বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলার দারুণ সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। সুপার এইটের শেষ ম্যাচে আফগানিস্তানকে ১২.১ ওভারে ১১৬ রান করে হারাতে পারলে স্বপ্ন সম্ভব হতো। কিন্তু সেটা আর হলো না। ব্যাটারদের ব্যর্থতায় সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন পূরণ হলো না।
তবে বাংলাদেশের সাধারণ ক্রীড়াপ্রেমীদের মত ক্রিকেটাররাও স্বপ্ন দেখেন, একদিন সত্যি সত্যি তারা এই স্বপ্ন সম্ভব করতে পারবেন। পাশের দেশ ভারত যখন চ্যাম্পিয়ন হয়ে আনন্দ উৎসব করে, তখন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাও স্বপ্ন দেখেন- একদিন এমন উদযাপন তারাও করতে পারবেন।
বাংলাদেশের পেস অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিনের তো ভারতীয় ক্রিকেটারদের বিশ্বকাপ ট্রফি জয়ের উদযাপন দেখে রীতিমত শরীরের লোম দাঁড়িয়ে গেছে। নিজের ভেতর সূপ্ত একটি প্রতীজ্ঞাও তৈরি করে নিয়েছেন, একদিন তারাও এমন উদযাপন করতে পারবেন।
রোববার মিরপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স নিয়ে নিজের মতামত জানান সাইফউদ্দিন। বিশ্বকাপ স্কোয়াড থেকে শেষ মুহূর্তে বাদ পড়েছিলেন তিনি। যদিও সাইফউদ্দিনকে বাদ দেয়া নিয়ে সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছিলো নির্বাচকদের। যুক্তরাষ্ট্র এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের উইকেটে সাইফউদ্দিন অনেক কার্যকরী হতে পারতেন বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
সাইফউদ্দিন বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স নিয়ে খুব একটা হতাশ নন। তিনি বলেন, ‘না, অবশ্যই ভালো খেলেছে। যদিও আরো ভালো খেললে আরো ভালো লাগতো। তারপরও ওভারঅল ভালো লেগেছে। শেষ একটা ইকুয়েশন ছিল, সেমিফাইনাল খেলার। ভালো সুযোগও ছিল হয়তোবা হয়নি। তারপরও ওদের চেষ্টাকে আমি এপ্রিশিয়েট করি। অবশ্যই নিজের দেশ ভালো খেলে তো ভালো লাগেই।’
এ সময় ভারতীয় ক্রিকেটার এবং সে দেশের সমর্থকদের উদযাপন দেখে নিজের শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যায় বলে মন্তব্য করেন সাউফউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘যেমন ইন্ডিয়া অনেক সেলিব্রেশন করতেছে বিশ্বকাপ জয়ের পর। এগুলো দেখলে তো গায়ের লোম দাঁড়িয়ে যায়। অবশ্যই ইনশাল্লাহ আমরাও মাঝেমধ্যে চিন্তা করি কবে, এরকম চ্যাম্পিয়ন হব দেশের মানুষের সাথে এরকম উদযাপন করব। তো এটা আসলে চিন্তা করি। মানুষ তার স্বপ্ন দেখতে দোষ নেই আমরাও দেখি।’
সাইফউদ্দিনের পরিবর্তে সুযোগ পেয়েছিলেন তানজিম সাকিব। তিনি খুব ভালো করেছেন বিশ্বকাপে। এ নিয়ে মতামত জানতে চাইলে সাইফউদ্দিন বলেন, ‘দেখুন, কম্পিটিশনের তো শেষ নেই। ভালোর উপরে তো ভালো আছে। চেষ্টা করব আরো ভালো করার। অবশ্যই আমি তাকে এপ্রিসিয়েট করি। তানজিম সাকিব অসাধারণ খেলেছে।’
‘আমার সে কলিগ। আবাহনীতে আমরা একসাথে খেলেছি। তো এটাই আসলে ক্রিকেটারদের কেউ ভালো খেলবে কেউ খারাপ খেলবে এটার জন্য খুব বেশি চিন্তা না করে কিভাবে আরো বেটার কিছু করা যায় সেদিকে চেষ্টা করব। প্রত্যেকটা ক্রিকেটারের দিন যায়। ওর দিনে ও ভালো, আমার যখন দিন আসবে আমিও আমার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব।’
দল থেকে বাদ পড়ায় খারাপ লাগেনি? কিংবা এ সময়টা কিভাবে কাটিয়েছেন? জানতে চাইলে সাইফউদ্দিন বলেন, ‘এটা তো আসলে অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে জীবনের সাথে ইউজড টু হয়ে গিয়েছি। এ জন্য আসলে খুব বেশি খারাপ লাগে না। চেষ্টা করি যখনই সুযোগ পাই, ভালো খেলার। চেষ্টা করি, প্র্যাকটিসের উপরেই থাকি।’
‘যেহেতু এখন ফ্যামিলিও হয়েছে। যখন একসাথে থাকি তখন খুব বেশি নেগেটিভ চিন্তা মাথায় আসে না। যখন বাদ পড়া ইস্যু নিয়ে আরো চিন্তা করি তখন আরো বেশি খারাপ লাগে। তখন আমার কাজেও ব্যাঘাত ঘটে। এজন্য কাজ করতে থাকি সুযোগ আসবে।’
‘সত্যি বলতে আমাদের বাংলাদেশে তো ও রকম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার খুব বেশি ২০ থেকে ২৫ জনের বাইরে, ওরকম প্লেয়ার নেই। আমি যদি ফিট থাকি সুযোগ আসবে। অন্যান্য দেশে যদি দেখেন অনেক বেশি কম্পিটিশন আমাদের বাংলাদেশে; কিন্তু খুব কম সংখ্যক আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড় আছে। ২০ থেকে ২৫ জন যতোটুকু আমি মনে করি।’
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।