বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টের তীব্র সমালোচনা করলেন ওয়াসিম আকরাম। সর্বকালের অন্যতম এ সেরা পেসার মনে করেন, বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডার সাজানোয় আছে বেশ বড় ধরনের ত্রুটি।
অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ৭-৮ নম্বরে খেলতে দেখে ‘সুলতান অব সুইং’ সবচেয়ে বেশি অবাক হয়েছেন। পাকিস্তানের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে তিনি বলেন, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মত এমন অভিজ্ঞ, দক্ষ ও সফল ব্যাটারকে কেন কী কারণে সাত-আট নম্বরে নামানো হচ্ছে, আমি ভেবে পাই না।
পাকিস্তানের এ সাবেক অধিনায়ক আরও বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়মিত অনুসরণ করি। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে চিনি অনেক আগে থেকেই। তার সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা আছে আমার। সে বেশ ভালো ব্যাটার। পরিপাটি ব্যাটিং শৈলি তার। বাজে শট কম খেলে। অভিজ্ঞতার ঝুলি বেশ সমৃদ্ধ। ব্যাটিং সামর্থ্যটাও ভালো। সর্বোপরি তার ট্র্যাক রেকর্ডও বেশ উজ্জ্বল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রিয়াদের পরিসংখ্যানও বেশ ভালো। সব মিলে সে বাংলাদেশের ক্রিকেটে একজন প্রমাণিত ও পরীক্ষিত পারফরমার। তাকে কী করে এবং কেন নিচের দিকে খেলানো হচ্ছে আমার বোধগম্য হচ্ছে না।’
এদিকে ওয়াসিম আকরামের পাশাপাশি পাকিস্তানের আরেক সাবেক অধিনায়ক মিসবাউল হকও বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টেরর অদূরদর্শী ব্যাটিং অর্ডার সাজানোর সমালোচনা করেছেন।
মিসবাহ বলেন, বৃহস্পতিবার ভারতের বিপক্ষে খেলায় যেখানে অধিনায়ক সাকিব খেলেননি, সেখানে মাহমুদউল্লাহকে আরও ওপরে খেলানো উচিত ছিল। তিনি তার অভিজ্ঞতা দিয়ে ইনিংস সাজানোর কাজ করতে পারতেন।
মিসবাহর কথা, ‘সাকিব নেই। এরকম অবস্থায় মিডল অর্ডারে দরকার ছিল দুই অভিজ্ঞ, পরিণত ও পরীক্ষিথ পারফরমার মুশফিক আর মাহমুদউল্লাহকে নামানো। তাহলে বাংলাদেশের ইনিংসটা আরও পরিপাটি থাকতো। ইনিংস সাজানোটাও হতো আরও ভালো। কিন্তু দেখলাম দুই অভিজ্ঞ মুশফিক আর রিয়াদকেই খেলানো হলো অনেক নিচে। তারা যখন উইকেটে গেছে, তখন আসলে ইনিংসের অনেকটা শেষ। ওপরে পাঠালে মুশফিক আর রিয়াদ ইনিংসটাকে সুন্দর করে সাজাতে পারতেন।’
সত্যিই তাই, অধিনায়ক সাকিব না থাকায় বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের ব্যাটিং অর্ডারে একজন সিনিয়র ও অভিজ্ঞ পারফরমার কম ছিল। সেটাই ছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ওপরে খেলানোর মোক্ষম সুযোগ।
অনেকেই ভেবেছিলেন, পুনেতে ভারতের বিপক্ষে মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন হবে। সাকিবের পজিশন মানে চারে খেলানো হতে পারে অভিজ্ঞ মুশফিক না হয় রিয়াদকে। আর তা যদি না হয়, তাহলে অন্তত ছয় নম্বরে ঠিকই নামানো হবে দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ব্যাটার মাহমুদউল্লাহকে।
কিন্তু না। বৃহস্পতিবারও রিয়াদকে নামানো হলো অনেক পরে, সাত নম্বরে। আগের ম্যাচের মত এদিনও মাহমুদউল্লাহ সঙ্গীর অভাবে বেশিরভাগ সময় বোলারদের নিয়ে খেললেন। অথচ যাকে তার আগে নামানো হলো, সেই তাওহিদ হৃদয় আগের ম্যাচের মত ঠিক একইভাবে রিয়াদকে রেখে পা বাড়ালেন সাজঘরে।
আর কিছুক্ষণ ভায়রা মুশফিককে নিয়ে লড়াই করা মাহমুদউল্লাহ শেষ ৪-৫ ওভার কাটালেন বোলারদের নিয়ে। অবশ্য এদিন আর আগের ম্যাচের মত ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত ক্রিজে থাকতে পারেননি রিয়াদ। তবে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করা ৪২ রান টপকে এদিন পৌঁছে গিয়েছিলেন অর্ধশতকের খুব কাছে।
শেষ ওভারে জাসপ্রিত বুমরাহর অসাধারণ ইয়র্কারে বোল্ড হওয়ার আগে মাহমুদউল্লাহ খেললেন ৩৫ বলে ৪৬ রানের এক সাহসী ইনিংস। যার ওপর ভর করে আড়াইশোতে গিয়ে ঠেকলো বাংলাদেশ। না হয় রান ২০০ হতো কিনা সন্দেহ।
ইনিংসের ৭৬ বল আগে বলা নেই কওয়া নেই হঠাৎ শার্দুল ঠাকুরের বলে ‘দুম ’ করে আকাশে তুলে মারার চেষ্টা হৃদয়ের। সে ব্যর্থ চেষ্টা হলো। বল উঠে গেল মিড অনে।
তারপর মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে জুটি বাঁধলেন রিয়াদ। কিন্তু বুমরাহর বলে পয়েন্টে মুশফিকের স্কোয়ার কাট অসামান্য ক্ষিপ্রতা আর দক্ষতায় ক্যাচ ধরে সাজঘরে ফেরত পাঠালেন রবীন্দ্র জাদেজা। একা হয়ে পড়লেন রিয়াদ।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।