দীর্ঘ ১২ বছর পর বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারত। সবকিছু নির্ভর করছে রোহিতদের উপর। লিগ পর্বে অন্যান্য ম্যাচের মতো, ফাইনালেও শেষ হাসি তাঁদের মুখে থাকে কি না দেখতে চাইছে গোটা বিশ্ব। তবে বিশ্বকাপ হোক বা সাধারণ কোনও লিগ, মাঠে নামার আগে কিছু সংস্কার পালন করতে দেখা যায় রোহিত-বিরাটদের।
কথায় আছে, বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর। এ ক্ষেত্রেও সে কথা ভীষণভাবে প্রযোজ্য। তবে যেখানে শেষকথা বলে জয়ের হাসি, সেখানে এই ধরনের বিশ্বাস নিয়ে তর্ক জমাতে কেউই বোধহয় আগ্রহ দেখাবেন না। বিশ্বাস যে যার নিজের ব্যাপার। কেউ যদি তথাকথিত কিছু কু-সংস্কার পালন করে দলকে জিতিয়ে দিতে পারেন, তবে তার থেকে বড় আর কিছু হয় না। তাই খেলোয়াড়দের বিভিন্ন সংস্কার পালন নিয়েও খুব একটা সমালোচনা করতে দেখা যায় না কাউকে।
ক্রিকেট ফুটবল হকি ব্যাডমিন্টন, খেলা যাই হোক না কেন, মূল লক্ষ্য হলো জয়। তাই সব ধরনের খেলোয়াড়দের মধ্যেই বিশেষ কিছু সংস্কার পালনের চল রয়েছে। যদিও ক্রিকেটমাঠে এর প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। সৌরভ, শচীন, কুম্বলে থেকে শুরু করে বিরাট, রোহিত, বুমরাহ- সবাই ম্যাচের আগে কিছু না কিছু সংস্কার পালন করেন। তাঁদের বিশ্বাস এর জোরেই ম্যাচে নিজের সেরাটা দিতে পারেন তাঁরা। আপাতভাবে খুব সাধারণ কিছু কাজ, কিন্তু ওই খেলোয়াড়দের কাছে সেগুলোর গুরুত্ব অনেক।
প্রথমেই আসা যাক রোহিত শর্মার কথায়। তাঁর নেতৃত্বের এক যুগ পর ক্রিকেটের বিশ্বমঞ্চে পৌঁছেছে ভারত। নিজের ব্যক্তিগত সাফল্যের কথা ভুলে, রোহিতকে প্রথম থেকে দেখা গেছে দলের জন্য নিবেদিত প্রাণ। তবে মাঠে নামার আগে রোহিতও পালন করেন অদ্ভুত এক সংস্কার। প্রতিবার মাঠে ঢোকার সময় তিনি বাঁ পা আগে ফেলেন। বিশ্বকাপের ম্যাচে রোহিতকে ওপেনার হিসেবে মাঠে নামতে দেখা যায়। তবে প্রত্যেকবার ব্যাট হাতে মাঠে ঢোকার সময় বাঁ পা আগে ফেলতে দেখা গেছে তাঁকে। জানা যায়, রোহিতের বিশ্বাস এমনটা করলে ভাগ্য দেবতা ম্যাচে তাঁর সহায় হন। তাই কোনোভাবেই এই সংস্কার মানতে ভোলেন না টিম ইন্ডিয়ার ক্যাপ্টেন।
এরপর আসা যাক বিরাট কোহলির কথায়। চলতি বিশ্বকাপেই তিনি শচিন টেন্ডুলকারের রেকর্ড ভেঙ্গেছেন। ব্যক্তিগত সংগ্রহে ভরেছেন ওয়ানডে ক্রিকেটে ৫০টি সেঞ্চুরি। সেই বিরাটও খেলার সময় বিশেষ এক সংস্কার মেনে চলেন। খেলার সময় বিরাটকে কালো রিস্টব্যান্ড পরতে দেখা যায়। এটিই নাকি তাঁর লাকি চার্ম। শুধু তাই নয়, একসময় সব ম্যাচে একই গ্লাভস পরতেন বিরাট। বিশ্বাস করতেন ওই গ্লাভস পরলেই তিনি রানের পাহাড় তুলতে পারবেন। যদিও এখন আর সে অভ্যেস নেই।
এর পরেই রয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা। রোহিতের দলের অন্যতম সদস্য এই অলরাউন্ডার দীর্ঘদিন ধরে ভারতের জাতীয় দলে রয়েছেন। তিনিও মাঠের ঢোকার সময় বিশেষ সংস্কার পালন করেন। ক্রিকেট মাঠে চারদিকে যে সাদা রঙের বাউন্ডারি আঁকা থাকে, সেই লাইনে ভুল করেও পা দেন না জাদেজা।
এখানেই শেষ নয়, তালিকায় রয়েছে জাসপ্রীত বুমরাহ-ও। যে কোনও ম্যাচেই তাঁর গলায় থাকে একটা সোনার চেইন। তার বিশ্বাস, এর থেকেই ম্যাচে নিজের সেরাটা উজার করে দেওয়ার ক্ষমতা পান বুমরাহ। এছাড়া জার্সি নম্বর, টুপি, হেলমেট এই সবকিছু পরা নিয়েও বিশেষ সংস্কার রয়েছে ভারতীয় খেলোয়াড়দের মধ্যে।
তবে যেভাবেই হোক, দলকে জেতানোই তাদের আসল উদ্দেশ্য। তার জন্য কে কী করলেন, সেদিকে বিশেষ নজর দিতে চান না ভারত ক্রিকেট দলের সমর্থকরা।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।