অস্ট্রেলিয়া আর ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও দেশের মাটিতে টেস্ট জয় আছে বাংলাদেশের। ইংল্যান্ডের সঙ্গে ২০১৬ সালের অক্টোবরে ১০৮ রানের বড় জয় পেয়েছিল আর ঠিক তার পরের বছর অসিদের বিপক্ষে টাইগারদের স্মরণীয় জয়টি ২০১৭ সালের আগস্টে। সে ম্যাচে ২০ রানে জিতেছিল মুশফিকুর রহিমের দল।
কিন্তু ইতিহাস জানাচ্ছে, এর কোনোবারই সিরিজ জেতা হয়নি বাংলাদেশের। দুটি সিরিজই ১-১’এ ড্র থেকে যায়। ইংলিশদের বিপক্ষে চট্টগ্রামে ২২ রানে হেরে ঢাকায় ১০৮ রানের বড় জয়ে সিরিজে সমতা ফিরিয়ে এনেছিল টাইগাররা।
আর অস্ট্রেলিয়ার সাথে পরের বছরের ঘটনা উল্টো। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ৭ উইকেটে হেরে শেরে বাংলায় ২০ রানের জয়ে সিরিজ ড্র করে টিম বাংলাদেশ।
এবার নিউজিল্যান্ডের সাথে কী করবে নাজমুল হোসেন শান্তর দল? সিলেটে প্রথম টেস্টে ১৫০ রানের বড় জয়ের পর কিউইদের বিপক্ষে সিরিজ জেতার হাতছানি শান্ত, মুশফিক, মুমিনুল, মিরাজ ও তাইজুলদের সামনে।
ঢাকা টেস্টে জিতলেতো কথাই নেই, ড্র রাখতে পারলেও সিরিজ জয়ের স্বাদ পাবে টাইগাররা। আর জিতে গেলে সিরিজ জয়ের সঙ্গে টিম সাউদির দলকে টেস্টে ‘বাংলা ওয়াশ’ করার দুর্লভ কৃতিত্বের অধিকারি হবেন সাকিব, তামিম, লিটন, তাসকিন আর এবাদতবিহীন তারুণ্যনির্ভর বাংলাদেশ।
কাজেই আগামীকাল ৬ ডিসেম্বর থেকে মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে যে টেস্ট ম্যাচটি শুরু হচ্ছে, তা বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ টেস্ট ম্যাচ। এ ম্যাচ জিতলে কিংবা অন্তত ড্র রাখতে পারলেও সাফল্যের নতুন ইতিহাস রচিত হবে।
ভক্ত, সমর্থক আর অনুরাগীরা উন্মুখ, বিশ্বকাপের অমন করুণ পরিনতির পর বাংলাদেশ ঘরের মাঠে টেস্টে সোনালি সাফল্য পায় কিনা!
ইতিহাস সাক্ষী দিচ্ছে, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতেও বাংলাদেশের সিরিজ জয়ের সম্ভাবনা ছিল। মাউন্ট মুঙ্গানুইতে মুমিনুল হকের নেতৃত্বে কিউদের ৮ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ক্রাইস্টচার্চে পরের ম্যাচে ইনিংস ও ১১৭ রানের পরাজয়ে সে সম্ভাবনার বেলুন যায় চুপসে।
এবার কী হবে? টিম বাংলাদেশ কী ভাবছে? তাদের প্রস্তুতি কেমন? ঢাকা টেস্টে শান্ত বাহিনীর লক্ষ্য-পরিকল্পনাইবা কী? টেস্ট শুরুর আগে হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে ক্রিকেটারদের কী বার্তা দিয়েছেন?
আজ মঙ্গলবার সকালে প্রেস কনফারেন্সে সে প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে টাইগার কোচ বলেন, ‘সিলেটে প্রথম টেস্ট শুরুর আগে দলের প্রতি যে বার্তাটা ছিল, এখনো সেটাই আছে। মানে ম্যাসেজ একই থাকছে।’
সেটা কী? হাথুরুর ব্যাখ্যা, ‘আমাদের যা আছে, নিজেদের শক্তি যতটুকু, তা বুঝে সেটার উপযুক্ত ব্যবহার করে সামনে এগিয়ে যাওয়া।’
স্কিলের দিক থেকে নিজ দলকে একদমই পেছনে রাখতে নারাজ হাথুরু। তিনি মনে করেন, খেলোয়াড়দের ছোট ছোট কিছু বিষয়ে নজর দিলে তারাও ভালো করতে সক্ষম। টাইগার কোচের কথা, ‘অভিজ্ঞতার দিক থেকে আমরা তরুণ, কিন্তু স্কিলের দিক থেকে তারা (টাইগাররা) বেশ ভালো।’
হাথুরু যোগ করেন, ‘জাতীয় দলের বাইরে এনসিএল বা এমন কোনো প্রতিযোগিতায় যখন তারা খেলে, তাদের পূর্ণ স্বাধীনতা দিলে তারা ভালো খেলে। এই বিষয়টা আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটেরও ভালো বিজ্ঞাপন। কারণ সাতজন খেলোয়াড় এনসিএলে খেলেছে, মাঠে তাদের প্রাণশক্তিটা আপনি দেখতে পারছেন। বিষয়টা ফলাফলের নয়।’
‘ফল ভিন্ন হতেই পারে। কিন্তু পাঁচদিন পর্যন্ত প্রাণশক্তিটা ধরে রাখা, প্রতিপক্ষ যখন বড় জুটি গড়ে ফেলছে, তখনও চনমনে থাকা-এসব ছোট ছোট বিষয়ে আমি নজর দেই। এই তরুণ দলটা তাদের সবটা দিয়ে লড়েছে। বার্তাটা থাকবে একই কাজ আবারও করার।’
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।