২৮ বছরের শিরোপা খরার অবসান কিংবা স্বপ্নভঙ্গের যাতনা রোধ অথবা সমালোচনার বিষাক্ত তীর এইসব কিছুর কবর রচনার জন্য মারাকানা স্টেডিয়ামে কোপা আমেরিকা ফুটবলের ফাইনাল জয়ের কোনো বিকল্প ছিলোনা। অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়ার ছন্দময় গোলে মিলে গেলো সবকিছু। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলকে হারিয়ে শিরোপা জেতার সাথে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা এবং সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও জিতে নেন লিওনেল মেসি। এই প্রথম দেশের জার্সিতে গোল্ডেন বুট পেলেন ছয়বারের বিশ্বসেরা ফুটবলার। একটি জায়গায় কিংবদন্তি পেলে আর ম্যারাডেনাকেও ছাড়িয়ে গেলেন আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। কোপার শিরোপায় কখনই চুমু খেতে পারেননি ফুটবলের এই দুই কিংবদন্তি।
অনাবৃষ্টি, খরা আর প্রচন্ড তাপদাহের পর এ যেনো স্বস্তির বৃষ্টি। একটি দুটি নয়, সবশেষ ছয়টি ফাইনালে শিরোপা না জেতা আর্জেন্টিনার অন্ধকার ঘরে অবশেষে আলোর ঝলকানি। সেই আলোর মধ্যমনি লিওনেল আন্দ্রেস মেসি। লা লিগা ১০ বার, চারটি চ্যাম্পিয়নস লিগ, আর ছয়বার ব্যালন ডি অর জেতার পরও, কিংবদন্তির মানদন্ডে নাকি একটি আন্তর্জাতিক শিরোপা থাকাই চাই। নিজে চার গোল আর সতীর্থদের ৫ গোলে সহায়তা করে সেই মানদন্ডের সীমানাতেও পৌঁছে গেলেন এমএলটেন।
সাত ম্যাচের ৫টিতেই হন ম্যাচ সেরা। দলের ১২ গোলের ১১ টিতেই অবদান ছিলো তাঁর। ট্রফি জিততে দেশের জন্য কতটা মরিয়া ছিলেন ম্যাচ শেষে স্কালোনির বক্তব্যেও তা পরিস্কার। হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি নিয়েই কলম্বিয়া আর ব্রাজিলের বিপক্ষে খেলেছেন মেসি। ক্যারিয়ারে এ পর্যন্ত গুনে গুনে ৩৪ টি শিরোপা জিতেছেন। মেসি যেনো এই মহাবিশ্বে এসেছেন কেবলই জিততে। তবু আন্তর্জাতিক ফুটবলে একটি ট্রফির জন্য জীবনটাই বাজিতে ধরেছিলেন যেনো। অবশেষে ধরা দিলো সেই সোনার হরিণ।
এরপরও হয়তো সর্বকালের সেরার প্রশ্নে অনেকের সাথেই তার তুলনা হবে। তবে মেসির নামের পাশে অন্তত ‘ক্লাব গ্রেট’ লেখাটা থাকবেনা। ভক্তরা অন্তত বলার সুযোগ পাবেন মেসি একজন আর্জেন্টাইন ছিলেন। সেইসঙ্গে আলবিসেলেস্তেরা হতাশার সময়কেও পেছনে ফেলে আসলো সফলতার দিকে। আর বিশ্বকাপ শুরুর ৫০০ দিনেরও কম সময়ে আর্জেন্টিনার এই সোনালী সাফল্য দলকে আরো আশাবাদী হতে প্রেরণা দিচ্ছে।