ক্রিকেটের আকাশে ‘মেঘ গুড় গুড়’ করলেও বর্ষণ ঘটাতে পারছিল না আফগানিস্তান। ২০১৫ বিশ্বকাপে ‘বৈরি’ কন্ডিশনে প্রথমবার অংশ নিয়ে একটি ম্যাচ জিতেছিল তারা। রশিদ-নবীর মতো তারকা পেয়েও ২০১৯ বিশ্বকাপে জয়হীন ছিল আফগানরা। ভারতে প্রথম দুই হারে বিশ্বকাপে টানা ১৪ হারের লজ্জায় ডুবেছিল। তারাই এবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৬৯ রানের ঐতিহাসিক জয় তুলে নিয়েছে।
দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টস জিতলেও আফগানিস্তানের বিপক্ষে শুরুতে ব্যাটিং করার সাহস করেনি ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করার সুবিধা আদায়ের আশায় জস বাটলার ফিল্ডিং নেন। সেটাই কাল হয়েছে তাদের। দ্বিতীয় ইনিংসে ধীর ও টার্ন ফিরে আসা উইকেটে ২৮৫ রানের লক্ষ্যে নেমে ইংল্যান্ড ৪০.৩ ওভারে ২১৫ রানে অলআউট হয়েছে।
এবারের বিশ্বকাপে এই প্রথম বড় কোনো অঘটনের জন্ম দিলো আফগানিস্তান। টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত যে ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলারের জন্য কতবড় ভুল ছিল, তা ম্যাচ শেষে এখন স্পষ্ট হয়ে গেছে। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে রহমানুল্লাহ গুরবাজের ব্যাটিং তান্ডবে ২৮৪ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। জবাব দিতে নেমে আফগান স্পিনের সামনে খেই হারিয়ে ফেলে ইংলিশরা। মুজিব-উর রহমান, রশিদ খান এবং মোহাম্মদ নবির মায়াবি ঘূর্ণিতে দিশেহারা হয়ে যায় বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। এ নিয়ে তৃতীয় ম্যাচ খেললো আফগানিস্তান এবং ইংল্যান্ড। দুই দলই দুটি করে ম্যাচ হেরেছে এবং জিতেছে একটি করে ম্যাচ। ইংল্যান্ড হেরেছে নিউজিল্যান্ড এবং আফগানিস্তানের কাছে। আর আফগানিস্তান হারলো বাংলাদেশ ও ভারতের কাছে।
২২ ওভারের মধ্যে ১১৭ রানে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ৫ উইকেট তুলে নেয় তারা। হ্যারি ব্রুক এই বিপদে একলা হাল ধরেন। উপযুক্ত সঙ্গ পাননি। মুজিব টানা দুই ওভারে ক্রিস ওকস ও ব্রুককে ফেরালে ইংল্যান্ডের শেষ প্রতিরোধ থেমে যায়। ব্রুক ইনিংস সেরা ৬৬ রান করে আউট হন। তখনও দল দুইশর ধারেকাছে নেই। ১৬৯ রান করতেই প্যাভিলিয়নে আট ব্যাটার।
মালান ও ব্রুকের গড়া ইনিংসের ৩৫ রানের সর্বোচ্চ জুটি ভাঙার পথে ছিলেন মার্ক উড ও আদিল রশিদ। কিন্তু পারেননি। নবম উইকেটে তারা তোলেন ইনিংসের তৃতীয় সেরা ২৯ রান। রশিদকে (২০) ফেরান রশিদ। কাকতালীয়, দুই ইনিংসেই দুই রশিদ একে অন্যের শিকার হয়েছেন। উড ও রিচি টপলির জুটিতে দুইশ পার করে ইংল্যান্ড। দলের পরাজয় নিশ্চিত জেনেও ঝড় তোলেন টপলি। তিনটি চার মারেন। ৪১তম ওভারে ইংল্যান্ডকে থামতে হয়। উডকে (১৮) বোল্ড করে দলকে উল্লাসে মাতান রশিদ। টপলি অপরাজিত ছিলেন ১৫ রানে। রশিদ ও মুজিব সর্বোচ্চ তিনটি করে উইকেট নেন। দুটি পান নবী।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।