ঢাকাWednesday , 29 May 2024
  1. world cup cricket t20
  2. অলিম্পিক এসোসিয়েশন
  3. অ্যাথলেটিক
  4. আইপিএল
  5. আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আরচারি
  8. এশিয়া কাপ
  9. এশিয়ান গেমস
  10. এসএ গেমস
  11. কমন ওয়েলথ গেমস
  12. কাবাডি
  13. কুস্তি
  14. ক্রিকেট
  15. টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ

আসলেন পিটার, বাংলাদেশ হকির চোখ ইউরোপে

Sahab Uddin
May 29, 2024 9:45 pm
Link Copied!

বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সম্মেলন কক্ষ তেমন বড় নয়। সম্মেলন শুরুর আগেই আসন প্রায় পরিপূর্ণ। জাতীয় দলের সাবেক জার্মান কোচ গেরহার্ড পিটার এসেছেন। তাই সংবাদ মাধ্যমের আগ্রহ একটু বেশিই ছিল। এরপর নানা বিষয় নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে বাংলাদেশের হকি খেলোয়াড়দের খেলা কিংবা প্রশিক্ষণের জন্য ইউরোপীয় বিভিন্ন দেশে পাঠানোর প্রসঙ্গ ওঠে আসে।

পিটার সম্মেলন শুরুও করলেন খুনসুটি দিয়ে, ‘আমি এখানে (বাংলাদেশে) বিভিন্ন (জাতীয় দল ও ক্লাব কোচিং) দায়িত্বে কাজ করেছি। তাই খুব ভালো করে জানি কারা ভালো, কারা খারাপ (হাসি)।’ ২০১৬ সালে পিটার মেরিনার্স ইয়াংসকে প্রথমবারের মতো লিগ চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন। আট বছর আগে যেমন ছিলেন এখনও তেমন। সম্মেলন শেষে সাংবাদিকরা ব্যক্তিগত পর্যায়ের আলাপে পিটারের বয়স জিজ্ঞেস করলে মজা করে তিনি বলেন, ‘৫০ পার হওয়ার পর আর বয়স গুনি না।’ এই জার্মান কোচ কেনিয়া হকির টেকনিক্যাল ডিরেক্টর ছিলেন। সেখান থেকেই আবারও সাড়া দিয়েছেন বাংলাদেশের আমন্ত্রণে।

মমিনুল হক সাঈদের নেতৃত্বে হকি ফেডারেশনের নতুন কমিটি নির্বাচিত হয়েছে গত বছর। সাঈদের কমিটির নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল হকিকে এগিয়ে নেওয়ার। সেই এগিয়ে নেওয়ার মাধ্যম হিসেবে পিটারকে বেছে নিয়েছেন তারা। এর কারণ সম্পর্কে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা এমন একজনকে খুঁজছিলাম যার বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণা রয়েছে। তার মাধ্যমে খেলোয়াড়রা এখন ইউরোপেও খেলছে। সে আমাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে থাকলেও সেই সুযোগ আরও বাড়বে। তাই তাকে বেছে নেওয়া।’

পিটার বাংলাদেশে এসেছিলেন ২০০৯ সালে। তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক খন্দকার জামিলউদ্দিন তাকে এনেছিলেন। সেই সময় পিটারের মাধ্যমে খেলোয়াড়রা ইউরোপের লিগে খেলার সুযোগ পেয়েছিল। পনের বছর পর সেই খেলার সুবিধাকেই ফেডারেশন প্রাধান্য দিচ্ছে বলে ভাষ্য সাধারণ সম্পাদকের, ‘আমাদের খেলোয়াড়রা ইউরোপে খেলছে বিচ্ছিন্নভাবে। সামনের বছর ৪০-৫০ জন ইউরোপের জার্মানি, অস্ট্রিয়া, পোল্যান্ড ও ইতালিতে খেলার ও অনুশীলনের সুযোগ পাবে।’

অতীতে ও সাম্প্রতিক সময়ে ক্রীড়াঙ্গনে কয়েকজন ক্রীড়াবিদ উন্নত দেশে গিয়ে আর ফিরেননি। ইউরোপের মতো উন্নত দেশে এত বেশি সংখ্যক খেলোয়াড় গেলে ফেরত না আসার একটা মৃদু শঙ্কা থেকেই যায়। এই বিষয়টি স্মরণ আছে ফেডারেশনেরও, ‘যে সকল খেলোয়াড়কে আমরা পাঠাব, তাদের ফিরে আসার গ্যারান্টি ও অভিভাবকদের স্বাক্ষর থাকবে।’ এই সংক্রান্ত আলোচনা খানিকটা আঁচ করতে পেরেছিলেন পিটার, তাই তিনি সবাইকে থামিয়ে বলেন, ‘খেলোয়াড়রা আগেও ইউরোপে গেছে, এখনো যাচ্ছে; এরকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। এই রকম ভাবনাটাও খুব সমীচীন নয়।’

