দিনের শেষ বলে নাইটওয়াচম্যান খুররাম শেহজাদ হলেন বোল্ড। দিনের শুরুতে যিনি বাংলাদেশকে দুঃস্বপ্ন উপহার দিয়েছিলেন, তার উইকেট নিয়েই শেষ করল বাংলাদেশ। আর তাতে রাওয়ালপিন্ডির দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ২১ রানে পিছিয়ে থাকলেও টাইগার শিবিরে আছে স্বস্তি। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ২৬২ রানে অলআউট হওয়ার পর পাকিস্তানের এই মুহূর্তে স্কোর ২ উইকেট হারিয়ে ৯ রান।
নিজের প্রথম আর ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই হাসান মাহমুদের আঘাত। খানিক আগেই ব্যাট হাতে ৫১ বলে ১৩ রানের ইনিংস খেলে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডের পুঁজি বাড়িয়েছিলেন। এবার ভূমিকা রেখেছেন বল হাতে। তার করা অফ স্টাম্পের বাইরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন আবদুল্লাহ শফিক।
শফিক আউট হওয়ার পর নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নেমেছিলেন খুররম শেহজাদ। তাকে বোল্ড করে দিয়েছেন হাসান মাহমুদ। এতেই খেলা শেষ হয়। ২১ রানের লিড থাকলেও ৯ রানে ২ উইকেট হারিয়ে নিঃসন্দেহে চাপের মুখে থাকবে পাকিস্তান। আর দিনের শুরুতে ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়লেও দিনশেষে বাংলাদেশের জন্য থাকছে স্বস্তি।
যদিও দিনের শুরুটা বাংলাদেশের জন্য ছিল একেবারেই ভুলে যাওয়ার মতোই। আগের দিন দুই ওভার দেখেশুনে পার করলেও এদিন নতুন বলে বাংলাদেশ ছিল ছন্নছাড়া। জাকির হোসেনকে দিয়ে শুরু। এরপর আরেক ওপেনার সাদমান ইসলামও ফিরেছেন স্ট্যাম্প হারিয়ে। অধিনায়ক শান্তও হয়েছেন ব্যর্থ। ১ রানে ফেরেন মুমিনুল হক। খুররাম শেহজাদের দুর্দান্ত স্পেলে টাইগার ব্যাটিং লাইনআপ দিশেহারা। এরপর মীর হামজা এসে তুলে নেন সাকিব আল হাসান এবং মুশফিকুর রহিমের উইকেট।
২৬ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর লিটন কুমার দাস এবং মেহেদি হাসান মিরাজের পার্টনারশিপ বাংলাদেশকে সর্বনিম্ন রানে অলআউটের লজ্জা থেকে মুক্তি দিয়েছে। ফলো-অন এড়াতে দরকার ছিল ১২৫ রান। লিটনের চারে সপ্তম উইকেটে শতরানের জুটির পর সেই ফলো-অন এড়ানোর মিশনটাও পূর্ণ করে ফেলে বাংলাদেশ। এর খানিক পরেই দুই ব্যাটার পেয়ে যান ফিফটি। গড়েন বিশ্বরেকর্ড।
মিরাজ ১২৪ বলে ৭৮ রান করে সাজঘরে ফিরলে ভাঙে সপ্তম উইকেটে দুজনের গড়া ১৬৫ রানের সেই জুটি। ততক্ষণে অবশ্য একটি বিশ্ব রেকর্ড গড়ে ফেলেছেন লিটন-মিরাজ। ১৪৭ বছরের টেস্ট ইতিহাসে ৫০ রানের কমে ষষ্ঠ উইকেট পতনের পর সপ্তম উইকেটে সবচেয়ে বড় জুটি এটা।
মেহেদী হাসান মিরাজ আউট হওয়ার পর থেকে কিছুটা ধীরগতিতে খেলছিলেন লিটন দাস। ডানহাতি এই ব্যাটার নিজেও জানতেন তিনিই শেষ স্বীকৃত ব্যাটার। তাসকিন আহমেদ ভরসার পাত্র হলেও আজ ছিলেন ব্যর্থ। লিটন খুব একটা ঝুঁকি নেননি। রয়েসয়ে খেলেছেন, ক্র্যাম্পেও ভুগেছেন। কিন্তু সেখান থেকে উঠে ঠিকই গিয়েছেন ৯৯ পর্যন্ত। এরপর আবার খানিক স্থবিরতা। শেষ পর্যন্ত চার মেরে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করলেন। ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি। ১৭১ বল খেলে পেলেন সেঞ্চুরির দেখা।
২৬ রানে ৬ উইকেট পতনের পর থেকে লিটন বাংলাদেশকে টেনে নিয়ে গেলেন ২৬২ পর্যন্ত। উড়িয়ে খেলতে চেয়েছিলেন। বাউন্ডারি লাইনে সাইম আইয়ুব নিয়েছেন ক্যাচ। সালমান আঘার বলে যখন লিটন আউট হয়েছেন তখন তার নামের পাশে ১৩৮ রান। নাহিদ রানা অবশ্য এরপর কিছু করতে পারেননি। একইওভারে ফিরেছেন তিনি। বাংলাদেশ থামল ২৬২ রানে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।