দিল্লী না ঢাকা? এই স্লোগানে কদিন আগেও উত্তাল হয়েছিল বাংলাদেশের রাজধানী। ক্রিকেট মাঠের প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা বৈরিতার গল্প পুরনো হলেও সাম্প্রতিক, দুই দেশের সম্পর্কের টানাপোড়েন, রাজনৈতিক উত্তেজনা। তাই এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ম্যাচ আলাদা। আগে যেটা ছিল বাংলাদেশ-পাকিস্তান, তারপর বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা।
ভারতের সঙ্গে বৈরিতার শুরুটা ২০০৭ বিশ্বকাপ দিয়ে। সেবার ভারতের উৎসব, নষ্ট করে দিয়ে গ্রুপ পর্ব থেকে তাদের বিদায় করে দিয়েছিল বাংলাদেশ। ২০১৫ বিশ্বকাপে তাসকিনের সেই নো বল, নিদাহাস ট্রফিতে শেষ বলে হার দু’দেশের উত্তেজনার কয়েকটি উদাহরণ মাত্র। যুব বিশ্বকাপেও ভারতকে হারিয়ে জেতা ট্রফি মাঠে আর মাঠের বাইরে জন্ম দিয়েছিল নানা ঘটনার।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের দেখা হয়েছিল একবারই। সেটা সবশেষ আসরে সবশেষ ম্যাচে। ২০১৭ সেমিফাইনালে হেরেছিল বাংলাদেশ। রোহিত শর্মার সেঞ্চুরি প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে দেয়নি। সেই দলের ছয়জন এবারও আছেন টাইগার স্কোয়াডে।
দু’দলের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বাংলাদেশের পক্ষে থাকলেও সবমিলে ঢের এগিয়ে ভারত। ৪১ দেখায় ৩২ জয় টিম ইন্ডিয়ার। বাংলাদেশ জিতেছে ৮টিতে।
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্ধেকেরও বেশি ম্যাচ খেলেছেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের সেরা ব্যাটারও তিনি, বোলারও। ২২ ম্যাচ খেলে করেছেন ৭৫১ রান। ভারতের সেরা সেখানে বিরাট কোহলি। আর বোলিংয়ে অজিত আগারকার। যে কিনা এখন ভারতের প্রধান নির্বাচক।
দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে দুটি ম্যাচ খেলে দুটিতেই হেরেছে বাংলাদেশ।
২০১৮ সালের এশিয়া কাপ ফাইনালে আগে ব্যাট করে ২২২ রান করেছিল বাংলাদেশ, ভারত জয় পায় ৩ উইকেটে। ওই ম্যাচে লিটন দাস করেছিলেন ১২১ রান।
২০১৮ সালের একই টুর্নামেন্টে আরেক ম্যাচে ১৭৩ রানে অলআউট হয় টাইগাররা, ভারত জেতে ৭ উইকেটে।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি ম্যাচে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ, ১৩৭ রানের বিশাল ব্যবধানে। সেই ম্যাচে মুশফিকুর রহিম করেছিলেন ১৪৪ রান।
বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স
দুবাইয়ের এই মাঠে মুশফিকুর রহিম সর্বোচ্চ ১৭০ রান করেছেন (৩ ম্যাচ)।
লিটন দাস ৩ ম্যাচে ১২৮ রান করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে একটি সেঞ্চুরি।
বল হাতে মুস্তাফিজুর রহমান, মাশরাফী ও রুবেল হোসেন ৩টি করে ম্যাচে ৪টি করে উইকেট নিয়েছেন। এবারের দলে কেবল মুস্তাফিজ আছেন।
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের শীর্ষ পারফর্মাররা
ভারতের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন সাকিব আল হাসান (৭৫১ রান, ২২ ম্যাচ)। তবে তিনি এবারের দলে নেই।
মুশফিকুর রহিম ভারতের বিপক্ষে ৭০৩ রান (২৬ ম্যাচ) করেছেন।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ভারতের বিপক্ষে ১৮ ম্যাচে ৪৭৬ রান করেছেন।
বল হাতে ভারতের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি উইকেট সাকিব আল হাসানের (২৯ উইকেট, ২২ ম্যাচ)।
মুস্তাফিজুর রহমান ভারতের বিপক্ষে ১২ ম্যাচে ২৫ উইকেট শিকার করেছেন।
তাসকিন আহমেদ ৭ ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়েছেন।
ভারতীয় ব্যাটারদের পারফরম্যান্স
বিরাট কোহলি বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৬ ম্যাচে ৯১০ রান করেছেন, যার মধ্যে ৫টি সেঞ্চুরি রয়েছে।
রোহিত শর্মা ১৭ ম্যাচে ৭৮৬ রান করেছেন (৩ সেঞ্চুরি, ৩ ফিফটি)।
শুভমান গিল ২ ম্যাচে ১৭৪ রান করেছেন, যার মধ্যে ১টি সেঞ্চুরি রয়েছে।
ভারতীয় বোলারদের পারফরম্যান্স
রবীন্দ্র জাদেজা ১৩ ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়েছেন।
জসপ্রিত বুমরাহ ৫ ম্যাচে ১২ উইকেট নিয়েছেন।
মোহাম্মদ শামি ৪ ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়েছেন।
ওয়াশিংটন সুন্দর ৩ ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়েছেন।
দুবাইয়ের এই মাঠে ভারতের অভিজ্ঞ ব্যাটারদের পারফরম্যান্স এবং বাংলাদেশ দলের তুলনামূলক নবীন স্কোয়াডের জন্য ম্যাচটি কঠিন চ্যালেঞ্জ হতে যাচ্ছে। তবে মুস্তাফিজ-তাসকিনরা যদি বল হাতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন, তাহলে চমক দেখানোর সুযোগ থাকছে টাইগারদের।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।