বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে আমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ইংল্যান্ডকে চূর্ণ করে দিল নিউজিল্যান্ড। ৮২ বল হাতে রেখে জিতলো ৯ উইকেটে। এতে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে ইংলিশদের কাছে হারের মধুর প্রতিশোধ নিলো কিউইরা।
গত মাসেই ইংল্যান্ডে গিয়ে ওয়ানডে সিরিজে পরাস্ত হয়েছিল কিউইরা। কিন্তু বিশ্বকাপের উদ্বোধনী দিনে স্মরণীয় জয় নিশ্চিত করল ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্রর জোড়া সেঞ্চুরিতে। নিউজিল্যান্ড ২৮৩ রানের টার্গেটে পৌঁছে যায় ৩৬.২ ওভারেই। বিশ্বকাপ অভিষেকেই শতরান পেলেন ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্র। ১৯টি চার ও তিনটি ছয়ের সাহায্যে ১২১ বলে ১৫২ রান করে অপরাজিত থাকলেন কনওয়ে। ১১টি চার ও পাঁচটি ছয়ের সৌজন্যে ৯৬ বলে ১২৩ রান করে অপরাজিত থাকেন রবীন্দ্র।
কনওয়ের কেরিয়ারের এটি পঞ্চম শতরান, ২২তম। তার মধ্যে চলতি বছরই পেলেন চতুর্থ ওডিআই শতরানটি। রবীন্দ্র ওডিআই কেরিয়ারের প্রথম শতরানটি পেলেন। একইসঙ্গে বিশ্বকাপ অভিষেকে ম্যাচের সেরাও হলেন। শতরান হাঁকানোর আগে বল হাতে ৭৬ রানে বিনিময়ে একটি উইকেট পেয়েছিলেন তিনি।
কেন উইলিয়ামসন, টিম সাউদি, লকি ফার্গুসনকে ফিটনেসজনিত কারণে পায়নি নিউজিল্যান্ড। তা সত্ত্বেও এদিন দুরন্ত জয় ছিনিয়ে নিল টম লাথামের নেতৃত্বাধীন কিউইরা। ২১১ বলে অবিচ্ছেদ্য দ্বিতীয় উইকেটে ২৭৩ রানের পার্টনারশিপ গড়লেন কনওয়ে ও রবীন্দ্র। যা বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের পক্ষে সর্বেোচ্চ রানের জুটি।
রবীন্দ্র ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার নিয়ে বলেন, কিছু কিছু জিনিস অবিশ্বাস্য মনে হয়। তবে আজকের দিনটা ভালোই গেল। বোলাররা ভালো বল করেছেন। ডেভনের সঙ্গে ব্যাট করতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। আমরা একসঙ্গে অনেক ইনিংস খেলেছি, খুবই কাছের সতীর্থ। তাঁর সঙ্গে কথা বলে ব্যাটিংয়ের সময় স্বস্তিবোধ করেছি।
এদিন টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ইংল্যান্ড ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৮২ রান তোলে। সর্বেোচ্চ ৭৭ রান করেন জো রুট। ম্যাট হেনরি তিনটি, মিচেল স্যান্টনার ও গ্লেন ফিলিপস ২টি করে এবং ট্রেন্ট বোল্ট ও রবীন্দ্র একটি করে উইকেট নেন। ইংল্যান্ডের বোলারদের মধ্যে স্যাম কারান একমাত্র উইকেটটি নেন।
মিচেল স্যান্টনারের ১০ ওভারের স্পেলে ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা একটিও বাউন্ডারি মারতে পারেননি। একদিনের আন্তর্জাতিকে ২০১৮ সালের পর এমনটা হয়নি। কনওয়ে চলতি বছর ১১টি ওডিআই ইনিংসে চারটি শতরান পেলেন।
পরিসংখ্যানে চোখ রাখলে দেখা যাচ্ছে, এদিনের জয় নিউজিল্যান্ডের নেট রান রেট ভালো জায়গায় শুধু নিয়ে গেল তা-ই নয়, কাপ জয়ের ক্ষেত্রেও ফেভারিট করে দিল। শেষ চারটি বিশ্বকাপে দেখা গিয়েছে যে দলের ব্যাটার টুর্নামেন্টের প্রথম শতরানটি করেছেন, তারাই শেষ অবধি কাপ জিতেছে। নিউজিল্যান্ডের হয়ে এদিন আবার দুজন শতরান করেছেন।
২০০৭ সালের বিশ্বকাপে প্রথম শতরানটি করেছিলেন রিকি পন্টিং, স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১১৩, কাপ জেতে অস্ট্রেলিয়া। ২০১১ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১৭৫ করেছিলেন বীরেন্দ্র শেহওয়াগ, কাপ জেতে ভারত। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অ্যারন ফিঞ্চ করেন ১৩৫, কাপ জেতে অস্ট্রেলিয়া। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জো রুট ১০৭ করেছিলেন, কাপ জিতেছিল ইংল্যান্ড। নিউজিল্যান্ড কি পারবে?
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।