চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেধে দিয়ে শোকজ নোটিশ দিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সেই সঙ্গে তাকে বরখাস্তের পথও খোলা রাখে। ২৪ ঘণ্টা পেরুনোর পর ই-মেইলের মাধ্যমে সেই শোকজের জবাবও দেন হাথুরু। তবে সেটি মনঃপুত না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত তাকে বরখাস্ত করেছে বিসিবি। সেই সঙ্গে তার সঙ্গে করা চুক্তিও বাতিল করা হয়েছে। যদিও হাথুরুর সঙ্গে আগামী বছরের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ ছিল।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) মিরপুরে বিসিবির কার্যালয়ে বিসিবির পরিচালকদের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দুবাই থেকে জুম সংযোগে সভায় সভাপতিত্ব করেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। এছাড়া মিটিংয়ে নতুন কোচ ফিল সিমন্সের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টিও অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সভায় আরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, হাথুরু যদি আইনি পথে যান বিসিবি তা আইনিভাবেই মোকাবিলা করবে।
এর আগে হাথুরুকে বরখাস্তের কারণ জানিয়ে ফারুক বলেন, দুই-তিনটা ঘটনা ঘটেছে যেগুলো মেনে নেয়া একজন সাবেক খেলোয়াড় হিসেবে আমার কাছে খুব পীড়াদায়ক ছিল। এটা ভালো উদাহরণ ছিল না আরকি।
হাথুরুর বিরুদ্ধে এক ক্রিকেটারকে শারীরিক হেনস্থার অভিযোগ রয়েছে। হাথুরু-নাসুম ইস্যুতে বিসিবি সভাপতি গত মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বলেছিলেন, আমরা মানুষ। হিট অব দ্য মোমেন্টে অনেক কিছু হতেই পারে। তবে একজন জাতীয় দলের ক্রিকেটারকে আপনি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করতে পারেন না। সে কারণে যে শাস্তি পেতে হয়, সেটাই হচ্ছে (ছাঁটাই)। এটা আরও আগে হওয়া উচিত ছিল। এখন হয়েছে, আমি খুশি।
হাথুরুর বিরুদ্ধে বিসিবির আরও একটি অভিযোগ ছিল ছুটি কাটানো নিয়ে। এ প্রসঙ্গে ফারুক আহমেদ বলেন, একজনের অসদাচরণের বিরুদ্ধে নোটিশ দেওয়ার কিছু নেই। সে যে সময় ছুটি কাটিয়েছে, সেটা ৩ মাসের বেশি। ওটাও অসদাচরণের অংশ। বিচ্ছিন্নভাবে তিনি ই-মেইলে জানিয়েছেন, তবে সেটা তিন মাসের বেশি হওয়ার সুযোগ নেই। আপনার জবাবদিহি থাকতে হবে। এখানে নিয়ম ভেঙেছেন, আমরা জানিয়েছি যে খেলোয়াড়ের সঙ্গে তার অসদাচরণ এবং একজন কর্মী হিসেবে নিজের অসদাচরণ।
প্রথম মেয়াদে ২০১৪ সালের জুন থেকে ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় দলের হেড কোচের দায়িত্ব পালন করেন হাথুরুসিংহে। কিন্তু সেবার তার চুক্তির মেয়াদ ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত থাকলেও চুক্তি শেষের আগেই তা পূরণ করতে পারেননি হাথুরু। সেই সময়ে গুঞ্জন ওঠে, কোনও ক্রিকেটার বা বোর্ড কর্তার সঙ্গে খারাপ সম্পর্কের কারণেই দেশ ছাড়েন তিনি। যদিও পরে তিনি জানান, শ্রীলঙ্কার কোচ হওয়ার কারণেই তখন টাইগারদের দায়িত্ব ছাড়েন তিনি।
দ্বিতীয় মেয়াদে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের কোচ হন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ৩৫ হাজার ডলারে তার সঙ্গে চুক্তি করে নাজমুল হাসান পাপনের ক্রিকেট বোর্ড। যে চুক্তির মেয়াদ ছিল ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে সেই চুক্তি শেষের আগেই বাংলাদেশ অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে এবারও।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।