গত ১২ এপ্রিল মালয়েশিয়ার কুয়ালামাপুরে বসেছিল ৩৫তম এএফসি কংগ্রেস। যেখানে অংশ নিয়েছিল বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনও (বাফুফে)। সেখান থেকে ফিরে গতকাল হঠাৎ করেই সংবাদ সম্মেলনে করেন প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য এবং বাফুফের সহ-সভাপতি ওয়াহিদউদ্দিন চৌধুরী হ্যাপি। সংবাদ সম্মেলনে তিনি এএফসির অনুদান নিয়ে একটি বিভ্রান্তিকর তথ্য দেন।
হ্যাপির দাবি, বাংলাদেশের স্টেডিয়াম উন্নয়ন ও সংস্কার প্রকল্পের জন্য ২.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান দিয়েছে এএফসি! বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৩১ কোটি টাকার ওপরে। তবে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, এএফসি তার সব সদস্য দেশের জন্য উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ কিছুটা বাড়িয়েছে। যেটা আগে ছিল বছরে ২ লাখ ডলার। সেটাই হয়েছে আড়াই লাখ ডলার। যেটা তিন কোটি টাকার কিছু বেশি।
এএফসির স্টেডিয়াম প্রজেক্টের অধীনে আগামী চার বছরে বাংলাদেশসহ সব সদস্য দেশ পাবে ১ মিলিয়ন ডলার করে। অর্থাৎ হ্যাপির বলা আড়াই মিলিয়ন ডলারের তথ্য পুরোটাই অসত্য।
তথ্যগত ত্রুটির বিষয়টি নিশ্চিত করে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার বলেন, ‘একটা তথ্য বিভ্রাট ঘটেছে। যে অঙ্কটা বলা হয়েছে, সেটা সঠিক নয়। আমরা আগে থেকেই স্টেডিয়াম প্রজেক্টের অধীনে বার্ষিক দুই লাখ ডলার করে পেতাম। সেটা আগামী চার বছরের জন্য বছরপ্রতি আড়াই লাখ ডলার করা হয়েছে। চার বছরে আমরা এক মিলিয়ন ডলার পাব। এই বরাদ্দ সব সদস্য দেশই সমানভাবে পাবে। ’
এএফসির কংগ্রেসে বাফুফের সভাপতি তাবিথ আওয়ালের সফরসঙ্গী হয়ে অংশ নিয়েছিলেন সহ-সভাপতি হ্যাপি ও সাধারণ সম্পাদক ইমরান। এছাড়া এএফসির কাউন্সিল মেম্বার হওয়ায় কংগ্রেসে অংশ নেন বাফুফের নির্বাহী সদস্য মাহফুজা আক্তার কিরণ। সাফের সভাপতি হিসেবে কংগ্রেসে ছিলেন বাফুফের শেষ চার মেয়াদের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনও।
এই সফরকে ভীষণ ফলপ্রসূ দাবি করে হ্যাপি শুরুতেই বলেছিলেন, ‘আমাদের স্টেডিয়াম প্রজেক্টের জন্য ২.৫ মিলিয়ন ডলার স্যাংশন করেছে। এছাড়া জাপান, কাতার ও সৌদি আরবের ফেডারেশনগুলোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়েছে। তারা বাংলাদেশে ফুটবলের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করতে আগ্রহী—রেফারি, একাডেমি, খেলোয়াড় উন্নয়ন সব ক্ষেত্রেই।
তিনি আরও বলেছিলেন, ‘এএফসি প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও হয়েছে গঠনমূলক বৈঠক, যেখানে ফুটবল একাডেমি ও তরুণদের নিয়ে নতুন প্রকল্প উপস্থাপন করেছে বাফুফে। এএফসি প্রেসিডেন্ট আশ্বাস দিয়েছেন, এসব প্রকল্পে পাশে থাকবেন তিনি। কাতার ও জাপানের ফেডারেশন প্রতিনিধিরা শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করবেন—পর্যবেক্ষণের পর শুরু হবে বাস্তবায়নের কাজ।’
এদিকে হামজা চৌধুরির লালসবুজ জার্সি গায়ে জড়ানোর পর, বাংলাদেশ ফুটবল নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে সবার। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের পর র্যাঙ্কিংয়েও এগিয়েছে বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে দেশের বাইরেও প্রশংসা বেড়েছে বাংলাদেশ ফুটবলের। হ্যাপি আরও বলেন, ‘আমাদের ফিফা র্যাংকিং বেড়েছে, আমাদের ফুটবলার হামজার খেলা প্রশংসা পেয়েছে। অন্য ফেডারেশনগুলো বাংলাদেশ নিয়ে এখন অনেক বেশি আগ্রহী।’
গত বছরের ডিসেম্বরের কক্সবাজারে বাফুফে ট্রেনিং সেন্টার স্থাপনের কাজ শুরু করার কথা ছিলো ফেডারেশনের। তবে ফিফার ফরোয়ার্ড প্রোগ্রামের অর্থ এখনও খরচ করতে পারেনি বাফুফে। তবে সে অর্থ খরচ না করতেই আবারও স্টেডিয়াম উন্নয়নের জন্য আরও বরাদ্দ মিললো এএফসি থেকে। এ প্রসঙ্গে
বাফুফের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার বলেন, ‘ফিফার একটা প্রজেক্টের সঙ্গে আরেকটা প্রজেক্ট সমন্বয় করা সম্ভব না। এটা ফিফা থেকেই সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে আমরা জমিটা হাতে পাওয়ার পরই কাজ শুরু করবো। সেজন্য আমরা প্রতিনিয়ত কক্সবাজারের ডিসির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।