আগামী ৩০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে ১১তম বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টুর্নামেন্ট এটি। তবে ২০ ওভারের এই ক্রিকেট নিয়ে থাকে বেশ আলোচনা-সমালোচনা। এবার বিভিন্ন প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ঘরোয়া এই টুর্নামেন্টকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে বিসিবি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দিচ্ছেন বিভিন্ন পরিকল্পনা। ইতোমধ্যে এই বিষয়ে কাজও শুরু হয়েছে। তবে বিপিএল ২০১২ সাল থেকে শুরু হওয়া ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক সমস্যা এখনও অতপ্রোতভাবে জড়িত।
১১তম আসর শুরুর আগে গত আসরের পারিশ্রমিক নিয়ে অভিযোগের কথা উঠে এলো। এমন কি বিশ্ব ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (ডব্লিউসিএ) কর্মকর্তারা গত আসরে অংশ নেওয়া বিদেশি ক্রিকেটারদের বকেয়া অর্থ পরিশোধের জন্য বিপিএলে থাকা কর্তৃপক্ষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এবং এই ইস্যু নিয়ে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) একটি চিঠিও পাঠিয়েছে তারা। ক্রিকেটভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ক্রিকবাজের এক প্রতিবেদনে এমনটায় জানা যায়।
ডব্লিউসিএ’র প্রধান নির্বাহী টম মোফাট বলেন, ‘গত বিপিএল আসরের বিষয়ে আমাদের কাছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিলম্বিত অর্থপ্রদান সংক্রান্ত অভিযোগ এসেছে। আমাদের কাছে রিপোর্ট করা হয়েছে, এবং তাদের বেশিরভাগই এখনও বকেয়া রয়ে গেছে।’
‘এটি আমাদের পুরো খেলায় জুড়ে একটি বিস্তৃত চলমান সমস্যা এবং এটি হতাশাজনক এই সমস্যাগুলি অব্যাহত রয়েছে। আমরা বিপিএলের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের কাছে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য এবং তাদের সমাধান করা নিশ্চিত করার জন্য এবং খেলোয়াড়দের তাদের যা পাওনা আছে তা দ্রুত পরিশোধ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি’
বিপিএলের দশম আসরে খেলা ১৫ জন ক্রিকেটার পারিশ্রমিক নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন। যা প্রায় ২,৫০,০০০ ইউএস ডলার অর্থপ্রদান না করার অভিযোগ এসেছে। এদিকে শেষ সংস্করণ খেলেছিল কিন্তু এই সংস্করণে অংশ নিচ্ছে না এমন একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি আছে যাদের বকেয়া রয়েছে প্রায় এক লাখ ডলার।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স এবং দুরন্ত ঢাকা গত আসরে অংশ নিলেও আসন্ন আসরে অংশ নিচ্ছে না। তাদের বিপরীতে নতুন করে দুটি দল এসেছে ঢাকা ক্যাপিটালস ও দুর্বার রাজশাহীর। এবং ১১ বছর বিরতির পর লিগের প্রথম দুই মৌসুমে অংশগ্রহণকারী চিটাগং কিংস ফিরতে চলেছে।
এদিকে ক্রিকবাজের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে পারিশ্রমিক বিষয়ে সচতেন রয়েছে বর্তমান বিপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের সচিব নাজমূল আবেদীন ফাহিম। তা সমাধানের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
নাজমুল বলেন, ‘এই সমস্যাটি সমাধান করা হয়েছে এবং প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে (যতদূর তাদের পরিষ্কার করার)। বিসিবির প্রধান নির্বাহী বিষয়টি দেখছেন এবং তিনিই সঠিক উত্তর দিতে পারবেন এর। তবে সেই সমস্যাটি (বিশ্ব ক্রিকেটার অ্যাসোসিয়েশনের উদ্বেগের চিঠি) সমাধান করা হয়েছে এবং এটি সমাধানের জন্য কাজ চলছে।’
বাংলাদেশের ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন দেবব্রত পল জানিয়েছেন, ১৫ জন ক্রিকেটারদের মধ্যে ১২ জন ক্রিকেটারের ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মাধ্যমে বকেয়া পারিশ্রমিকের সমাধান করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘তিনটি ফ্র্যাঞ্চাইজির তিনজন ক্রিকেটার আছে যারা এখনও তাদের অর্থপ্রদান পায়নি। তবে আমরা আশা করছি তারাও শীঘ্রই তাদের অর্থ পাবে।’
আসন্ন বিপিএল মাঠে গড়াবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে, চলবে আগামী বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। নাজমুল হাসানের নেতৃত্বাধীন শাসনামলে খেলোয়াড়দের অর্থপ্রদান সবসময়ই বিপিএলে একটি সমস্যা ছিল। এখন নবনির্বাচিত বোর্ডের সভাপতি ফারুক আহমেদ, যিনি বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যানও, পরবর্তী সংস্করণে এটি কীভাবে পরিচালনা করেন। তার নেতৃত্বে প্রথম বিপিএলে তাই দেখার বিষয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।