়ার মিচেল স্টার্কের। চলতি বছরের জুলাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে লাল বলে ম্যাচ খেলার সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন এই ফাস্ট বোলার।
আগামীকাল (১৯ নভেম্বর) এই এলিট তালিকায় ৮৪তম নামটা সংযোজন করা হতে পারে। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এই মাইলফলক ছুঁতে চলেছেন মুশফিক। মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টটি বাংলাদেশের এই কিংবদন্তির শততম টেস্ট।
২০০০ সালে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক বাংলাদেশের। এরপর শততম টেস্ট খেলা ক্রিকেটার পেতে বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হলো দীর্ঘ ২৫ বছর। আর মুশফিকের অপেক্ষা ২০ বছরের। ২০০৫ সালে ক্রিকেটের তীর্থ লর্ডসে টেস্ট অভিষেক হয় এই উইকেটকিপার-ব্যাটারের। তার অনেক পরে ক্যারিয়ার শুরু করা মিচেল স্টার্ক, স্টিভ স্মিথ, জো রুট, বিরাট কোহলি, বেন স্টোকসরা এই তালিকায় আগেই নাম লিখিয়ে ফেলেছেন। বাংলাদেশের ভাগ্যে কম টেস্ট ম্যাচ পড়ায় মাইলফলক ছুঁতে এতোদিন অপেক্ষা করতে হলো তাকে।
মুশফিকের শততম টেস্টের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ হবে নবম টেস্ট খেলুড়ে জাতি, যার অন্তত একজন ক্রিকেটার ১০০ টেস্ট খেলেছে। এই তালিকায় নেই বাংলাদেশের আগে টেস্ট শুরু করা জিম্বাবুয়ে ও দুই নবীন টেস্ট খেলুড়ে দল আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের নাম।
চলুন দেখে নেয়া যাক বাদবাকি আট দলের হয়ে প্রথম কারা টেস্ট খেলার সেঞ্চুরি করেছিলেন।
ইংল্যান্ড: আগেই বলেছি ইংল্যান্ড তো বটে ইতিহাসেরই প্রথম ১০০ টেস্ট খেলা ক্রিকেটার কলিন কাউড্রে। দ্ এরপর আরও ১৬জন ইংলিশ ক্রিকেটার এই তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। ইংল্যান্ডেরি সর্বাধিক ক্রিকেটার এই মাইলফলক ছুঁয়েছে। সবশেষ এই তালিকায় নাম লিখিয়েছেন জনি বেয়ারস্টো।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: দ্বিতীয় দেশ হিসেবে শততম টেস্ট খেলা খেলোয়াড় পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১৯৮৪ সালে ক্লাইভ লয়েড এই তালিকায় নাম তোলেন। সব মিলিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১০ জন ক্রিকেটারের শতাধিক টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা আছে।
অস্ট্রেলিয়া: ইংল্যান্ডের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬ জন ক্রিকেটার ১০০ বা তার বেশি টেস্ট খেলেছে অস্ট্রেলিয়ার। ১৯৮৮ সালে অ্যালান বোর্ডার প্রথম অজি ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলেন।
ভারত: ১৯৮৪ সালে সুনীল গাভাস্কার এই এলিট তালিকায় নাম লেখান। ভারতের মোট ১৪ জন ক্রিকেটার ১০০ বা তার বেশি টেস্ট খেলেছেন, যা তৃতীয় সর্বোচ্চ।
পাকিস্তান: ১০০ টেস্ট খেলা ক্রিকেটার পেতে পাকিস্তানকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ১৯৯৮ সালে। সেলিম মালিক এই মাইলফলক ছোঁয়ার পর আরও ৪ জন তালিকায় নাম তুলেছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা: দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসনে থাকায় দক্ষিণ আফ্রিকার অনেক গ্রেট ক্রিকেটারের ক্যারিয়ার বিকশিত হতে পারেনি। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফেরার পর ২০০৪ সালে শততম টেস্ট খেলুড়ে ক্লাবে প্রথম প্রোটিয়া খেলোয়াড় হিসেবে নাম লেখানে গ্যারি কারস্টেন। দক্ষিণ আফ্রিকার মোট ৮ জন ক্রিকেটার ১০০ বা তার বেশি টেস্ট খেলেছেন।
শ্রীলঙ্কা: ২০০৫ সালে প্রথম লঙ্কান ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলার মাইলফলক স্পর্শ করেন সনাথ জয়াসুরিয়া। এরপর দেশটির আরও ছয়জনের এই অভিজ্ঞতা হয়েছে।
নিউজিল্যান্ড: বাংলাদেশের আগে সবশেষ দেশ হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলা ক্রিকেটার পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। ২০০৬ সালে স্টিফেন ফ্লেমিং এই তালিকায় নাম লেখান। এরপর এই তালিকায় নাম লিখিয়েছেন আরও পাঁচজন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।
