ভাটি বাংলা সুনামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ও জনপ্রিয় একটি খেলা হচ্ছে কুস্তি খেলা। যুগ যুগ ধরে সুনামগঞ্জের গ্রামাঞ্চলে আয়োজন হয় খেলাটি। দীর্ঘ দুই বছর করোনার কারণে বন্ধ থাকার পর এবার আরও বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছে কুস্তি। ব্যাপক জনপ্রিয়তা থাকায় বড় পরিসরে আন্তঃউপজেলা কুস্তি প্রতিযোগিতা আয়োজনের উদ্যোগ নেয় জেলা ক্রীড়া সংস্থা।
ঐতিহ্যবাহী কুস্তি খেলাকে কেন্দ্র করে কুস্তি সংগঠকদের মধ্যে ভিন্নমত তৈরি হওয়ায় আপাতত কুস্তি খেলা স্থগিত করা হয়েছে। অবশ্য জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজকরা বলেছেন, গত তিন দিনের বৃষ্টিতে মাঠে কাদা হওয়ায় ফুটবল, ক্রিকেটসহ সকল খেলাই পেছানো হয়েছে। স্থগিতের বিষয়টি বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন কুস্তি খেলা আয়োজন উপ-কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল নোমান।
আগামী ২৯-৩০ অক্টোবর জেলা স্টেডিয়ামে দুই দিনব্যাপী এই খেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেই লক্ষ্যে ৫ লাখ ৪ হাজার টাকা দিয়ে মাঠের নিলাম কার্যক্রম ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে কর্তৃপক্ষ। জনপ্রতি টিকেটের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ টাকা। নিলাম এবং টিকেটের দাম নির্ধারণের পর পরই ঘোলা হতে থাকে কুস্তি আয়োজন। শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
টিকেট কেটে খেলা দেখবেন না জানিয়ে প্রতিবাদ করেন কুস্তিপ্রেমিরা। এর উত্তাপ ছড়ায় পুরো জেলায়। টিকেট ব্যবস্থা বাতিল চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করে ভাটি বাংলা কুস্তি ফেডারেশন নামের একটি সংগঠন।
ঐতিহ্যবাহী এই খেলায় টিকেট ব্যবস্থা এনে খেলাকে বিতর্কিত না করতে বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লিখিত আবেদন জানান সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও সাবেক কুস্তিগির সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার নুরুল্লা গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ শাহানুর আলম।
ভাটি বাংলা কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি নুরুল হক আফিন্দী ঢাকা পোস্টকে বলেন, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কুস্তি খেলার উন্নয়ন ও প্রসার নিয়ে আমরা ৫০টি কুস্তি টিমের সংগঠন ভাটি বাংলা কুস্তি ফেডারেশন কাজ করছি। জেলাব্যাপি কুস্তি আয়োজন শুনে আমরাও খুশি হয়েছি। কিন্তু যখন গ্রামে গ্রামে মাইকিং করা হয় ৫০ টাকা দিয়ে টিকেট কেটে খেলা দেখতে হবে তখন কুস্তিপ্রেমিরা এর প্রতিবাদ জানিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এটি গ্রামীণ খেলা এটাকে উন্মুক্ত করতে হবে। এ নিয়ে ব্যবসা মানা যায় না। তাই আমরা উক্ত আয়োজনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
এ ব্যাপারে জেলা ক্রীড়া সংস্থার নির্বাহী সদস্য ও কুস্তি আয়োজন উপ-কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, টিকেট ইস্যু নিয়ে খেলা বন্ধ এটা ভুল। খেলা বন্ধ হয়েছে বৃষ্টিতে মাঠ নষ্ট হওয়ার কারণে। শুধু কুস্তি নয় ক্রিকেট, ফুটবলসহ সকল খেলাই পেছানো হয়েছে। মাঠ ঠিক হলে আবার নতুন তারিখ ঘোষণা করা হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।