গত ১৬ আগস্ট সংবাদ সম্মেলন করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ৩১ জন নারী ফুটবলারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করেছিল। যার মাধ্যমে সাবিনা খাতুনদের বেতন বৃদ্ধি পায়। এটি গত সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হওয়ার কথা। বর্তমানে ডিসেম্বর মাস গড়ালেও গত তিন মাসের মধ্যে মাত্র এক মাসের বেতন পেয়েছেন নারী ফুটবলাররা।
সেপ্টেম্বর-অক্টোবর টানা ২ মাস বেতন পাননি সাবিনারা। নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি এসে সেপ্টেম্বর মাসের বেতন দিয়েছে বাফুফে। ডিসেম্বর মাস শুরু হলেও এখনও অক্টোবরের বেতন পাননি নারী ফুটবলাররা। বেতন বকেয়া পড়ার বিষয়ে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার বলেন, ‘বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে আমাদের ফিফার কিছু আনু্ষ্ঠানিকার অনুমোদনের প্রয়োজন ছিল। ফিফার নির্দেশনা অনুসরণের আনুষ্ঠানিকতা মানতে গিয়ে বেতন প্রদানে বিলম্ব হয়েছে।’
সেই আনুষ্ঠানিকতা এখন অনেকটাই সম্পন্ন। তাই অক্টোবরের বেতন ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে আর নভেম্বরের বেতন ডিসেম্বরের মধ্যে প্রদান করে হালনাগাদ করার পরিকল্পনা রয়েছে ফেডারেশনের।
এর আগে বাফুফে সভাপতি চুক্তি সম্পাদনের দিন বলেছিলেন, ‘এখন থেকে সব কিছু পেশাদার ভিত্তিতে হবে।’ এই ঘোষণা দেওয়ার পর দেশের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটিই পেশাদার ধারা বজায় রাখতে পারেনি। দুই মাসের বেশি বকেয়া ছিল সাবিনাদের। সোহাগ কাণ্ডের পর বাফুফে আর্থিক বিষয়ে এখন অনেক সজাগ। বাফুফের শীর্ষ কর্তারা প্রশাসনিক আনুষ্ঠানিকতা আগে সম্পন্ন না করেই চুক্তি সম্পাদন করেছেন।
বাফুফেতে আগে থেকেই আর্থিক সঙ্কট রয়েছে। আর্থিক কারণে অলিম্পিক বাছাই খেলতে মিয়ানমার পাঠাননি বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। পাঁচ মাস পরই নারী ফুটবলারদের বেতন বৃদ্ধি করেছেন সর্বোচ্চ পাঁচ গুণ পর্যন্ত (কারও ক্ষেত্রে আড়াই-তিনগুণ)। ফুটবলারদের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পর কমিটির সকলের কাছে বেতন বৃদ্ধির ব্যাপারে মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। এমন সিদ্ধান্ত ও প্রক্রিয়া নিয়ে ফেডারেশন কর্মকর্তাদের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে।
সাফজয়ী অধিনায়ক সাবিনা সর্বোচ্চ ২০ হাজার বেতন পেতেন। বাকিরা পেতেন ১০ হাজার টাকা করে। নারী ফুটবলারদের লিগ হয় বছরে মাত্র এক মাস। সারা বছর তারা বাফুফের অধীনেই থাকে। তাই ফেডারেশনের কাছে কয়েক মাস ধরে বেতন বৃদ্ধির আন্দোলন করেছিলেন সাবিনারা। নানা আন্দোলনের পর সাবিনাসহ ১৫ ফুটবলারকে মাসে ৫০ হাজার, ১০ জনের ৩০ হাজার, বাকি ৬ ফুটবলারের ৪ জন ২০ এবং ২ জনের ১৮ হাজার টাকা বরাদ্দ করে ফেডারেশন।
বাফুফের আগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) নারী ক্রিকেটারদের বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। বিসিবিও বর্ধিত বেতন সমন্বয়ের আনুষ্ঠানিকতা করতে অনেক সময় নেয়। এর ফলে নিগার সুলতানা জ্যোতিরা পাঁচ মাস বেতনহীন ছিলেন। সাবিনা-জ্যোতিদের বেতন ইস্যুতে স্পষ্ট— দেশের দুই শীর্ষ ক্রীড়া ফেডারেশন কতটুকু পেশাদার!
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।