ক্রিকেটের কোনো ফরম্যাট থেকেই এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নেননি বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সেই সাথে ‘হোম অব ক্রিকেট’ খ্যাত মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিজের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার ইচ্ছার কথাও জানিয়েছেন সাবেক এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
ভারতের বিপক্ষে কানপুর টেস্টের আগে সাকিব জানিয়েছিলেন, টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। নিজের শেষ টি-২০ খেলে ফেলেছেন, আর শেষ টেস্টটা খেলতে চান মিরপুরে। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে আর খেলতে আসা হয়নি। এবার সাকিব দাবি করলেন, সমর্থকদের জন্য হলেও মিরপুরে খেলতে চান তিনি।
ক্রিকেট বিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ক্রিকবাজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সাকিব জানিয়েছেন, কোনো ফরম্যাট থেকেই এখনো অবসর নেননি তিনি। সাকিব বলেন, ‘না, সত্যি বলতে কোনো ফরম্যাট থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে আমি এখনো বিদায় নেইনি। অবশ্যই, (মিরপুরে শেষ ম্যাচ খেলা) এটা যতটা না আমার জন্য এর চেয়ে বেশি তাদের (সমর্থকদের) জন্য।’
সম্প্রতি সাকিব মার্কিন মুল্লুকে খেলেছেন মাইনর লিগ ক্রিকেট। অখ্যাত এই লিগে সাকিবই যেন ছিলেন সবচেয়ে বড় তারকা। তবে ছোটখাটো এই টুর্নামেন্টে খেলা নিয়ে এত বড় তারকার নেই কোনো আফসোস।
সাকিব বলেন, ‘সত্যি বলতে আমি খুব উপভোগ করেছি। অনেক লোকাল প্লেয়ারের সাথে পরিচয় হয়েছে। অনেকের সাথে দেখা হয়েছে যাদের ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে দেখেছিলাম, অনূর্ধ্ব-১৯ এর দিনগুলোতে ফিরে গিয়েছি। ছোটবেলার মতো এমন একটা ক্রিকেটীয় পরিবেশ পেয়ে খুব ভালো লেগেছে। মনে হয়েছে আগের সময় কাটাচ্ছি আবার।‘
দেশের ক্রিকেটের পোস্টারবয় হিসেবে সাকিরের যার নাম উচ্চারিত হবে সবার প্রথমে। কিন্তু রাজনৈতিক ডামাডোলে সেই সাকিবের গ্রহণযোগ্যতা থেকে জনপ্রিয়তা সবই কমেছে। সাকিবের অবশ্য নিজের ভূমিকা নিয়ে কোনো আক্ষেপ নেই।
তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় কিছু সাংবাদিক ও অনলাইন পোর্টালের বানোয়াট গল্প এগুলো যার কারণে মানুষ এমন ভাবে। কারণ বাংলাদেশে আগে এসব কেউ করেনি যা আমি করেছি। এসব তাদের জন্য নতুন ছিল। হজম করা কঠিন ছিল। এখন অন্য কেউ এসব করলে তাদের ওপর এত প্রভাব পড়ে না, যতটা আমার ওপর পড়েছিল। কারণ আমিই ছিলাম প্রথম- ভালো, খারাপও।‘
তার কাছের মানুষেরা অবশ্য তাকে নিয়ে এভাবে ভাবেন না। সাবেক এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার জানালেন, ‘মানুষের নিজস্ব ভাবনা থাকতেই পারে। তা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। কে কী ভাবলো তাতে আমার কিছু যায় আসে না কারণ আমার কাছে মুখ্য বিষয় হলো আমার কাছের মানুষেরা আমাকে নিয়ে কী ভাবছে। তারা কেউ এমন ভাবে বলে মনে হয় না।‘
জুলাই আন্দোলন চলাকালে কানাডায় এক ভক্তের সাথে মাঠে বাকবিতণ্ডা হয় সাকিবের। তিনি ক্ষিপ্ত কণ্ঠে জানতে চান, আপনি দেশের জন্য কী করেছেন? আর সেই থেকে বাড়তে থাকে সাকিবের নিন্দুকের সংখ্যা। কাছাকাছি সময়ে সাকিব তার পরিবারের সাথে কানাডায় সময় কাটাচ্ছেন এমন ছবি পোস্ট করেন তার স্ত্রী। যে দেখে সবাই ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেন। সাকিব দাবি করলেন, ঐ সময় তিনি দেশের পরিস্থিতি জানতেনই না।
তিনি বলেন, ‘এটা এমন এক মুহূর্ত যা আমার বিপক্ষে চলে গেছে। কারণ তারা ভিন্ন কিছু প্রত্যাশা করছিল। আমি আবার ওরকম পরিস্থিতিতে ছিলাম না, অথবা আমি পরিস্থিতি জানতাম না সত্যি বলতে। তাই আমার জন্য কাজটা কঠিন ছিল, আমি বাড়ি থেকে অনেক দূরে ছিলাম। আমি মনে করি ঐ জিনিসটাই আমার বিপক্ষে গেছে। তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাপারটা দেখে আমি একে পূর্ণ শ্রদ্ধাও জানাচ্ছি। তবে এজন্য কোনো আফসোস নেই। আমার মনে হয় ধীরে ধীরে মানুষ এখন এটা বুঝতে শুরু করেছে।‘
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, Bangladesherkhela.com এর দায়ভার নেবে না।

