ক্রিকেটাঙ্গনে জোর গুঞ্জন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল বিসিবির পরিচালক হচ্ছেন। বিসিবি পরিচালক হতে হলে থাকতে হয় কাউন্সিলরশিপ, এরপর নির্বাচনী ধাপ পেরিয়ে বোর্ড কর্তা হওয়া। তামিম এখনও বাংলাদেশের ক্রিকেটার, আনুষ্ঠানিকভাবে অবসরও নেননি। সেই প্রেক্ষিতে তামিমের বিসিবি পরিচালক হওয়ার বিষয়টি অনেকটাই ‘গাছে কাঠাল গোফে তেল’ দেওয়ার মতো বিষয়।
তামিম ক্রিকেট মাঠে ফিরবেন নাকি বিসিবি পরিচালক হবেন মাসখানেক ধরেই এ নিয়ে ক্রিকেট মহলে আলোচনা চলছে। তামিম এখনও ক্রিকেট খেলতে পারেন এমন ধারণা পোষণ করেছেন নতুন বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ। আবার তামিম ইকবালের সাম্প্রতিক কিছু কর্মকাণ্ড বোর্ড পরিচালক হওয়ারও ইঙ্গিত বহন করছে। বিশেষ করে গতকাল জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে বোর্ড সভাপতির বৈঠকে তামিমের উপস্থিতিও সেই গুঞ্জন আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
তামিম যদি সত্যিই বোর্ড পরিচালক হতে চান সেক্ষেত্রে বেশ কিছু আনুষ্ঠানিকতা ও ধাপ পেরিয়ে আসতে হবে। প্রথমত বর্তমান শূন্য হওয়া পরিচালক পদগুলো বিসিবি পূরণ করবে কি না, সেই ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ইতোমধ্যে নাইমুর রহমান দুর্জয়, খালেদ মাহমুদ সুজনের পদ শূন্য হয়েছে। সামনে আরও ফাঁকা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি বোর্ডের মেয়াদ রয়েছে আর এক বছর। এই স্বল্প সময়ের জন্য বোর্ড উপনির্বাচন পন্থায় যাবে, নাকি যারা সক্রিয় রয়েছেন তারাই একাধিক দায়িত্ব নিয়ে বাকি সময় পার করবেন সেটা বড় সিদ্ধান্ত।
বর্তমান বোর্ড যদি শূন্য পরিচালক পদ পূরণের উদ্যোগ নেয় তখনই বাস্তবিক অর্থে তামিম ইকবালের পরিচালক হওয়ার বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া যাবে। পরিচালক হতে হলে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে হবে তামিমকে। পাশাপাশি তাকে কাউন্সিলর হতে হবে। ক্রিকেট বোর্ডের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কাউন্সিলরদের মেয়াদও বোর্ড পরিচালকদের মতো ৪ বছর। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিদেশে স্থায়ী হওয়া, মৃত্যুবরণ কিংবা কাউন্সিলর স্বেচ্ছায় পদত্যাগ ছাড়া পরিবর্তনের সুযোগ নেই।
কাউন্সিলর ও বিসিবির পরিচালক হওয়ার প্রক্রিয়া
তামিম এখনও ক্রিকেটার হওয়ায় তার কাউন্সিলরশিপ না থাকাটাই স্বাভাবিক। তাকে প্রথমে কাউন্সিলর হতে হবে, এরপর নির্বাচনে প্রার্থী। যে ক্যাটাগরিতে উপ-নির্বাচন হবে সেই ক্যাটাগরির কাউন্সিলররাই শুধু প্রার্থী হতে পারবেন। খালেদ মাহমুদ সুজন ‘সি’ ক্যাটাগরির পরিচালক ছিলেন। তিনি পদত্যাগ করায় এই পদশূন্যতা। এই ক্যাটাগরিতে মূলত বিশ্ববিদ্যালয়, বিকেএসপি, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও বিসিবি মনোনীত সাবেক ক্রিকেটার এবং বিসিবি সভাপতির মনোনয়নে পাঁচজন সাবেক অধিনায়ক থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়, বিকেএসপি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাউন্সিলরশিপ পেতে হলে ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত হতে হয়। তামিম কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি না করায় সেখান থেকে কাউন্সিলরশিপ পাবেন না।
সাবেক জাতীয় খেলোয়াড় এবং এনএসসির পাঁচ কাউন্সিলর— এই দুই জায়গা থেকে তার কাউন্সিলরশিপ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে এই দুই ক্যাটাগরির কোনো কাউন্সিলরকে পদত্যাগ করতে হবে, তখন সেই শূন্য পদে বিসিবি বা এনএসসি কাউন্সিলর মনোনয়ন করতে পারবে তামিমকে। ‘সি’ ক্যাটাগরিতে সুজনের শূন্য পদে নির্বাচন দিলে সেখানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিলর দেবব্রত পালের প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কোয়াবের এই সাধারণ সম্পাদক জাতীয়তাবাদী ক্রীড়া ফোরামের সঙ্গেও যুক্ত।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।