অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে নতুন নির্বাচিত কমিটি পেয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। নভেম্বরের ৩০ তারিখে নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি পাবে বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ)। এর আগে গত বছর ৩০ অক্টোবর হয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নির্বাচন।
বাফুফে, বিসিবি ও বিওএ’র নির্বাচন হয়ে থাকে আন্তর্জাতিক সংস্থার গাইডলাইন অনুযায়ী। বাকিদের হয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি) নির্দেশনায়। এবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ৪৯ টি ফেডারেশন/অ্যাসোসিয়েশনকে অনতিবিলম্বে নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছে; যেগুলো চলছে অ্যাডহক কমিটি দিয়ে। এনএসসির এই নির্দেশনার পর ক্রীড়াঙ্গন হয়ে উঠবে পুরোপুরি নির্বাচনমুখী।
৩০ অক্টোবর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনগুলোকে চিঠি দিয়ে নির্বাচন আয়োজনের নির্দেশনা দিয়েছে। নির্দিষ্ট করে সময় বেঁধে না দিলেও ‘অনতিবিলম্বে’ শব্দটি উল্লেখ করায় ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তাদের নড়েচড়ে বসতেই হবে। যদিও এনএসসির এই নির্বাচনের নির্দেশনা নিয়ে বিরুপ প্রতিক্রিয়া আছে ক্রীড়াঙ্গনে। কারণ, যখন অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়েছিল সেই প্রজ্ঞাপনে নির্বাচন নিয়ে কোনো নির্দেশনা ছিল না। হঠাৎ করে নির্বাচনের এই নির্দেশনা দায়িত্বরতদের মধ্যে বেজে উঠেছে বিদায়ের সুর।
আরেকটি জটিলতাও তৈরি হতে পারে। জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা চলছে অ্যাডহক কমিটি দিয়ে। সেখান থেকে কারা কাউন্সিলর হয়ে আসবেন ফেডারেশনগুলোতে? কোনো জেলা বা বিভাগে তো নির্বাচিত কমিটি নেই।
আবার এনএসসির ‘অনতিবিলম্বে’ নির্দেশনা মেনে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করলেও শেষ করতে লম্বা একটা সময় লাগবে। তাই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চিঠি পাওয়ার পর ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশন কর্মকর্তাদের অনেকে চমকে উঠেছেন। অ্যাডহক কমিটির প্রজ্ঞপনে নির্বাচন বিষয়ক কোনো নির্দেশনা না থাকায় সবাই ধরেই নিয়েছিলেন যতদিন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, ততদিনই দায়িত্বে তারা। নির্বাচন নিয়ে কী ভাবছেন? এমন প্রশ্ন করলে অনেক সাধারণ সম্পাদকই বলেছেন, ‘আমাদের তো নির্বাচন বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।’
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক ক্রীড়া মোহাম্মদ আমিনুল এহসান বলেছেন, ‘অনেক ফেডারেশন আছে যেগুলোর বয়স বছর হয়ে গেছে। তাই নির্বাচন হওয়া প্রয়োজন। অ্যাডহক কমিটির প্রজ্ঞাপনে নির্বাচনের বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি তার মানে নয় যে, এই কমিটিই লম্বা সময়ের জন্য থাকে। অ্যাডহক কমিটি মানেই তাদের নির্বাচনের দিকে এগুতে হবে। নির্বাচিত প্রতিনিধির কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে হবে। আমরা তো লম্বা সময়ের জন্য অ্যাডহক কমিটি রাখতে পারি না। তাছাড়া ফেডারেশনগুলোর সাথে আন্তর্জাতিক সংস্থারও বিষয় আছে। কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা আমাদের আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু হয়তো বলেনি। তবে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় প্রসঙ্গটা আসে। তাছাড়া এখানে রাষ্ট্রের একটা ভাবমূর্তিও কাজ করে।’
অনতিবিলম্বে নির্বাচন আয়োজনের কথা বলেছেন। কোনো সময় কি বেঁধে দিয়েছেন? ‘না। আমরা কোনো সময় বেঁধে দেইনি। কারণ, সব ফেডারেশনের প্রেক্ষাপট এক নয়। ফেডােরেশনগুলো সেভাবেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নেবে’-বলেছেন এনএসসির এই পরিচালক।
যারা অ্যাডহক কমিটিতে আছেন তারা কি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন? ‘এ নিয়ে কোনো বিধিনিষেধ নেই। আগের মতোই কেউ চাইলে অংশ নিতে পারবেন’-বলেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (ক্রীড়া)।
এদিকে বিওএর নির্বাচনের আগে সোমবার কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে সভায় বসছে বর্তমান নির্বাহী কমিটি। এ সভায় বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) কাউন্সিলর তালিকা চূড়ান্তসহ ৮টি এজেন্ডা নিয়ে বসছে এই সভা। হতে পারে ভোটের আগে এটাই বিওএর নির্বাহী কমিটির শেষ সভা। অন্য এজেন্ডাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-নির্বাচন কমিশন গঠন, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের কার্যক্রমের প্রতিবেদন অনুমোদন ও ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের নিরীক্ষক নিয়োগ।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।