পিটারের পরিকল্পনা আগস্ট-সেপ্টেম্বর ও এপ্রিল-জুন এই কয়েক মাস বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা ইউরোপে সময় কাটাবেন। ইতোমধ্যে নাকি ২১ জন খেলোয়াড় সম্পর্কে কয়েকটি ক্লাবের সঙ্গে তার কথাবার্তা চূড়ান্ত। খেলোয়াড়দের ইউরোপের ব্যয় ও আয়ের বন্টন নিয়ে পিটার বলেন, ‘ঐখানে খেলোয়াড়দের সকল ব্যয় সংশ্লিষ্ট ক্লাবেরই। খেলোয়াড়দের আয়ের কিছু অংশ ফেডারেশন পাবে কি না, সেটা এখনও ভাবা হয়নি। তবে আমি জীবনে কখনও খেলোয়াড়দের কাছ থেকে অর্থ নেইনি। আমার পকেট থেকে খেলোয়াড়দের দিয়েছি, এমনকি আমার বাসাতেও রেখেছি খেলোয়াড়দের।’

হকি ফেডারেশনের আর্থিক সংকট প্রকট। সামনের মাসে সিঙ্গাপুরে নারী-পুরুষ জুনিয়র দল পাঠাতে খানিকটা অনিশ্চয়তা রয়েছে। এর মধ্যে পিটারকে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর নিয়োগ দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এর উত্তরে সাধারণ সম্পাদক সাঈদ বলেন, ‘আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এরপরও কাজ চলমান রয়েছে। কোনো টুর্নামেন্টে দল পাঠাইনি এমন হয়নি। আপনাদের মাধ্যমে জানাতে চেয়েছি, আমাদের সংকট রয়েছে, যেন কেউ পাশে দাঁড়ায়। এই সংকটের মধ্যেই চলতে হবে এবং এগিয়ে যাওয়ার জন্যই পিটারকে আনা। পিটারের ব্যয় আমরা নিজেরা বা যেভাবেই হোক সংস্থান করব।’

হকি ফেডারেশন চলতি সপ্তাহের শনিবার নির্বাহী কমিটির সভা করেছে। সেই সভায় বিদেশি টেকনিক্যাল ডিরেক্টর নিয়োগ সংক্রান্ত কোনো আলোচ্যসূচি ছিল না। সভার তিনদিন পরই ফেডারেশন আকস্মিক ঘোষণা দেয় পিটার বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর। পিটারের নিয়োগের প্রক্রিয়া ও অনুমোদন নিয়ে তাই আরেকটি প্রশ্ন উঠেছিল। এ সম্পর্কে সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা তার সঙ্গে আলোচনা করছিলাম। তিনি এখন এসেছেন। আলোচনা চলছে দুই পক্ষের মধ্যে। আগামীকাল আমাদের সভাপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ রয়েছে। সেই সাক্ষাতে এই সংক্রান্ত বিষয় আরও বিস্তারিত আলোচনা হয়ে চূড়ান্ত হবে।’

দলের সঙ্গে বছরে পাঁচ মাস পিটার ইউরোপে থাকবেন– এটা অনেকটাই নিশ্চিত। বাকি সাত মাস বাংলাদেশে থাকবেন নাকি পুরো সময়, এটা এখনও আলোচনাধীন রয়েছে। পিটার ঢাকায় থাকলে গাড়ি, আবাসনসহ আরও অনেক বিষয় জড়িত। তাই পিটারকে খুব বুঝে-শুনেই কাজে লাগাতে চান এই হকি কর্মকর্তা, ‘আমরা তাকে হিসেব করেই ব্যবহার করব। তিনি এখানে থাকলে একটা ব্যয় আছে, তাই তাকে যতটুকু দেব এর চেয়ে বেশি তার কাছ থেকে নেয়ার চেষ্টা করব।’

হকি ফেডারেশন আগামী মাস থেকে পরবর্তী এক বছরের জন্য পিটারকে টেকনিক্যাল ডিরেক্টর করতে চায়। এই সময় পিটার জাতীয় দলের পাশাপাশি তরুণ দলের অনুশীলনও দেখভাল করবেন। এই স্বল্প সময়ে বাংলাদেশের হকি নিয়ে পিটার তার লক্ষ্য সম্পর্কে বলেন, ‘একদিনে কোনো কিছু করা সম্ভব নয়। আমি এখানে আগেও ছিলাম তখন ফেডারেশনে সমস্যা ছিল। এখন তারা আমার প্রস্তাবে রাজি হয়েছে। আমি বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের উন্নত অনুশীলন ও ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেব। এর মাধ্যমে জাতীয় ও তরুণ দল উপকৃত হবে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।