‘এই খেলাটা শুরু করবি!’ মুশফিকুর রহিমের যেন তর সইছিল না। সবাই আসার আগেই এক চক্কর দৌড়ে এসেছেন তিনি। পরেও তার বরবারের মতোই অনুশীলনের ব্যস্ত সূচি। তবুও মুশফিকের তাড়াহুড়ো ফুটভলি খেলতে। পা দিয়েই খেলা, তবে কোর্টটা ভলিবলের মতো।
ফুটবল সম্প্রতি আঘাতের বড় কারণ হয়েছে, তাই বোধ হয় সতর্কতার এই খেলা! ‘গা গরম’ যেভাবেই হোক। পরের প্রস্তুতিটা চলেছে বেশ জোরেশোরেই। সামনে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ বলে কথা। সবারই তাই বেশ সরব প্রস্তুতি, নীরবতাটুকু কেবল মিডিয়ায়। বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও শেষ অবধি কথা বলেননি দলের প্রতিনিধি কেউ।
ফাঁকে ফাঁকে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের লম্বা আলাপ হলো বেশ কয়েকবার। তারা দুজন এক হলেই দৃষ্টিটাও অনুমিতভাবে চলে যায় সেখানে। কী পরিকল্পনা আঁটছেন দুজন? উত্তর জানার উপায় আপাতত নেই। তবে ভারত ম্যাচের প্রস্তুতিতে বেশ সরবই দেখা গেল ক্রিকেটারদের।
পথ হারানো দলের ঠিকানা খুঁজে পাওয়ার মহারণটা হবে মুম্বাই-পুনে মহাসড়কের পাশে। পুনের মূল শহর থেকে অন্তত এক ঘণ্টার পথ; এক হাজার রুপির উবার ভাড়া। দীর্ঘ পথের ক্লান্তি কাটাতে ঢাকা শহরের সঙ্গে মিলিয়ে জায়গার নামকরণ করা হচ্ছিল এমন, ‘মতিঝিল, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ি, নারায়ণগঞ্জ…’ কোথায় এসে গাড়ি থামলো তাহলে? অনুমান করা একটু মুশকিলই বটে।
এত ভিড়-বাট্টা পেরিয়ে আসা স্টেডিয়াম এমনিতে মন্দ না। ৩৭ হাজার মানুষ খেলা দেখতে পারবেন একসঙ্গে। পেছনেই লম্বা পাহাড়টাও দৃশ্যমান ড্রেসিংরুম থেকে। ওদিকে উঁচু উঁচু দুটি গ্যালারিও। তবুও শেষ মুহূর্তের রঙ লাগছিল যখন, তাতে নতুনত্বের সঙ্গে ছিল তাড়াহুড়োর ছাপও।
শহরের ভেতরের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামকে টপকে এখানে বিশ্বকাপ ম্যাচ হওয়ার কারণটা ‘রাজনৈতিক’। এছাড়া এমন ‘প্রত্যন্ত গ্রামে’ খেলা হওয়ার তেমন কারণ নেই। খেলা যেখানেই হোক, বাংলাদেশের প্রস্তুতিটা তো পাকা হওয়া চাই।
প্রথম তিন ম্যাচের দুটিতেই হেরে এমনিতেই অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। এর ওপর অধিনায়ক সাকিবকে নিয়ে শঙ্কা। তিনি তো আর শুধুই ‘নেতা’ নন, দলের সবচেয়ে বড় পারফর্মারও। তবে তাকে নিয়ে স্বস্তির খবরই মিলেছে পুনে থেকে।
শুরুতে ফুটভলির সামনের সারিতে ছিলেন। নকিংয়ের পর স্পিন-পেস দুই ধরনের বোলারদের খেলেছেন প্রায় ঘণ্টাখানেক। এরপর বিশ গজ দৌড়ে দেখেছেন রানিং বিটুইন দ্য উইকেটটা ঠিকঠাক করতে পারবেন কি না। সবকিছুই ভালোভাবে শেষ করেছেন সাকিব।
তার বাইরে দলের প্রস্তুতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। পেসারদের সঙ্গে লম্বা সময় কাটিয়েছেন কোচ অ্যালান ডোনাল্ড। লম্বা ভালো সময়ের পর বিশ্বকাপে এসে যেন ঠিক রঙটা খুঁজে পাচ্ছেন না পেসাররা। চ্যালেঞ্জটাও বেড়ে গেছে তাই।
ব্যাটারদের লম্বা লম্বা ছক্কা এসে পড়ছিল সাংবাদিকদের বসার ব্যবস্থা করা গ্যালারিতে। দুর্ঘটনা ছাড়া অনুশীলন শেষ হয়েছে; এটাই এখন ওই গ্যালারিতে থাকা সবার স্বস্তি। মাঝে তো এক ভারতীয় সাংবাদিক কৌতূহল নিয়ে জানতেও চাইলেন, ‘ছক্কাগুলো কে মারলো গো…?’
তাকে আর কতজনের নাম বলা যায়। বাংলাদেশের সব ব্যাটারই তো আজ গ্যালারিতে বল পাঠিয়েছেন। ম্যাচে পারবেন কি না? এই প্রশ্নটা উপস্থিত লোকজনেরও ছিল। বাংলাদেশর অবশ্য উত্তর দরকার এবং সেটা ‘হ্যাঁ’-ই। ভারতের বিপক্ষে জয়ের সম্ভাবনা অনেক কম, এই বাস্তবতা মানলেও ম্যাচটা হারলে যে বিশ্বকাপ নিয়ে আশাটুকু প্রায় শেষ!
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।