দীর্ঘ বিরতির পর আবারও টেস্ট ক্রিকেটের লড়াইয়ে নামছে বাংলাদেশ। রোববার (২০ এপ্রিল) সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্টে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে। ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই সিরিজে ফেভারিট হিসেবেই সিরিজ জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামবে টাইগাররা। তবে ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ে হচ্ছে বাংলাদেশের পুরোনো বন্ধু। তাই দুই দেশের টেস্ট দ্বৈরথের ইতিহাসটাও পুরোনো,পরিসংখ্যানও সেই কথাই বলছে।
দুই দলের মুখোমুখি পরিসংখ্যান এবং সাম্প্রতিক চিত্র:
২০০১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটে ১৮ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে। এর মধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে ৮টি টেস্টে, জিম্বাবুয়ের জয় ৭টিতে এবং ৩টি ম্যাচ ড্র হয়েছে। নিজেদের মাঠে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ অনেক বেশি সফল। ১০টি টেস্টের মধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে ৬টিতে,হেরেছে ২টি এবং ড্র হয়েছে ২টি। ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলা সর্বশেষ তিনটি টেস্টেই জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ২০২১ সালে হারারেতে সর্বশেষ লড়াইয়ে জিম্বাবুয়েকে ২২০ রানে হারিয়েছিল টাইগাররা।
২০১৮ সালে জিম্বাবুয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্ট জয় পেয়েছিল এই সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামেই,যেটি ছিল এই ভেন্যুর প্রথম টেস্ট। ২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর প্রথমদিকে জিম্বাবুয়ে বাংলাদেশের জন্য বেশ কঠিন প্রতিপক্ষ ছিল। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের মান ক্রমশ নিম্নগামী হওয়ায় পরিস্থিতি বদলে গেছে।
ব্যাটিং রেকর্ড:
দুই দলের টেস্ট সিরিজে সবচেয়ে বেশি ১২৩৯ রান করেছেন জিম্বাবুয়ের ব্রেন্ডন টেইলর। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৮৩ রান জিম্বাবুয়ের হ্যামিল্টন মাসাকাদজার। বাংলাদেশের মুশফিকুর রহিম আছেন তৃতীয় স্থানে,১৮ ইনিংসে ৮৫৭ রান নিয়ে। এই সিরিজে আর মাত্র ২৭ রান করলেই মাসাকাদজাকে টপকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসবেন মুশফিক। সর্বোচ্চ রানের তালিকায় পরের তিনটি স্থানেই আছেন বাংলাদেশের মমিনুল হক (৭৫৭),মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (৬১৫) এবং হাবিবুল বাশার (৫৭৮)।
সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংসের রেকর্ড বাংলাদেশের মুশফিকুর রহিমের দখলে। ২০১৮ সালে মিরপুরে তিনি ২১৯* রানের ইনিংস খেলেছিলেন। দলীয় সর্বোচ্চ রানও বাংলাদেশের,২০২০ সালে মিরপুরে ৬ উইকেটে ৫৬০ রানে ইনিংস ঘোষণা করেছিল টাইগাররা। জিম্বাবুয়ের দলীয় সর্বোচ্চ ৫৪২/৭ডি (চট্টগ্রাম,২০০১)। দলীয় সর্বনিম্ন রানের রেকর্ডও বাংলাদেশের,২০০১ সালে ঢাকায় তারা ১০৭ রানে অলআউট হয়েছিল। জিম্বাবুয়ের দলীয় সর্বনিম্ন রান ১১৪ (মিরপুর,২০১৪)।
বোলিং রেকর্ড:
দুই দলের দেখায় বোলিংয়ে সবচেয়ে বেশি ৪১ উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের বাঁ-হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম (১২ ইনিংসে)। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩১ উইকেট সাকিব আল হাসানের (১৪ ইনিংসে)। জিম্বাবুয়ের কাইল জার্ভিস আছেন তৃতীয় স্থানে ২৪ উইকেট নিয়ে। বাংলাদেশের এনামুল হক জুনিয়র ২১ উইকেট নিয়ে চতুর্থ এবং জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক হিথ স্ট্রিক ও বাংলাদেশের মেহেদি হাসান মিরাজ ২০টি করে উইকেট নিয়ে যৌথভাবে আছেন পরের স্থানে।
ম্যাচে ১০ বা তার বেশি উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব দেখিয়েছেন কেবল বাংলাদেশের তিন স্পিনার – এনামুল হক জুনিয়র (১২ উইকেট,ঢাকা ২০০৫),সাকিব আল হাসান (১০ উইকেট,খুলনা ২০১০) এবং তাইজুল ইসলাম (১১ উইকেট,সিলেট ২০১৮)। সব মিলিয়ে পরিসংখ্যান এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ এই সিরিজে ফেভারিট। তবে রোববার (২০ এপ্রিল) থেকে শুরু হওয়া মাঠের লড়াইয়ে যে দল ভালো পারফরম্যান্স করবে সেই দল এগিয়ে থাকবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।