টাইব্রেকারে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে ৫-৪ গোলে হারিয়ে ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে সুইজারল্যান্ড। নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হয় ৩-৩ গোলে। আরেক ম্যাচে বিশ্বকাপ রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়াকে অতিরিক্ত সময়ের গোলে ৫-৩ ব্যবধানে হারিয়ে শেষ আটে জায়গা করে নিয়েছে স্পেন। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালের নাটকীয় এক রাতের সাক্ষী হয়ে রইলো ইউরো কাপ।
গতবারের চ্যাম্পিয়ন পর্তুগালের পর এবার ইউরোয় শেষ হয়ে গেল বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের অভিযান। টাইব্রেকারে কিলিয়ান এমবাপের শট রুখে ইতিহাস গড়লেন ইয়ান সমার। এই জয়ে ইউরো ফুটবলের শেষ আটে স্পেনের মুখোমুখি হবে সুইজারল্যান্ড।
শেষ হইয়াও হইলোনা শেষ কিংবা ফ্রান্স এটাও বলতে পারে তীরে এসে তরী ডুবলো তাদের। আর মাত্র ১০ সেকেন্ড রুখে দিলে যে দল জিতে যেতো তারাই কিনা দিনশেষে পরাজিতদের কাতারে। হারতে বসা ম্যাচকে সুইজারল্যান্ড স্ট্রাইকার গাভরানোভিচ নিয়ে যান অতিরিক্ত সময়ে।
বুখারেস্টে নাটকীয় ম্যাচে ফরাশিরা পিছিয়ে পড়ে ১৫ মিনিটেই। জুবারের ক্রস থেকে হেডে গোল করে সুইজারল্যান্ডকে এগিয়ে দেন হারিস সেফেরোভিচ। পিছিয়ে পড়ার পর এমবাপে, বেনজেমা, গ্রিজম্যানরা আক্রমণে গেলেও গোল পাননি। প্রথমার্ধে অবশ্য বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের চেনা ছন্দে পাওয়াও যায়নি। এক গোলে পিছিয়েই ছিল ফ্রান্স।
বিরতি থেকে ফিরে খেলার ৫২ মিনিটে পেনাল্টি পায় সুইজারল্যান্ড। জুবারকে বক্সের মধ্যে অবৈধভাবে বাধা দেন এমবাপে, ভার প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে পেনাল্টি দেন রেফারি। যদিও রিকার্ডো রডরিগেজের পেনাল্টি মিসের ধারা এই ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের অভিশাপ হয়েই চিহ্নিত হয়ে রইল। ৫৫ মিনিটে রডরিগেজের শট রুখে দেন স্পেনের গোলকিপার হুগো লরিস।
এরপরই যেনো জেগে উঠে দিদিয়ের দেশমের দল। ৫৭ও ৫৯ মিনিটে দু গোল দিয়ে করিম বেনজামা পাঁচ বছর পর তার দলে ফেরার যথার্থতা আরো একবার প্রমান দিলেন। এরপর পল পগবার গোলে মনে হচ্ছিলো ম্যাচটা সহজেই জিততে চলেছে ফরাসিরা। কিন্ত সেফেরোভিচ আর গাভরানোভিচ তা হতে দেননি। হয় লড়ো নয় মরো এমন মানসিকতার সুফল পায় তারা।
পেনাল্টিতে পাঁচ শটেই স্কোর করে ৬৭ বছর পর কোন মেজর টুর্নামেন্টের কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয়া সুইসরা। ফ্রান্সের কান্নার কারণ হয়ে গেলেন এই মূহুর্তে বিশ্বের সেরা তারকাদের একজন কিলিয়ান এমবাপ্পে।
এর আগে কোপেনহেগেনে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে পাবলো সারাবিয়া, সেসার আসপিলিকুয়েতা আর ফেরান তোরেসের গোলে ৭৭ মিনিটে ৩-১ গোলে এগিয়ে যায় স্পেন। কিন্ত শেষ আট মিনিটে দুই গোল দিয়ে বিশ্বকাপ রানার্সআপ দলকে সমতায় ফেরান মিসলাভ অরসিচ আর মারিও পাসালিচ।
অতিরিক্ত সময়ে আলভারো মোরাতা আর ওইয়ারসাবাল দু গোল দিয়ে ক্ল্যাসিক ম্যাচের সমাপ্তি টানেন। কোয়ার্টার ফাইনালে উঠার সাথে প্রথম দল হিসেবে ইউরোতে টানা দু ম্যাচে ৫ গোলের রেকর্ড গড়লো লুইস এনরিকের দল।