বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের তারকা ব্যাটসম্যান লিটন দাস দেশের প্রধান ক্রিকেট ভেন্যু মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছেন। দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছেন, মিরপুরে দীর্ঘ সময় ধরে অনুশীলন করলে উপকারের চেয়ে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
সাক্ষাৎকারে লিটন বলেন, বাংলাদেশ দলে আসার আগে আমি রংপুর, বগুড়া, চট্টগ্রাম, রাজশাহীতে অনুশীলন করতাম—সবই খুব ভালো উইকেটে। বিকেএসপিতেও ভালো উইকেট। ওই রকম উইকেটে নিয়মিত খেললে খেলার প্যাটার্নটাও সে রকম থাকে। জাতীয় দলে আসার পর আমি এখানে (মিরপুরে) অনুশীলন করছি। এখানকার উইকেটে যদি কোনো খেলোয়াড় এক মাস ব্যাটিং অনুশীলন করে, তার ভালো হওয়ার চেয়ে খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা একটু বেশি।
নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে লিটন জানান, মিরপুরে নিয়মিত অনুশীলনের ফলে তার নিজস্ব কিছু শট খেলার প্রবণতা কমে গেছে এবং মনে সংশয় তৈরি হয়েছে যা তার ব্যাটিং দক্ষতাকে নিচে নামিয়ে এনেছে। তিনি বলেন, আমার যে নিজস্ব কিছু শট ছিল, সেই শটগুলো কমে গিয়ে আস্তে আস্তে মনে ডাউট আসা শুরু হয়েছে। ওই ডাউট থেকে আস্তে আস্তে আমার স্কিল লেভেল নিচে নেমে এসেছে।
লিটনের মূল অভিযোগ পিচের চরম অনিশ্চয়তা নিয়ে। তিনি ব্যাখ্যা করেন, একজন ব্যাটসম্যান হিসেবে আপনি যদি জানেন বল সুইং হবে বা টার্ন করবে, সেটা খুব বড় সমস্যা না। কিন্তু পিচে বল পড়ার পর কী হবে যখন আপনি জানেন না, তাহলে খুব কঠিন। কারণ একজন ব্যাটসম্যান সেকেন্ডেরও কম সময় পায়। তিনি আরও যোগ করেন, যদি এমন হতো যে এটা শুধু আমার ক্ষেত্রেই হচ্ছে, আমি মানিয়ে নিতে পারছি না, তাহলে ভিন্ন কথা ছিল। সমস্যা তো সবারই হচ্ছে।
বিদেশের কন্ডিশনে মানিয়ে নেয়ার বিষয়টির সঙ্গে মিরপুরের পরিস্থিতিকে মেলাতে নারাজ লিটন। তার যুক্তি, আমরা যখন বিদেশে খেলতে যাই, আমরা স্ট্রাগল করি না, তা না। তবে সাত-আট দিন অনুশীলন করার পর একটু মানিয়ে নিতে পারি। যদি একদমই করতে না পারতাম, তাহলে আমরা কেউ ওখানে দাঁড়াতেই পারতাম না। কিন্তু মিরপুরের পিচের আচরণ এতটাই অপ্রত্যাশিত যে এখানে মানিয়ে নেওয়া কঠিন বলে মনে করেন জাতীয় দলের এই অভিজ্ঞ ব্যাটার।
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশন বাউন্সি ও সুইং-ই, লো বাউন্সের চান্স নেই। আমরা সেভাবেই প্রস্তুতি নিই। মিরপুর যদি আমাকে বলত তোমার শুধু বল ঘুরবে, আমরা সে জন্য প্রস্তুতি নিতাম। কিন্তু মিরপুর আমাকে বলছে, বল ঘুরবে, সোজা যাবে, নীচু হবে, হঠাৎ লাফাবে। এখানে আপনি কীভাবে অ্যাডজাস্ট করবেন?
লিটনের হতাশা এতটাই যে তিনি মনে করেন, বোলাররাও নাকি জানেন না পিচে বল ফেলার পর কী ঘটতে পারে। এই ব্যাপারে জাতীয় দলের অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান বলেন, একই জায়গায় বল পড়ছে, বোলারও হয়ত বলটা ছাড়ছে একইভাবে, তারপরও একটা বল পড়ার পর হয়ত অফ স্পিন করছে, আরেকটা সোজা যাচ্ছে। বোলারও জানে না কী হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।