এমনও অসমাপ্তি হয়! ঠিক প্রকৃত টি-টোয়েন্টির রূপ দেখা গেল পিএসএল ফাইনালে। রুদ্ধশ্বাস সমাপ্তি, স্নায়ুক্ষয়ী হয়ে উত্তেজনা, চার ছক্কার ধুম-ধাড়াক্কা প্রদর্শনঈ- কি ছিল না পিএসএল ফাইনালে? একা এক শাহিন শাহ আফ্রিদির অলরাউন্ড পারফরমেন্স এর কাছেই রুদ্ধশ্বাস পরাজয় হল মুলতান সুলতান্সের। যেমন ব্যাট হাতে বিধ্বংসী ছিলেন আফ্রিদি, তেমন বল হাতেও ছিলেন দারুণ কার্যকরী। মাত্র ১৫ বলে ৪৪ রান করার পর বল হাতে নিয়েছেন একাই চার উইকেট। এমন একক পারফরমেন্সের পর প্রতিপক্ষের কোমর সোজা করে দাঁড়ানোর কথাই নয়।
তবুও তুমুল লড়াই চালালো মুলতান সুলতান্স। জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ২০১ রান করার লক্ষ্যে প্রায় পৌঁছে গিয়েছিল তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পারল না। মাত্র এক রান দূরে থাকতেই শেষ হয়ে গেল মোহাম্মদ রিজওয়ানের দল মুলতানের জীবনী শক্তি। ফলে রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে মাত্র এক রানের জয়ে পিএসএলের শিরোপা টানা দ্বিতীয়বারের মতো জিতে নিল লাহোর কালান্দার্স।
লাহোর কালান্দার্সের বিরুদ্ধে গতবারের ফাইনালে হারের প্রতিশোধ নেওয়ার দারুন সুযোগ ছিল মুলতান সুলতান্সের সামনে। কিন্তু তা আর নেওয়া হল না। বরং ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে পাকিস্তান সুপার লিগের খেতাব ধরে রাখলো লাহোর। শাহিন আফ্রিদিরা টানা ২ বার পিএসএল চ্যাম্পিয়ন হয়ে মাঠ ছাড়েন।
গতবছর পাকিস্তান সুপার লিগের ফাইনালে রিজওয়ানের মুলতান সুলতানসকে ৪২ রানের ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় শাহিন আফ্রিদির লাহোর। এবারও পিএসএলের খেতাবি লড়াইয়ে মুখোমুখি হয় দু’দল। এবার মাত্র ১ রানের ব্যবধানে রুদ্ধশ্বাস জয় তুলে নিয়ে শিরোপা হাতে তোলেন আফ্রিদিরা।
উল্লেখ্য, এবছর পাকিস্তান সুপার লিগের প্রথম ম্যাচে মুলতান সুলতানসকে ১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে অভিযান শুরু করে লাহোর কালান্দার্স। ফাইনালে সেই মুলতানের বিরুদ্ধে ১ রানে জিতেই অভিযান শেষ করলো তারা।
ফাইনালে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নামে লাহোর কালান্দার্স। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ২০০ রান তোলে তারা। ঝড়ো হাফ-সেঞ্চুরি করেন অব্দুল্লা শফিক। তিনি ৮টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ৪০ বলে ৬৫ রান করে আউট হন। শেষদিকে মাত্র ১৫ বলে ৪৪ রানের ধ্বংসাত্মক ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন শাহিন আফ্রিদি। মারকাটারি ইনিংসে তিনি ২টি চার ও ৫টি ছক্কা মারেন।
এছাড়া ৫টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ১৮ বলে ৩০ রান করেন মির্জা বেগ। ৩৪ বলে ৩৯ রান করেন ফাখর জামান। তিনি ৪টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন। স্যাম বিলিংস ৯ ও সিকন্দর রাজা ১ রান করে আউট হন। খাতা খুলতে পারেননি এহসান হাফিজ। ২ রান করে নট-আউট থাকেন ডেভিড ওয়াইজ।
মুলতানের হয়ে ২৪ রানে ৩টি উইকেট নেন উসামা মীর। ১টি করে উইকেট নিয়েছেন আনোয়ার আলি, ইসানউল্লাহ ও খুশদিল শাহ। উইকেট পাননি কায়রন পোলার্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে মুলতান সুলতানস ২০ ওভারে ৮ উইকেটের বিনিময়ে ১৯৯ রানে আটকে যায়। জয়ের জন্য শেষ বলে চার রান দরকার ছিল মুলতানের। ৩ রান নিয়ে ম্যাচ টাই করার চেষ্টায় রান-আউট হন খুশদিল।
দল হারায় ব্যর্থ হয় রাইলি রুশোর লড়াকু হাফ-সেঞ্চুরি। তিনি ৭টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে ৩২ বলে ৫২ রান করেন। ২৩ বলে ৩৪ রান করেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। তিনি ৫টি চার মারেন। এছাড়া উসমান খান ১৮, কায়রন পোলার্ড ১৯, টিম ডেভিড ২০, খুশদিল শাহ ২৫, আনোয়ার আলি ১ ও আব্বাস আফ্রিদি ১৭ রান করেন।
শাহিন আফ্রিদি ৪ ওভারে ৫১ রান খরচ করলেও ৪টি উইকেট দখল করেন। ২৬ রানে ২টি উইকেট নেন রশিদ খান। ১টি উইকেট নিয়েছেন ডেভিড ওয়াইজ। লাহোর কালান্দার্স প্রথম দল, যারা পরপর ২ বার পিএসএল চ্যাম্পিয়ন হয়। এর আগে কোনও দল একবার পিএসএল চ্যাম্পিয়ন হয়ে পরের মরশুমে তাদের খেতাব ধরে রাখতে পারেনি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।