তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে বর্তমানে পাকিস্তানে সফররত বাংলাদেশ দল ইতোমধ্যে দুটি ম্যাচ হারিয়ে সিরিজ হাতছাড়া করেছে। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আজ রাতে অনুষ্ঠিত হবে নিয়মরক্ষার শেষ ম্যাচটি। তবে লিটন দাসের নেতৃত্বাধীন দলের সামনে এই ম্যাচ শুধুই আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং ধবলধোলাই এড়ানোর একটি বড় লড়াইও বটে।
সিরিজের শেষ ম্যাচের আগে এক ভিন্নধর্মী আয়োজনের সাক্ষী হয়েছে দুই দল। লাহোরের গভর্নর হাউসে আয়োজিত এক বিশেষ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান দলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের সংবর্ধনা জানানো হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি। ক্রিকেটের বাইরের এই সৌহার্দ্যপূর্ণ আয়োজনে উঠে আসে দুই দেশের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের সম্পর্কের নানা দিক।
পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট জারদারি বলেন, তাঁর দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে কেবল খেলাধুলা নয়, ব্যবসা-বাণিজ্য, সংস্কৃতি ও মানবিক সম্পর্কসহ সকল ক্ষেত্রে শক্তিশালী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়তে চায়। তিনি বলেন, “এটি এক রাতেই সম্ভব নয়। আমাদের বিনিয়োগ করে যেতে হবে এবং নতুন সমাধানের মাধ্যমে সম্পর্ককে আরও উঁচুতে নিয়ে যেতে হবে।”
বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রশংসা করে জারদারি বলেন, “অর্থনৈতিকভাবে এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে একটি সফল উদাহরণ। অর্থনীতি ও মানবসম্পদ—দুটিতেই আল্লাহ আপনাদের শক্তি দিয়েছেন।”
১৯৭১ সালের স্মৃতিচারণা করে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমাদের নতুন প্রজন্ম জানে না, আমরা কতটা বেদনার মধ্য দিয়ে গেছি। আমরা একে অন্যের হৃদয় ভেঙে দিয়েছিলাম। এখন সেই হৃদয়গুলো জোড়া লাগানোর সময় এসেছে।”
বাংলাদেশি জনগণের গৌরবময় ইতিহাসের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “বাঙালি জাতি এই অঞ্চলের অন্যতম প্রাচীন ও সমৃদ্ধ জাতি এবং তাদের গর্ব করার মতো একটি ইতিহাস আছে।”
ক্রিকেটকে ‘মানুষকে একত্র করে এমন একটি খেলা’ হিসেবে উল্লেখ করে জারদারি বলেন, “আমি খুশি যে আপনাদের সবাইকে পাকিস্তানে, লাহোরে স্বাগত জানাতে পারছি। আশা করি, ভবিষ্যতে এমন আরও অনেক সফর হবে।”
প্রেসিডেন্ট জারদারি জানান, তিনি নিজে পেটারো ক্যাডেট কলেজে পড়ার সময় কয়েকজন বাংলাদেশির সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলেছিলেন এবং এখনো তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন বাংলাদেশ সফরে না যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সফরে যাওয়ার ইচ্ছা আছে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাঞ্জাবের গভর্নর সর্দার সেলিম হায়দার খান, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান মহসিন নকভি, বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদীন ফাহিম, পিসিবি চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আমির মিরসহ দুই দেশের কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠান শেষে প্রেসিডেন্ট জারদারি দুই দলের সঙ্গে গ্রুপ ছবি তোলেন এবং সফররত বাংলাদেশ দলের কর্মকর্তাদের হাতে স্মারক উপহার দেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।