বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) স্বর্নালি ট্রফ্রিটা জয় করার যুদ্ধে নেমেছিলো ৭ দল। কিন্তু ৪৫ ম্যাচ পর শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে টিকে আছে দুই দল। বতর্মান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স আর ফরচুন বরিশাল এবার শেষ মহারণে মাঠে নামবে।
ফর্ম, দলিয় শক্তিতে দুই দলই সমানে সমান। তবে বিপিএলের ট্রফিটাতে সবচেয়ে বেশিবার নাম খোদাই করা হয়েছে কুমিল্লার। আগের ৯ আসরে ৪ বারই চ্যারম্পিয়ন হেয়ে সালাউদ্দিন শিষ্যরা। ৪ চার ফাইনাল খেলে কখনও হারেনি দলটি। অন্যদিকে, তিনবার ফাইনালে উঠলেও একবারও ট্রফি ঘরে তুলতে পারেনি বরিশাল। সেই হিসেবে কথার লড়াইয়ে নিজেদের ফেভারিট দাবি করতেই পারে কুমিল্লার ভক্তরা।
ফাইনালের আগে কুমিল্লার জন্য বড় টনিক মোস্তাফিজুর রহমানের ফিট হয়ে ওঠা। দলের সাথে অনুশীলনও করেছেন চট্টগ্রাম পর্বে মাথায় আঘাত পাওয়া ফিজ। দারুণ ব্যালেন্স দল ভিক্টোরিয়ান্সরা। সেই দারুণ ছন্দে আছেন দুই টপ অর্ডার ব্যাটার লিটন দাস ও তাওহিদ হৃদয়। এবারের আসরে সবেচেয়ে বেশি ছক্কা হাকানো হৃদয় বড় ইনিংস খেললে একাই কুপোকাত করতে পারে বরিশালকে। আর লোয়ার অর্ডারে তাণ্ডব চালাচ্ছেন জাকের আলী। সেই সাথে আন্দ্রে রাসেল, মাঈন আলী, সুনিল নারিন, জনসন চার্সল, ম্যাথিউ ফোর্ড, নূর আহমেদের মতো পারফর্মারা আছে কুমিল্লার ডেরায়। তাইতো পঞ্চম শিরোপা জয়ে আত্মবিশ্বাসী কুমিল্লা।
ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দীন বলেন, ফাইনাল ম্যাচের আগে তো সবাই একটু রোমাঞ্চিত থাকে এটা স্বাভাবিক। সবাই রোমাঞ্চিত। আমাদের দলের একটা সুবিধা আছে বেশিরভাগ প্লেয়ারের ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা আছে। চাপ ভালোভাবে সামাল দিতে পেরেছে। বিদেশিরাও প্রচুর ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা আছে। দেশিদেরও আছে। আমাদের জন্য এটা ভালো সুবিধা হতে পারে। যেহেতু ফাইনাল ম্যাচ নার্ভের ব্যাপার থাকবেই। যেহেতু খেলার অভিজ্ঞতা আছে আমি মনে করি আমরা একটু ভালো অবস্থায় থাকবো।
এছাড়া প্রতিপক্ষ দল ফরচুন বরিশালের ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম ট্রফি জিততে চান এমন মন্তব্য করেছেন ফাইনাল নিশ্চিত করার পর। সেই কথার জবাবে সালাউদ্দিন বলেন, যে দুই দল আছে সবাই তো চাইবে ট্রফি। আমি কি বলব মুশফিক তুমি নিয়ে নাও ট্রফিটা? সবাই তো ট্রফি জিততেই আসছে। মুশফিকরা আসছে। আমরাও খেলতে আসছি। কেউ কাউকে ছাড় দিবে না এখানে।
এলিমিনেটরে চট্টগ্রাম আর দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারে রংপুরের মতো জায়ান্টকে হারিয়ে ফাইনালে ওঠা বরিশাল আছে খুব ভালো মোমেন্টামে। টানা ম্যাচ থাকায় ফাইনালের আগের দিন বিশ্রামে ছিলে তামিমের দল। অধিনায়ক নিজেই আছেন দারুণ ফর্মে। সেই সাথে মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকার, মেহেদী মিরাজদের মতো দেশি প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটাররা অবদান রাখছে দলের প্রয়োজনে। তবে ইনজুরি কাটিয়ে অলরাউন্ডার সাইফুদ্দিনের ফেরার পর, ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার কাইল মায়ার্স আর পেসার জেমস ফুলার দলে যোগ দেবার পর অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে বরিশাল। তাছাড়া কিলার মিলারের জ্বলে ওঠার অপেক্ষায়তো এখনও প্রহর গুনছে ভক্তরা।
ফাইনাল প্রসঙ্গে ফরচুন বরিশালের অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ বলেন, কখনো বিপিএলে ট্রফি জেতেনি। যদি চ্যাম্পিয়ন হতে পারি, এবারই প্রথম চ্যাম্পিয়ন হব। এর আগে দুবার ফাইনাল খেলেছি, এটা নিয়ে তৃতীয়বার হবে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই খেলব। সবাই চায় চ্যাম্পিয়ন হতে, কুমিল্লাও চায়। মাঠে যারা ভালো খেলবে, তারাই জিতবে।
তিনি আরও বলেন, কুমিল্লা সব সময়ই অনেক বড় দল, তারা অনেক ভালো দল সব সময়ই গড়ে। প্রতিপক্ষ হিসেবে চ্যালেঞ্জিং হবে, সহজ হবে না। দুই দলের খেলাটা ভালো হবে। কারণ, আমাদের দলও অনেক শক্তিশালী। আমাদের দলেও অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে, দেশের বাইরে যারা আছে, তারাও খুব ভালো খেলোয়াড়।
এর আগে দুইবার ফাইনালে বরিশালের মুখোমুখি হয়ে দুবারই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সরা। তৃতীয় ফাইনালে কি ঘটবে একই ঘটনা? নাকি চতুর্থ ফাইনালে ফরচুর ফিরবে বরিশালের।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।