স্পিনার তাইজুল ইসলামের ঘুর্ণিতে ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৭৭ দশমিক ২ ওভারে সফরকারী আয়ারল্যান্ডকে ২১৪ রানে অলআউট করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ৫৮ রানে ৫ উইকেট নেন তাইজুল। তাইজুলের দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর নিজেদের ইনিংস শুরু করে অস্বস্তি নিয়ে প্রথম দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। ১০ ওভারে ৩৪ রান তুলতেই ২ উইকেট হারিয়েছে টাইগাররা। ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ১৮০ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ। তামিম ২১ ও নাজমুল হোসেন শান্ত শূন্যতে ফিরেন। ১২ রানে অপরাজিত মোমিনুল হক।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে বোলিংয়ে নামে বাংলাদেশ। তিন পেসার নিয়ে একাদশ সাজায় বাংলাদেশ। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে শ্রীলংকার বিপক্ষে টেস্টের পর ঘরের মাঠে প্রথমবার লংগার ভার্সনে তিন পেসার নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ডের একাদশে সাত জনের অভিষেক হয়।
দিনের পঞ্চম ওভারে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম। ৫ রান করা মারে কমিন্সকে লেগ বিফোর আউট করেন শরিফুল।
শুরুর ধাক্কা সামলে উঠার চেষ্টায় আরেক ওপেনার জেমস ম্যাককলাম ও অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বলবির্নিকে বেশি দূর এগোতে দেননি পেসার এবাদত হোসেন। দ্বিতীয় স্লিপে নাজমুল হোসেন শান্তকে ক্যাচ দিয়ে ১৫ রানে বিদায় নেন ম্যাককলাম। জুটি গড়ার চেষ্টায় তৃতীয় উইকেটে বেশি দূর যেতে পারেননি বলবির্নি ও হ্যারি টেক্টরও। ২২তম ওভারে বলবির্নিকে ১৬ রানে থামিয়ে প্রথম উইকেট শিকার করেন তাইজুল। এতে ৪৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে আয়ারল্যান্ড।
দলকে চাপমুক্ত করতে চতুর্থ উইকেটে বাংলাদেশ বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন টেক্টর ও কার্টিস ক্যাম্ফার। দু’জনের জুটিতে ৩ উইকেটে ৬৫ রানে প্রথম সেশন শেষ করে আয়ারল্যান্ড। দ্বিতীয় সেশনেরও শুরু থেকেই দাপট দেখায় এ জুটি। তাদের দৃঢ়তায় ১শ রান পার করে আইরিশরা।
৩৯তম ওভারে অভিষেক টেস্টেই প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নেন টেক্টর। অর্ধশতক পূর্ন করার পর স্পিনার মিরাজের বলে বোল্ড আউট হলে সেখানেই থেমে যান টেক্টর। ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৯২ বলে ৫০ রান করেন তিনি ।
জিম্বাবুয়ের হয়ে ৮টি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা নিয়ে আয়ারল্যান্ডের জার্সিতে প্রথম খেলতে নেমে তাইজুলের শিকার হরে ১ রানে থামেন পিটার মুর।
মুরকে শিকারের পর সেট ব্যাটার কাম্ফারকে ৩৪ রানে লেগ বিফোর আউট করেন তাইজুল। এমন অবস্থায় ১২৪ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে আবারও চাপে পড়ে আয়ারল্যান্ড।
দলকে লড়াইয়ে ফেরাতে লড়াই শুরু করেন লরকান টাকার। সাথে ছিলেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রিন ও মার্ক অ্যাডায়ার। সপ্তম উইকেটে ম্যাকব্রিনের সাথে ৩৫ ও অ্যাডায়ারের সাথে ৪০ রান তুলে আয়ারল্যান্ডকে ২শর দোড়গোড়ায় পৌঁছে দিয়ে আউট হন লরকান।
১৯ রান করা ম্যাকব্রিনকে এবাদত ও ৩টি চারে ৩৭ রান করা টাকারকে শিকার করেন তাইজুল। নবম উইকেটে গ্রাহাম হুমকে নিয়ে আয়ারল্যান্ডের রান ২শ পার করেন অ্যাডায়ার। মোমিনুলের হাতে জীবন পেয়ে ৩২ রান করা অ্যাডায়ারকে শিকার করে ইনিংসে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন তাইজুল। ৪১ টেস্টের ক্যারিয়ারে ১১তমবারের মত ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেন তাইজুল।
অ্যাডায়ার ফেরার কিছুক্ষণের মধ্যে হুমকে শিকার করে আয়ারল্যান্ডকে ২১৪ রানে গুটিয়ে দেন মিরাজ। ২ রান করেন হুম।
তাইজুল ২৮ ওভারে ৫৮ রানে ৫ উইকেট নেন। এবাদত ৫৪ রানে ও মিরাজ ৪৩ রানে ২টি করে উইকেট নেন। ১ উইকেট নেন শরিফুল।
আয়ারল্যান্ডের ইনিংসে ৬৫তম ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমনে আসেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ততক্ষণে ৭ উইকেট নেই আইরিশদের। পুরো ইনিংসে মাত্র ৩ ওভার বল করে ৮ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন সাকিব। পুরো ইনিংসে দলে অন্য দুই স্পিনার তাইজুল-মিরাজ ৪৫ দশমিক ২ ওভার বল করে ৭ উইকেট নেন।
আয়ারল্যান্ডের ইনিংস শেষে ব্যাট করতে নেমে পঞ্চম বলেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ওপেনার শান্তকে শূন্যতে বোল্ড করেন অ্যাডায়ার।
শান্তকে হারালেও দিনের শেষটা ভালো করার লক্ষ্য ছিলো আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল ও মোমিনুল হকের। রানের চাকা সাবলীলভাবেই ঘুড়াচ্ছিলেন তারা। কিন্তু দিনের শেষ বলে আউট হন তামিম। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৩৬ বলে ২১ রান করে ম্যাকিব্রনের বলে আউট হন তামিম। ১২ রানে অপরাজিত আছেন মোমিনুল। আয়ারল্যান্ডের অ্যাডায়ার ও ম্যাকব্রিন ১টি করে উইকেট নেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।