এদেশের বক্সিংকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে নিউইয়র্ক বক্সিং কমিশনের সাথে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ পেশাদার বক্সিং সোসাইটি-বিপিবিএস। তাতে বাংলাদেশের পেশাদার বক্সাররা যুক্তরাষ্ট্রে খেলার সুযোগ পাবে। পাশাপাশি বিপিবিএসকে তারা অবকাঠামোগত সহায়তাও করবে। এনবিসি’র সাথে আনুষ্ঠানিক চুক্তি শেষে দেশে ফিরে এ কথা জানান, বাংলাদেশ প্রফেশনাল বক্সিং সোসাইটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।
বলা যায়, অনেকটা নিরবে-নিভৃতেই বাংলাদেশে চলছে প্রফেশনাল বক্সিং চর্চ্চা। প্রফেশনাল বক্সিং বিষয়ে সরকারি কোনো ফেডারেশন বা অ্যাসোসিয়েশন না থাকায়, ব্যক্তিগত উদ্যোগে চলছে চর্চা। মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান প্রতিষ্ঠিত, রাজধানীর আসাদ বক্সিং অ্যারেনায় প্রতিদিনই চলে প্রফেশনাল বক্সিং প্রশিক্ষণ। বাংলাদেশ প্রফেশনাল বক্সিং সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, এনবিসি’র সাথে চুক্তি বাংলাদেশ প্রফেশনাল বক্সিংয়ের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। তিনি জানান, নিউইয়র্ক বক্সিং কাউন্সিলের সাথে আমরা একটা কন্টাক্ট করার চেষ্টা করছিলাম। আমরা চেয়েছিলাম যে বাংলাদেশে বক্সিংটা সবার নজরে আসুক। আর যুক্তরাষ্ট্রকে বলা হয় বক্সিংয়ের সূতিকাগার। তাই মনে করেছি যে, সেখান থেকে যদি শুরু করা যায় তবে এদেশের বক্সিং বিষয়ে সবাই জানতে পারবে। বাংলাদেশের প্রফেশনাল বক্সিং নিয়ে বিশ্ববাসীর মাঝেও আগ্রহ তৈরি হবে। এনবিসি’র সাথে আলোচনা ফলপ্রসু হয়েছে। তারা আমাদেরকে সাহায্য করতে সম্মত হয়েছে।
মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান আরো বলেন, দুই সংস্থার সাথে এই চুক্তির ফলে এখন থেকে বাংলাদেশের বক্সাররা আমেরিকার মতো জায়গায় খেলার সুযোগ পাবে। আর তারা অবকাঠামোগত বিভিন্ন বিষয়ে আমাদেরকে সহায়তা করার জন্য সম্মত হয়েছে। আমি মনে করি বাংলাদেশের প্রফেশনাল বক্সিংয়ের ক্ষেত্রে এটা একটা বিশাল পদক্ষেপ।
সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে চলছে এদেশে প্রফেশনাল বক্সিং চর্চ্চা। এই খেলার ব্যয় বহণ করা প্রায় সময়ই অসম্ভব হয়ে ওঠে। সরকারী সাহায্য-সহযোগিতা পেলে আরো নিবিড় এবং নিবিচ্ছিন্নভাবে এর চর্চ্চা চালানো যেতো। তাই সরকারের কাছে সাহায্যের প্রত্যাশা করেন বিপিবিএসের সহসভাপতি মেহেদী হাসান বাঁধনের। তিনি বলেন, প্রফেশনাল বক্সিং আগে বাংলাদেশে ছিলোনা। কয়েক বছর আগে আমরা শুরু করেছি। ধীরে ধীরে মানুষের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হচ্ছে। আস্তে আস্তে একটা প্ল্যাটফর্ম দাঁড় করিয়েছি। আগামী বছর থেকে আমরা বিকেএসপি’র মতো একাডেমি শুরু করবো। আসলে বিকেএসপির মতো হবে না। তারা তো অনেক খেলা নিয়ে কাজ করে। আমরা শুধু বক্সিং নিয়ে করবো। তৃণমূল থেকে খেলোয়াড় তুলে আনতে না পারলে, প্রফেশনাল বক্সিং নিয়ে বেশিদূর যাওয়া যাবেনা। প্রতিযোগিতা আয়োজনের পাশাপাশি আমরা এবার তৃণমূল থেকে খেলোয়াড় তুলে এনে তাদেরকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবো।
বাঁধন বলেন, এতোদিন পর্যন্ত সম্পূর্ণ নিজেদের টাকায় চলেছে বক্সিং। আমরা এই সাড়ে তিনবছরে ৪০টির মতো ইভেন্টও করেছি। যেকোনো খেলাকে প্রমোশনের জন্য সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা কাজটাকে সহজ করে দেয়। সরকারের কাছে আমরা আমবেদ করছি, যদি একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তবে এদেশের প্রফেশনাল বক্সিংকে আরো এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।
রাজধানী ঢাকা ছাড়াও এ পর্যন্ত প্রায় ৪০টি ইভেন্ট আয়োজন করেছে বিপিবিএস। লড়াইগুলো দেখতে দর্শকদের আগ্রহও ছিলো প্রচুর। বাংলাদেশ প্রফেশনাল বক্সিং অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: শহীদুল ইসলাম জানান, প্রফেশনাল বক্সিং নিয়ে মানুষের যে আগ্রহ আর ভালোবাসা, তাতে আমার মনেহয় প্রফেশনাল বক্সিংয়ে ভালো কিছু করা সম্ভব। আমরা গতবছরের শেষের দিকে যমুন ফিউচার পার্ক এবং রবীন্দ্র সরোবরে দুটো ইভেন্ট করেছি। খেলা দেখতে প্রচুর মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তাতে সহজেই ধারণা করা যায়, এই খেলাটি ধীরে ধীরে মানুষের মনে জায়গা করে নিচ্ছে। ইনশাল্লাহ আগামী কয়েকবছরের মধ্যে এদেশের প্রফেশনাল বক্সিং বিশ্বের মধ্যে একটা সম্মানজনক অবস্থায় পৌঁছাবে।
অস্ট্রেলিয়ার পর নিউইয়র্কও বাংলাদেশের প্রফেশনাল বক্সিংকে সহায়তা করার জন্য এগিয়ে এসেছে। তাতে করে আশা করা যায়, ভবিষ্যতে এদেশের প্রফেশনাল বক্সিং বিশ্বমাঝে সম্মানজনক অবস্থান তৈরি করতে পারবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।